ফ্রি ইনকাম সাইট ২০২৫ | ডিপোজিট ছাড়া টাকা ইনকাম করুন

প্রিয় পাঠক আপনি কি ফ্রি ইনকাম সাইট ২০২৫ | ডিপোজিট ছাড়া টাকা ইনকাম করার উপায় জানতে চান ? তাহলে এই পোস্টটি আপনার জন্য। ফ্রি ইনকাম বলতে এমন একটি পদ্ধতিকে বোঝানো হয় যেখানে কোন প্রকার অর্থ বিনিয়োগ ছাড়া মেধা, শ্রম বিনিয়োগ করে অর্থ উপার্জন করা যায়। ইন্টারনেটের এ যুগে ঘরে বসে টাকা উপার্জনের বিশাল সেক্টর তৈরি হয়েছে। তারই ধারাবাহিকতায় আমরা এই পোস্টে ফ্রি ইনকাম সাইট ২০২৫ | ডিপোজিট ছাড়া টাকা ইনকাম করার উপায় নিয়ে আলোচনা করতে যাচ্ছি।

ফ্রি ইনকাম সাইট ২০২৫ | ডিপোজিট ছাড়া টাকা ইনকাম করুন

এখন আমরা এমন কিছু ইনকাম সাইট বা অ্যাপস নিয়ে আলোচনা করব যেখানে কোন প্রকার বিনিয়োগ ছাড়া মোবাইল দিয়ে ইনকাম করতে পারেন। আপনি শিক্ষার্থী, গৃহিনী, বয়স্ক মানুষ যে পেশারই মানুষ হোন না কেন এসব ফ্রি ইনকাম সাইট গুলোতে কাজ করে টাকা ইনকাম শুরু করে দিতে পারেন। চলুন তাহলে আর দেরি না করে ফ্রি ইনকাম সাইট ২০২৫ | ডিপোজিট ছাড়া টাকা ইনকাম করার উপায় জেনে নেওয়া যাক।

SWAGBUCKS -

এই সাইটটি ২০০৮ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। অসংখ্য ব্যবহারকারী SWAGBUCKS এই সাইটটি থেকে ইনকাম করছে।

SWAGBUCKS সাইটে যে কাজ গুলো করতে হয়ঃ- 

সার্ভে পূরণ করা, ভিডিও দেখা, গেম খেলা, ওয়েব ব্রাউজ করা, শপিং করা, রেফারেল শেয়ার করা ইত্যাদি।

SWAGBUCKS এর সুবিধাঃ- 

  • এই কাজ গুলো খুবই সহজ। যেমনঃ- ভিডিও দেখা, গেম খেলা, সার্ভে পূরণ করা, শপিং করা ইত্যাদি।
  • SWAGBUCKS এই সাইটে কাজ করতে কোন প্রকার অর্থ বিনিয়োগ করতে হয় না।
  • ভিডিও দেখা, গেম খেলা, সার্ভে পূরণ করা ছাড়াও আরও অনেক ধরণের কাজ রয়েছে।
  • রেফারেল বোনাস দ্বারা অতিরিক্ত আয়ের সুযোগ রয়েছে।

SWAGBUCKS এর অসুবিধাঃ-

  • এখানে ইনকাম খুব একটা বেশি না। পার্ট-টাইম হিসেবে এই জবটি সেরা।
  • নিদিৃষ্ট দেশে নিদিৃষ্ট পরিমাণ কাজ করার অপশন রয়েছে। অর্থ্যাৎ কাজের সীমাবদ্ধতা।

SWAGBUCKS দিয়ে আয় করার উপায়ঃ-

একাউন্ট তৈরিঃ- প্রথমে এই লিংকে ক্লিক করে একাউন্ট তৈরি করুন। একাউন্ট তৈরি করতে কোন প্রকার টাকা খরচ করা লাগবে না। একাউন্ট তৈরি করে কিছু নিদিৃষ্ট পরিমাণ কাজ সম্পন্ন করার পর $৫ বোনাসও পেতে পারেন।

সার্ভে করে আয়ঃ- এই সাইটে সব থেকে সহজ কাজ হলো সার্ভে করা। বিভিন্ন কোম্পানি তাদের পন্য বা সেবা সম্পর্কে জানতে চেয়ে সার্ভে করে থাকে। আপনি এই সার্ভের কাজে অংশ নিয়ে অর্থ উপার্জন করতে পারেন। প্রতিটি সার্ভে করার জন্য আপনাকে SB পয়েন্ট দেয়া হবে।

আরো পড়ুনঃ- বাংলাদেশী অ্যাপ প্রতিদিন 1000 টাকা আয় পেমেন্ট বিকাশ

ভিডিও দেখে আয়ঃ- আপনি বিজ্ঞাপন, বিনোদনমূলক ভিডিও, প্রোডাক্ট রিভিউ ভিডিও দেখে পয়েন্ট অর্জন করতে পারেন। এটিও একটি সহজ আয়ের মাধ্যম।

অনলাইন শপিং করে আয়ঃ- এখানে অনলাইন শপিং করলে ক্যাশব্যাক এর সুবিধা রয়েছে। Swagbucks এর অংশীদার ব্র্যান্ড, বা অনলাইন শপ থেকে প্রোডাক্ট কেনা-কাটা করলে SB পয়েন্ট আকারে কিছু টাকা ফেরত পাবেন।

রেফারেল প্রোগ্রাম করে আয়ঃ- আপনি যদি SWAGBUCKS এই সাইটে আপনি আপনার বন্ধুদের আমন্ত্রণ জানান, তারা যদি এখানে কাজ করে তাহলে আপনি তাদের আয়ের একটি অংশ পাবেন

SWAGBUCKS থেকে টাকা উত্তোলনের নিয়মঃ-

  • এখানে যে SB পয়েন্ট গুলো দেয়া হয় সেগুলো ক্যাশ আউট করতে পারেন।
  • PayPal ক্যাশঃ-  SB পয়েন্ট গুলো পেপ্যাল ক্যাশে রুপান্তর করে সেগুলো নিজের ব্যাংক একাউন্টে ট্রান্সফার করতে পারেন।

FIVERR

FIVERR এটা হলো ফ্রিল্যান্সাদের জন্য বিশাল বড় এক মার্কেটপ্লেস। সকল ধরণের কাজের চাহিদা এখানে রয়েছে যেমনঃ- ওয়েব ডিজাইন, কনটেন্ট রাইটিং, এসইও, গ্রাফিক্স ডিজাইন, লোগো ডিজাইন, ভিডিও এডিটিং, ডিজিটাল মার্কেটিং ইত্যাদি। ফাইবারে কাজ পেতে হলে কাজের গিগ তৈরি করতে হয়।

ফ্রিল্যান্সদের নিকট ফাইবার মার্কেট-প্লেস খুবই জনপ্রিয়। এর জনপ্রিয়তার অন্যতম কারণ হলো সহজ ব্যবহার, কম খরচে ফ্রিল্যান্সিং সার্ভিস দেয়ার কারণে। যদি আপনি অনলাইনে আপনার কাজের দক্ষতা আয় করতে চান তাহলে ফাইবার মার্কেট-প্লেস আপনার জন্য সেরা হতে পারে।

আরো পড়ুনঃ- প্রতি সপ্তাহে 4000 টাকা পর্যন্ত আয় করুন ৪০টি দুর্দান্ত উপায়ে

ফ্রিল্যান্সারা কাজের দক্ষতা গিগ আকারে বিক্রি করে অর্থ উপার্জন করে। এখানে কাজের জন্য সর্বনিম্ন $5 চার্জ করা যায়। তাছাড়া কাজের ধরণ অনুযায়ী  এই চার্জ আপনি বৃদ্ধি করতে পারেন। ফাইবারে যেসব কাজ করা যায় ( গ্রাফিক ডিজাইন, এসইও, ডিজিটাল মার্কেটিং, কনটেন্ট রাইটিং, ভিডিও এডিটিং, ওয়েবসাইট ডিজাইন ) এক কথায় অনলাইন জগতে যত ধরণের কাজ রয়েছে সব ধরণের কাজ ফাইবারে করা যায়।

Fiverr-এ যেভাবে কাজ করবেন

প্রোফাইল তৈরি করুনঃ- ফ্রিল্যান্সিং কাজ করতে প্রথমে আপনাকে Fiverr একটি প্রোফাইল ক্রিয়েট করতে হবে। এটা আপনার নিজস্ব পরিচয় বহন করবে। এই প্রোফাইলের মাধ্যমে ক্লায়েন্টরা আপনার কাজের দক্ষতা অভিজ্ঞতা সম্পর্কে জানতে পারবে। এজন্য আপনার প্রোফাইল এমনভাবে তৈরি করতে হবে যাতে করে যাতে ক্লায়েন্ট সন্তুষ্টি হয়।

গিগ তৈরি করাঃ- ফাইবার মার্কেটপ্লেসে গিগকে বিজ্ঞাপনের সাথে তুলনা করা যেতে পারে। সেখানে আপনি কি কি ধরণের সার্ভিস দিচ্ছেন, সার্ভিসের ভ্যালু কত, কত সময়ের মধ্যে সার্ভিস দিতে পারবেন ইত্যাদি বিষয় সংক্ষিপ্ত আকারে উল্লেখ থাকবে। ক্লায়েন্টকে আকর্ষণ করার জন্য গিগে টাইটেল, ছবি, বিবরণ সুন্দরভাবে উপস্থাপন করতে হবে।

আরো পড়ুনঃ- মাসে ৩০ হাজার টাকা আয় করার ৩০টি সেরা উপায়

ক্লায়েন্টের অর্ডার গ্রহণ করুনঃ- ক্লায়েন্ট আপনার প্রোফাইল, গিগ দেখার পর সন্তুষ্ট হলে তখন আপনার গিগ অর্ডার করবে। কাজের সময় বেঁধে দিবে। আপনাকে ঐ নিদিৃষ্ট সময়ের মধ্যে কাজ কমপ্লিট করে জমা দিতে হবে।

পেমেন্ট গ্রহণ করুনঃ- এই সাইটে কাজ করলে ক্লায়েন্ট সন্তুষ্ট হলে আপনাকে টাকা পেমেন্ট করবে। প্রতিটি কাজের বিনিময়ে ফাইবার কর্তৃপক্ষ নিদিৃষ্ট পরিমাণ চার্জ করবে। বাকি টাকা আপনার একাউন্টে জমা হয়ে যাবে। এখন অনেকে জানতে চায় কীভাবে টাকা উত্তোলন করব ? উত্তরঃ- পেপ্যাল, ব্যাংক ট্রান্সফার, ফাইভার রেভিনিউ কার্ডের মাধ্যমে টাকা উত্তোলন করা যায়।

ফাইবারে সফল হওয়ার গোপন টিপস

অ্যাকাউন্ট ও প্রোফাইল উন্নত করুনঃ- আপনার প্রোফাইল একাউন্ট এগুলো আকর্ষণীয় করতে হবে। সাথে পোর্টফোলিও যোগ করতে হবে। যাতে আপনার কাজের দক্ষতা প্রমাণিত হয়। ফাইবার মার্কেটপ্লেসে তারাই বেশি কাজ পেয়ে থাকে যারা যত-বেশি দক্ষ।

ক্লায়েন্টদের সাথে আচরণের ধরণঃ- আপনাকে এখানে পেশা-দারিত্বের পরিচয় দিতে হবে। ক্লায়েন্টের সাথে এমনভাবে আচরণ করবেন যাতে ক্লায়েন্ট এটা অনুভব করে যে আপনিই তার কাজ পাওয়ার যোগ্য। ক্লায়েন্ট কি চাচ্ছে ? তার চাহিদা প্রাধান্য দিন। ক্লায়েন্টের মেসেজের দ্রুত রিপ্লাই দেয়ার চেষ্টা করবেন।

উচ্চমানের সেবা প্রদানঃ- চেষ্টা করবেন ক্লায়েন্টকে সব থেকে বেটার সার্ভিস দেয়ার জন্য। সময়মতো কাজ জমা দেয়ার চেষ্টা করবেন। ক্লায়েন্টর চাওয়াকে সবকিছুর উর্ধে্ব প্রাধান্য দিবেন।

পজিটিভ রিভিউ সংগ্রহ করুনঃ- ক্লায়েন্টকে  এমনভাবে কাজ দিবেন সে যেন খুশি হয়ে আপনাকে পজিটিভ রিভিউ দেয়। রিভিউ প্রমাণ করবে আপনি কেমন সার্ভিস দিয়ে থাকেন। পজিটিভ রিভিউ সাফল্যের অন্যতম চাবিকাঠি। পজিটিভ রিভিউ যত বেশি হবে আপনার কাজ পাওয়ার সম্ভাবনা তত বাড়বে।

কম দামে কাজ করুনঃ- যারা প্রথমবার ফাইবারে কাজ করছেন তারা কম-দামে ভালো সার্ভিস দেয়ার চেষ্টা করবেন। যখন আপনার পজিটিভ রিভিউ যত বাড়বে তত ধীরে ধীরে আপনার কাজের ভ্যালু বাড়বে। তখন আপনি বেশি দামে সার্ভিস দিতে পারবেন।

Fiverr-এর সুবিধা ও অসুবিধা

সুবিধা:

  • নতুন ফ্রিল্যান্সারদের জন্য এই মার্কেটপ্লেস সেরা। এই মার্কেটপ্লেস সহজে ব্যবহার করা যায়।
  • আপনার যোগ্যতা অনুযায়ী বিভিন্ন ধরণের কাজ করতে পারবেন। সকল ধরণের কাজের চাহিদা এখানে রয়েছে।
  • এটা এতটাই পরিচিত মার্কেটপ্লেস যে গোটা বিশ্বের ক্লায়েন্টের সাথে যোগাযোগ সুবর্ণ-সুযোগ রয়েছে।

অসুবিধা:

  • নতুন ফ্রিল্যান্সারদের জন্য প্রথম দিকে ইনকাম করা খুবই কঠিন। তাই ধৈর্য্য ধরে কাজ করে যেতে হবে।
  • এখানে কাজের প্রতিযোগিতা অনেক বেশি। তাই কাজ পেতে হলে আপনাকে দক্ষ হতে হবে, স্মার্ট পোর্ট-ফোলিও তৈরি করতে হবে, প্রোফাইল উন্নত করতে হবে।

UPWORK

ফাইবারের মতো ফ্রিল্যান্সারদের জন্য বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ মার্কেট প্লেস হল আপ-ওয়ার্ক। এখানে বড় বড় বিভিন্ন প্রোজেক্টের কাজ পাওয়া যায় যেমন সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট, ডিজিটাল মার্কেটিং, ভিডিও এডিটিং, ওয়েব ডিজাইন, গ্রাফিক্স ডিজাইন, ডেটা এন্ট্রি সহ আরো অন্যান্য। Upwork বর্তমানে বিশ্বের অন্যতম বৃহত্তম ফ্রিল্যান্স মার্কেটপ্লেস, যেখানে পেশাদার ফ্রিল্যান্সার এবং ক্লায়েন্টরা একত্রিত হয়ে বিভিন্ন প্রজেক্টে কাজ করেন। 

এটি ফ্রিল্যান্সারদের জন্য একটি আদর্শ প্ল্যাটফর্ম, যারা দীর্ঘমেয়াদী প্রজেক্ট এবং বড় বাজেটের কাজ খুঁজছেন। Upwork প্ল্যাটফর্মে নানা ধরনের কাজ পাওয়া যায়, যা অভিজ্ঞ এবং নতুন ফ্রিল্যান্সারদের জন্য কার্যকরী হতে পারে। এটা এমন এক ধরনের মার্কেটপ্লেস যেখানে পেশাদার ফ্রিল্যান্সার এবং ক্লায়েন্টরা একত্রিত হয়ে কাজ করে থাকে। upwor ফ্রিল্যান্সারদের জন্য আদর্শ মার্কেট পেলেস। যারা বড় বাজেটে দীর্ঘ মিয়াদে কাজ খুঁজছেন তাদের জন্য upwork সেরা। আপনাকে বিভিন্ন ধরনের কাজ পাওয়া যায় যা অভিজ্ঞ এবং নতুন ফ্রিল্যান্সারদের জন্য উপকারী হতে পারে। 

যেহেতু ফ্রিল্যান্সারদের সকল সেক্টরে কাজের সমান পারদর্শিতা থাকে না তাই আপনি এই ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসে কাজের দক্ষতা অনুযায়ী বিভিন্ন প্রোজেক্টের কাজ করতে পারবেন। বড় কোম্পানি, দীর্ঘ মেয়াদী প্রজেক্ট, উচ্চ দক্ষতা ভিত্তিক কাজের জন্য ইহা বেশি জনপ্রিয়। এখানে আপনি যেসকল কাজ করতে পারবেন যেমনঃ- গ্রাফিক ডিজাইন, ওয়েব ডেভেলপমেন্ট, মোবাইল অ্যাপ ডেভেলপমেন্ট, কনটেন্ট রাইটিং, মার্কেটিং, ভিডিও এডিটিং সহ আরও অন্যান্য

Upwork-এ যেভাবে কাজ করবেন

প্রোফাইল তৈরি করাঃ- Upwork মার্কেট-প্লেসে কাজ করে সফলতা অর্জন করতে হলে প্রথমে আপনাকে একটি শক্তিশালী প্রোফাইল তৈরি করতে হবে। এখানে আপনার পেশাদারিত্বের যাবতীয় তথ্য দেয়া থাকবে। অবশ্যই কাজের দক্ষতা, অভিজ্ঞতা, এবং পোর্টফোলিও সুন্দরভাবে যুক্ত করবেন আপনার প্রোফাইলে।  এমনভাবে প্রোফাইল তৈরি করুন যাতে ক্লায়েন্ট আপনার প্রোফাইল দেখে আকৃষ্ট হয়। আপনার প্রোফাইলে যেসকল তথ্য থাকা দরকারঃ-

  • কাজের দক্ষতা বিবরণ, অভিজ্ঞতা সার্টিফিকেট
  • পোর্টফোলিও ( কাজের নমুনা )
  • প্রোফাইলে পেশাদার ছবি যুক্ত করুন।
  • প্রোফাইলের একটি শক্তিশালী বর্ণনা

কাজের জন্য বিড করাঃ- আপনার প্রোফাইল তৈরি করা হয়ে গেলে বিভিন্ন প্রজেক্টে  বিড করতে পারবেন। এখানে ক্লায়েন্টরা তাদের প্রয়োজন অনুযায়ী পোস্ট করবে আপনি সেসব প্রজেক্ট এ বিড করবেন। বিড করার সময় কাজের ধারণা থাকতে হবে সে অনুযায়ী বিড তৈরি করতে হবে। ফাইনালি, একটি কভার লেটার তৈরি করে সেখানে আপনি কাজটি কিভাবে সম্পন্ন করবেন তার বিস্তারিত বর্ণনা থাকবে। 

প্রজেক্টে কাজ শুরু করাঃ- প্রজেক্ট সিলেক্ট করা হয়ে গেলে ক্লায়েন্টের সাথে কাজের সময়সূচী, বাজেট, বিস্তারিত বিবরণ দেয়ার পর কাজ শুরু করবেন। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজ জমা দিবেন। ক্লায়েন্ট এর প্রত্যাশার চাইতে বেশি দেয়ার চেষ্টা করবেন। সর্বোপরি, ক্লায়েন্টের সন্তুষ্টি আসল পেমেন্ট।

পেমেন্ট গ্রহণ করাঃ- এখানে পেমেন্ট সিস্টেম খুবই সহজ এবং নিরাপদ। কাজ সম্পন্ন হওয়ার পরপরই ক্লায়েন্ট পেমেন্ট রিলিজ করে থাকে। এবং আপনি সে পেমেন্ট আপনার আপয়ার্ক একাউন্টে নিতে পারবেন। পরবর্তীতে পেপাল, ব্যাংক ট্রান্সফার, অন্যান্য পেমেন্ট অপশন এর মাধ্যমে ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলন করতে পারবেন। 

Upwork-এ সফল হওয়ার টিপস

আপনাকে সুন্দর একটি প্রোফাইল তৈরি করতে হবে। প্রোফাইল আপনার কাজের পরিচয় বহন করবে। প্রোফাইলে কাজের বর্ণনা, পোর্ট-ফোলিও যত ভালো হবে কাজ পাওয়ার সম্ভাবনা দ্বিগুন হবে। আপনার কাজের দক্ষতা, অভিজ্ঞতা, পেশাদারিত্বের প্রমাণ করতে প্রোফাইলকে আকর্ষণীয়ভাবে তৈরি করতে হবে।

আপনি যদি নতুন ফ্রিল্যান্সার হয়ে থাকেন তাহলে শুরুর দিকে কাজের জন্য কম চার্জ ধরবেন। বেশি বেশি কাজ সংগ্রহ করার চেষ্টা করবেন। কাজের রেটিং যেন বাড়ে, ভালো রিভিউ যেন পাওয়া যায় সেদিকে নজর রাখবেন সে অনুযায়ী ক্লায়েন্টকে কাজ জমা দেয়ার চেষ্টা করবেন।

ক্লায়েন্টের সাথে আচরণের ক্ষেত্রে আপনাকে প্রথমে পেশা-দারিত্বের পরিচয় দিতে হবে। কাজ নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ডেলিভারী করতে হবে। ক্লায়েন্ট যেভাবে চায় সেভাবে কাজ করে দিতে হবে। ক্লায়েন্টের মেসেজের দ্রুত রিপ্লাই দেয়ার চেষ্টা করবেন। অবশ্যই সু-সম্পর্ক গড়ে তোলার দিকে বিশেষ নজর দিবেন।

এ ধরণের মার্কেট-প্লেসে কাজের গুণগত মান উন্নত হওয়াটা জরুরি। চেষ্টা করবেন ভালো রিভিউ পাওয়ার জন্য। যা ভবিষ্যৎতে আপনার কাজ পাওয়ার সম্ভাবনা বাড়িয়ে দেবে।

Upwork-এর সুবিধা ও অসুবিধা

সুবিধা:

  • এখানে বড় বড় প্রজেক্টের কাজ পাওয়া যায় যা বাড়তি ইনকামের সুযোগ করে দেয়। 
  • এখানে পেমেন্ট সিস্টেম সহজ, নিরাপদ, বিশ্বাসযোগ্য। ফ্রিল্যান্সারা সময় মতো পেমেন্ট নিতে পারে। 
  • বিভিন্ন ক্যাটাগরির অসংখ্য কাজ রয়েছে। এক কথায় আপনার দক্ষতা অনুযায়ী কাজের চাহিদা এ মার্কেটপ্লেস রয়েছে। 

অসুবিধা:

  • এই মার্কেট-প্লেসে কাজ পাওয়া শুরুর দিকে খুবই কঠিন। এখানে প্রতিযোগিতা অনেক বেশি। 
  • আপওয়ার্ক মার্কেট-প্লেসে প্রতিটি কাজের জন্য নির্দিষ্ট হারে কমিশন কেটে রাখে। যা আপনার আয় থেকে হ্রাস পায়। 

INBOX-DOLLARS

এখানে আপনি ছোট ছোট কাজ করেও টাকা ইনকাম করতে পারবেন। এটি অনেকটি Swagbucks এর মত। ভিডিও দেখে, ইমেইল পড়ে, ছোট-খাটো সার্ভে করে InboxDollars-এর মাধ্যমে টাকা ইনকাম করতে পারবেন। এই সাইটে একটি ভালো দিক হলো নগদ অর্থ প্রদান করে।  এই সাইটটি প্রতিষ্ঠিত হয় 2000 সালের দিকে। বিশ্বের লক্ষ লক্ষ ব্যবহারকারী এই সাইটটি ব্যবহার করে টাকা উপার্জন করছে। এই সাইটের সব থেকে বড় সুবিধা হল ভিডিও দেখে, গেম খেলে, ছোটখাটো সার্ভে করে, অন্যান্য অনলাইনের কাজ করে অর্থ উপার্জন করা যায়। 

ইহা জনপ্রিয়  “Get Paid To” (GPT) ওয়েবসাইট। একে অনলাইন রিওয়ার্ড প্ল্যাটফর্মও বলা যেতে পারে। ইহা বিভিন্ন কোম্পানির এবং ব্রান্ডের সাথে কাজ করে, তাদের পণ্য বা সেবা সম্পর্কে ব্যবহারকারীর মতামত জানতে চাই। InboxDollars এর কাজগুলো সম্পন্ন করলে আপনাকে নগদ নগদ অর্থ প্রদান করবে।

InboxDollars যেসব কাজ করবেন

সার্ভে করাঃ- সার্ভে বলতে এখানে বিভিন্ন কোম্পানি তাদের পণ্য বা সেবা সম্পর্কে ব্যবহারকারীর মতামত জানতে চাই। এই প্রতিটি সার্ভের সম্পূর্ণ করার জন্য আপনি নির্দিষ্ট পরিবারের অর্থ উপার্জন করতে পারবেন।

ইমেইল পড়া: InboxDollars এর মাধ্যমে আপনার কাছে স্পনসরড ইমেইল পাঠানো হবে। এই ইমেইল গুলো পড়ে আপনি অর্থ উপার্জন করতে পারবেন।

ভিডিও দেখা, গেম খেলা- এই সাইটে যতগুলো সহজ কাজ রয়েছে তার মধ্যে অন্যতম হলো ভিডিও বা বিজ্ঞাপন দেখা, গেম খেলা। এ কাজগুলো করেও আপনি টাকা উপার্জন করতে পারেন। 

অনলাইন শপিংঃ- এই সাইটের মাধ্যমে অংশীদার ওয়েবসাইট থেকে অনলাইনে শপিং করলে ক্যাশ ব্যাক অফার থাকছে। 

রেফারেল প্রোগ্রামঃ- InboxDollars এ সাইটটি বন্ধুদের কাছে রেফার করে অতিরিক্ত আয় করার সুযোগ থাকছে। 

InboxDollars-এ যেভাবে কাজ করবেন

একাউন্ট তৈরি করুনঃ- প্রথমে আপনাকে InboxDollars এ একটি একাউন্ট তৈরি করতে হবে। এই একাউন্ট খুলতে আপনার টাকার প্রয়োজন নেই। সাইন-আপ করার সঙ্গে-সঙ্গে স্বাগত বোনাস পাবেন।

কাজ বেছে নিনঃ- এখানে বিভিন্ন ধরণের কাজ রয়েছে যেমনঃ- সার্ভে পূরণ করা, ভিডিও দেখা, গেম খেলা, ইমেইল পড়া ইত্যাদি। আপনি আপনার পছন্দ মতো এই কাজ গুলো করতে পারবেন।

পয়েন্ট বা অর্থ উপার্জন করাঃ- কাজ সম্পন্ন করার পর-পরই আপনি নিদিৃষ্ট পরিমাণ নগদ অর্থ পাবেন। InboxDollars এখানে আপনি সরাসরি ডলারে আকারে দেখতে পাবেন।

আয় উত্তোলন করুনঃ- নিদিৃষ্ট পরিমাণ ডলার আপনার একাউন্টে জড়ো হলে আপনি তা ক্যাশ-আউট করতে পারবেন। InboxDollars এ পেপাল, গিফট কার্ড বা চেকের মাধ্যমে পেমেন্ট করা হয়।

InboxDollars-এর সুবিধা ও অসুবিধা

সুবিধা:

  • সহজ কাজ করে টাকা ইনকাম যেমনঃ সার্ভে করা, ভিডিও দেখা, গেমস খেলা, ই-মেইল পড়া ইত্যাদি।
  • এই সাইটে সরাসরি নগদ অর্থ প্রদান করা হয়। 
  • অতিরিক্ত আয়ের জন্য রেফারেল প্রোগ্রামের মাধ্যমে অর্থ ইনকাম করা যায়।

অসুবিধা:

  • এটা একটি পার্ট টাইম জব। এখানে খুব বেশি আয় করা যায় না। আয়ের পরিমাণ সীমিত।
  • নিদিৃষ্ট পরিমাণ ডলার আপনার একাউন্টে জড়ো হলে তবেই ক্যাশ আউট করতে পারবেন।

CLICK-WORKER

এটি একটি মাইক্রো জব প্লাটফর্ম। এখানে মূলত ছোট-ছোট কাজ করে আয় করতে হয় যেমনঃ- ডেটা এন্ট্রি, রিসার্চ, লেখালেখির কাজ এই সংশ্লিষ্ট কাজ করে এখান থেকে টাকা উপার্জন করতে হয়। যারা ছোট ছোট কাজ করে ইনকাম করতে চান তাদের জন্য এই সাইটটি সেরা হতে পারে। বিশ্বের যেকোন প্রান্তে বসে এই কাজ করে ইনকাম করা যায়। ফ্রিল্যান্সারদের জন্য এটি একটি জনপ্রিয় মার্কেট-প্লেস। যেখানে কোম্পানি গুলো ব্যবহারকারীদের কাজের বিনিময়ে অর্থ প্রদান করে থাকে। কাজ গুলো সহজ হওয়ায় ব্যবহারকারীরা এই কাজ করতে পছন্দ করে।

Clickworker-এ যে ধরনের কাজ করা যায়

  • ওয়েব রিসার্চ, তথ্য যাচাই, ডাটা এন্ট্রি ইত্যাদি এ ধরণের ছোট ছোট কাজ করা হয়।
  • কোন একটি নিদিৃষ্ট টপিকসের উপর আর্টিকেল লিখতে হয়।
  • অডিও শুনে বা ভিডিও দেখে সেগুলো লিখে ফেলা।
  • ইন্টারনেট থেকে তথ্য অনুসন্ধান করা।
  • অনলাইনে সার্ভে করে নিজস্ব মতামত প্রদান করা।
  • ছবি তোলা বা অ্যাপ টেস্ট স্মার্টফোনের মাধ্যমে সম্পন্ন করা।

Clickworker যেভাবে কাজ করবেন

একাউন্ট তৈরি করাঃ- সম্পূর্ণ বিনামূল্যে, ব্যাক্তিগত তথ্য, পেমেন্ট অপশন দিয়ে একাউন্ট তৈরি করা।

প্রোফাইল আপডেট করাঃ- আপনি যে যে কাজ জানেন সেই কাজের যাবতীয় তথ্য আপনার প্রোফাইলে যুক্ত করুন। আপনার প্রোফাইল দেখে ক্লায়েন্ট আপনাকে খোজ করবে এবং কাজের প্রস্তাব দিবে। কাজ পাওয়ার অন্যতম টেকনিক হলো আপডেট প্রোফাইল।

কোয়ালিফিকেশন টেস্ট দিনঃ- কাজ পেতে হলে এই সাইটে কোয়ালিফিকেশন টেস্ট দিতে হবে। পাশ করলে আপনার কোয়ালিটি বাড়বে, কাজ পাওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হবে।

কাজ বেছে নিনঃ- আপনার প্রোফাইলে যেভাবে পোর্টফোলিও করা থাকবে সে অনুযায়ী কাজ পাবেন। অসংখ্য কাজের মধ্য থেকে আপনার পছন্দ অনুযায়ী কাজ বাছাই করতে হবে।

পেমেন্ট গ্রহণ করুনঃ- কাজ সম্পন্ন হওয়ার পর এবার পেমেন্টের পালা। পেপাল, ব্যাংক ট্রান্সফার সহ বিভিন্ন মাধ্যমে পেমেন্ট রিসিভ করতে পারেন। কাজের মান ঠিক হলে দ্রুত পেমেন্ট পাবেন।

Clickworker-এর সুবিধা ও অসুবিধা

সুবিধা:

  • যেকোন সময়, যেকোন জায়গা থেকে কাজ করা সুবর্ণ সুযোগ রয়েছে।
  • একাউন্ট তৈরি বা কাজ শুরু করতে কোন প্রকার ফিস দিতে হয় না।
  • দক্ষতা অনুযায়ী কাজ বেছে নেয়ার সুযোগ থাকছে।
  • পার্ট-টাইম জব হিসেবে এটা সেরা হতে পারে।

অসুবিধা:

  • এখানে আয় তুলনামূলক কম। প্রতিযোগিতা বেশি।
  • কাজের পরিধি সীমিত। সব সময় কাজ পাওয়া যায় না।

PICO-WORKERS

ছোট খাটো কাজ করে অর্থ উপার্জনের অন্যতম প্লাটফর্ম হলো Picoworkers. এই কাজ গুলো খুবই সহজ যে কেউ এই কাজ গুলো করতে পারে যেমনঃ- সোশ্যাল মিডিয়াতে লাইক দেয়া, ভিডিও দেখা, ওয়েবসাইট ভিজিট করা ইত্যাদি। নতুন ফ্রিল্যান্সারদের জন্য এই প্লাটফর্মটি খুবই জনপ্রিয়। এখানে যে মাইক্রো জব গুলো পাওয়া যায় সেগুলো অল্প সময়ের মধ্যে সম্পন্ন করে অর্থ উপার্জন করা যায়। যারা দ্রুত কাজ করে টাকা ইনকাম করতে চান তাদের জন্য এই সাইটটি সেরা হতে পারে। ওয়েবসাইটে সাইন আপ করা, অ্যাপ ডাউনলোড করা, ভিডিও দেখা, রিভিউ লেখা ইত্যাদি এই কাজ গুলো খুবই সহজ যে কেউ এই কাজ গুলো করতে পারে। কোম্পানি গুলো তাদের কাজের বিজ্ঞাপন এই সাইট ‍গুলোতে দিয়ে থাকে। প্রতিটি কাজের ধরণ অনুযায়ী নিদিৃষ্ট পরিমাণে পেমেন্ট নির্ধারিত হয়ে থাকে।

Picoworkers যে কাজ গুলো করা হয়

  • ভিডিও দেখা ও লাইক করা
  • ডেটা এন্ট্রি
  • অনলাইন সার্ভে সম্পন্ন করা
  • ওয়েবসাইটে সাইন আপ করা
  • ইমেইল সাবস্ক্রিপশন
  • সামাজিক মাধ্যমে ফলো করা বা শেয়ার করা
  • অ্যাপ ডাউনলোড ও রিভিউ লেখা

Picoworkers-যেভাবে কাজ করবেন

একাউন্ট তৈরি করাঃ- ব্যাক্তিগত তথ্য, ভ্যালিড ই-মেইল অ্যাড্রেস দিয়ে একাউন্ট খুলতে হবে।

প্রোফাইল সম্পূর্ণ করুনঃ- এখানে আপনার কাজের দক্ষতা অনুযায়ী প্রোফাইল তৈরি করুন। যাতে করে ক্লায়েন্টরা আপনার প্রোফাইল দেখে আপনার কাজ সম্পর্কে ধারণা নিতে পারে। এমন আকর্ষণীয়ভাবে প্রোফাইল তৈরি করুন যাতে ক্লায়েন্টরা আকৃষ্ট হয়।

কাজ বেছে নিনঃ- প্রোফাইল তৈরি করা হয়ে গেলে আপনি এখানে বিভিন্ন কাজের বিজ্ঞাপন দেখতে পারবেন। তো এখান থেকে পছন্দ অনুযায়ী কাজ বেছে নিয়ে কাজ সম্পন্ন করবেন।

কাজ সম্পন্ন করুন এবং প্রমাণ জমা দিনঃ- কাজ সম্পন্ন করার পর আপনাকে কাজের প্রমাণ দিতে হবে। যেমন ধরুণ, আপনি যদি সাইটে সাইন আপ করে থাকেন তাহলে ঐ সাইটের স্ক্রিনশট জমা দিতে হবে।

পেমেন্ট গ্রহণ করুনঃ-  কাজের প্রমাণ জমা দেয়ার পর আপনি পেমেন্ট পাবেন। এই পেমেন্ট আপনি পেপাল, স্ক্রিল, ক্রিপ্টোকারেন্সি সহ বিভিন্ন মাধ্যমে গ্রহণ করতে পারবেন। নিদিৃষ্ট পরিমাণ ডলার আপনার একাউন্টে জড়ো হলে তবেই তা উত্তোলন করতে পারবেন।

Picoworkers-এর সুবিধা ও অসুবিধা

সুবিধা:

  • সহজ কাজ, কাজের পরিধি ছোট, আনন্দদায়ক।
  • আয় দ্রুত একাউন্টে জমা হয়।
  • বিশ্বের যে কোন প্রান্ত থেকে এই সাইটে কাজ করতে পারবেন।

অসুবিধা:

  • কাজ ছোট হওয়ায় খুবই অল্প পরিমাণ টাকা পাওয়া যায়। নিয়মিত কাজ করলে টাকা বাড়বে।
  • প্রতিযোগিতা বেশি হওয়ার কারণে কাজ পাওয়া একটু কঠিন।
  • কিছু কাজ স্ক্যাম থাকতে পারে। তাই কাজ করার আগে বিস্তারিত পড়ে নিন।

TIME-BUCKS

এই সাইটে বহু জাতিক কাজ করা যায়। এক কথায় বলা যায় মাল্টি-টাস্কিং প্ল্যাটফর্ম। এখানে ভিডিও দেখে, ফটো পোস্ট করে, সার্ভে করে, বিজ্ঞাপন দেখে,সোশ্যাল মিডিয়ায় কাজ করে, অ্যাপ ইনস্টল করে ইনকাম করা যায়। ইহা অনলাইনে “Get Paid To” প্ল্যাটফর্ম। এই সাইটটি যাত্রা শুরু করে ২০১৪ সালে। এখানে বিভিন্ন ধরণের কাজ করা যায়। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে কাজ করা যায়। ইহা বৈধ, বিশ্বস্ত প্লাটফর্ম। তাই আপনার হাতে যদি অল্প পরিমাণে সময় থাকে তাহলে সেই সময়কে কাজে লাগিয়ে ইনকাম শুরু করে দিতে পারেন।

TimeBucks- এ যে ধরণের কাজ করা যায়ঃ-

  • বিভিন্ন কোম্পানির সার্ভে করে এখানে মতামত প্রদান করতে হয়।
  • বিনোদন এবং বিজ্ঞাপনমূলক ভিডিও দেখে ইনকাম করার সুযোগ রয়েছে।
  • ক্যাপচা পূরণ করে ইনকাম।
  • সোশ্যাল মিডিয়ায় লাইক, কমেন্ট, ফলো করে ইনকাম।
  • অ্যাপস ডাউনলোড বা ইনস্টল করে ইনকাম।
  • এই সাইটটি বন্ধুদের কাছে রেফার করে ইনকাম।
  • নিদিৃষ্ট টপিকসে ছোট ছোট কনটেন্ট তৈরি করে ইনকাম।

TimeBucks-এ যেভাবে কাজ করবেনঃ

একাউন্ট খুলুনঃ- বিনামূল্যে, বৈধ ই-মেইল অ্যাড্রেস দিয়ে এখানে একাউন্ট খুলতে হয়।

প্রোফাইল তৈরি করুনঃ- ভালো মানের প্রোফাইল তৈরি করুন। এমনভাবে পোর্টফোলিও করুন যাতে ক্লায়েন্ট আপনাকে নক দিতে আগ্রহী হয়। এ প্রোফাইলে আপনার কাজের দক্ষতা, অভিজ্ঞতা সহ বিস্তারিত তথ্য দেয়া থাকবে।

কাজ বাছাই করুনঃ- ড্যাশবোর্ডে বিভিন্ন ধরণের কাজ দেয়া থাকবে। প্রতিটি কাজের জন্য ভিন্ন ভিন্ন পেমেন্ট দেয়া থাকবে। আপনার সুবিধা অনুযায়ী কাজ বাছাই করুন।

কাজ সম্পন্ন করুন এবং পেমেন্ট পানঃ- এই সাইটটি সপ্তাহে ১ বার আপনাকে পেমেন্ট প্রদান করবে। এই পেমেন্ট আপনি পেপাল, বিটকয়েন, স্ক্রিল সহ বিভিন্ন মাধ্যমে উত্তোলন করতে পারবেন।

TimeBucks-এর সুবিধা ও অসুবিধা

সুবিধা:

  • খুব দ্রুত আয় করা যায়।
  • বিভিন্ন ধরণের কাজ পাওয়ার সুবিধা রয়েছে।
  • রেফার করে বাড়তি ইনকাম করা যায়।
  • পেপাল, বিটকয়েন, পেওনিয়ারের মাধ্যমে ইনকাম শুরু করা যায়।

অসুবিধা:

  • কাজ ছোট হওয়ায় আয়ের পরিমাণ অনেক সীমিত।
  • কিছু কাজ সম্পন্ন করতে বেশি সময় লাগে, তবে পেমেন্ট কম।

Y-SENSE

এটি ২০১৯ সাল থেকে যাত্রা শুরু করে। ইহা ClixSense থেকে ySense এ ব্রান্ড করা হয়। গোটা বিশ্বের যেকোন প্রান্ত থেকে এই সাইটটি ব্যবহার করা যায়। ইহা GPT (Get Paid To) প্লাটফর্ম। এখানে ছোট ছোট কাজ করে খুব সহজে এখান থেকে পেমেন্ট উইড্রো করতে পারবেন। এখানে সার্ভে করে, অফার কমপ্লিট করে, বিভিন্ন ধরণের ছোট ছোট কাজ করে, অ্যাপ ডাউনলোড করে, ভিডিও দেখে, রেফারেল প্রোগ্রামের মাধ্যমে আয় করা যায়। ইহা বৈধ, বিশ্বস্ত একটি প্লাটফর্ম। যা ব্যবহারকারীদের কাজের বিনিময়ে অর্থ প্রদান করে আসছে।

ySense-এ যে ধরনের কাজ করা যায়

  • বিভিন্ন কোম্পানির সার্ভে করে মতামত প্রদান করে ইনকাম।
  • বিজ্ঞাপন, বিনোদনমূলক ভিডিও দেখে ইনকাম।
  • কোম্পানির অফার পূর্ণ করে ইনকাম।
  • এই সাইটটি বন্ধুদের কাছে রেফার করে ইনকাম।
  • ডেটা এন্ট্রি, ওয়েব রিসার্চ এ ধরণের ছোট ছোট কাজ করে ইনকাম।

ySense-এ যেভাবে কাজ করবেন

একাউন্ট খুলুনঃ- বিনামূল্যে, বৈধ ই-মেইল ঠিকানা দিয়ে একাউন্ট খুলুন।

প্রোফাইল তৈরি করুনঃ- সব সময় প্রোফাইল আপডেট রাখবেন, পোর্টফোলিও তৈরি করে রাখবেন। আপনার প্রোফাইল দেখে ক্লায়েন্ট আপনাকে নক দিবে।

কাজ বাছাই করুনঃ- ড্যাশ বোর্ডে বিভিন্ন ধরণের কাজ দেয়া থাকবে। আপনার পছন্দ অনুযায়ী কাজ বেছে নিবেন।

কাজ সম্পন্ন করে পেমেন্ট গ্রহণ করুনঃ- এই সাইটে কাজ সম্পন্ন করার পর পেপাল, পেওনিয়ার, ক্রিল, অ্যামাজন গিফটের মাধ্যমে টাকা উত্তোলন করতে পারবেন।

ySense-এর সুবিধা ও অসুবিধা

সুবিধা:

  • এখানে টাকা দিয়ে একাউন্ট খুলতে হয় না।
  • কাজ খুবই সহজ, যে কেউ এই কাজ করতে পারে।
  • এই সাইটটি বন্ধুদের রেফার করে ইনকাম করা যায়।
  • পেপাল, ক্রিল, গিফট কার্ডের মাধ্যমে পেমেন্ট গ্রহণ করতে পারেন।

অসুবিধা:

  • কিছু কাজ আছে সময় সাপেক্ষ কিন্তু পেমেন্ট কম।
  • কাছ প্রতিযোগিতামূলক। নতুনদের জন্য কাজ পাওয়ার সম্ভাবনা কম।
  • কিছু কাজ বা সার্ভে নিদিৃষ্ট দেশের ব্যবহারকারীরা করতে পারে।

NEOBUX

২০০৮ সালে এই সাইটটি আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করে। একে  “Get Paid To” (GPT) এবং “Paid to Click” (PTC) প্ল্যাটফর্ম বলা হয়। ছোট ছোট কাজ করে, বিজ্ঞাপন দেখে, রেফার করে অর্থ উপার্জন করতে পারেন। ফ্রিল্যান্সারদের জন্য জনপ্রিয় বিশ্বস্ত আয়ের সাইট এটি।

Neobux-এ যে ধরনের কাজ করা যায়

  • বিজ্ঞাপন, বিনোদনমূলক ভিডিও দেখে ইনকাম।
  • CrowdFlower প্ল্যাটফর্মের সাহায্যে ছোট ছোট কাজ করে ইনকাম।
  • কোম্পানির দেয়া অফার সম্পূর্ণ করে ইনকাম।
  • গেমস খেলে ইনকাম।
  • এই সাইটটি বন্ধুদের কাছে রেফার করে ইনকাম।

Neobux-এ যেভাবে কাজ করবেন

একাউন্ট খুলুনঃ- বিনামূল্য সাইন আপ করে, বৈধ ই-মেইল অ্যাড্রেস ব্যবহার করে ইনকাম করুন।

বিজ্ঞাপন/রেফার/মাইক্রো টাস্ক সম্পন্ন করুনঃ- একাউন্ট সাইন আপ করার পর বিজ্ঞাপন দেখুন, ডেটা এন্ট্রি, ওয়েব রিসার্চ, এবং সার্ভে পূরণ করে, রেফার করে ইনকাম করুন।

পেমেন্ট উত্তোলন করুনঃ- পেপাল, পেওনিয়ার, ক্রিল, বিটকয়েনের মাধ্যমে পেমেন্ট উত্তোলন করুন।

Neobux-এর সুবিধা ও অসুবিধা

সুবিধা:

  • ছোট ছোট কাজ করে ইনকাম করা যায়।
  • এই সাইটটি বিনামূল্যে সাইন আপ করা যায়।
  • ইহা বন্ধুদের রেফার করে ইনকাম বাড়ানো যায়।
  • পেপাল, পেওনিয়ার, বিটকয়েনের মাধ্যমে টাকা উত্তোলনের সুযোগ।

অসুবিধা:

  • আয়ের পরিমাণ সীমিত।
  • যেহেতু আয় কম, ভালো টাকা ইনকাম করতে হলে অনেক সময়, শ্রম বিনিয়োগ করতে হয়।
  • প্রতিদিন বিজ্ঞাপন দেখা এটি বিরক্তিকর মনে হতে পারে।

SURVEY JUNKIE

ইহা একটি “Get Paid To” (GPT) প্ল্যাটফর্ম। এই সাইটটি অনলাইনে সার্ভে করে কোম্পানির নিকট মূল্যবান মতামত প্রেরণ করে। যারা ব্যবহারকারী সার্ভের বিনিময়ে তাদের টাকা প্রদান করে। সার্ভে করার জন্য আপনাকে পয়েন্ট প্রদান করা হবে। এই পয়েন্ট গুলো পরবর্তীতে ক্যাশ আউট করতে পারবেন। ইহা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা বাসিন্দারা ব্যবহার করতে পারে।  আপনি যে কোম্পানি গুলোর পন্য বা সেবা সম্পর্কে মতামত দিচ্ছেন যা কোম্পানির পন্য বা সেবার ব্রান্ড ভ্যালু উন্নতকরণে সহায়তা করছে।

Survey Junkie-এ যেভাবে কাজ করা যায়

একাউন্ট খুলুনঃ- এখানে একাউন্ট খোলা খুবই সহজ। বিনামূল্যে সাইন আপ করে ভ্যালিড ই-মেইল অ্যাড্রেস দিয়ে একাউন্ট খুলতে পারেন।

প্রোফাইল উন্নত করুনঃ- এখানে আপনার আগ্রহ, জীবনধারা, ব্যাক্তিগত শেয়ার করবেন। যার ভিত্তিতে Survey Junkie আপনাকে সার্ভে পাঠাবে। এজন্য সব সময় প্রোফাইল পোর্টফোলিও করে রাখবেন।

সার্ভে পূরণ করুনঃ- সার্ভে করার বিনিময়ে আপনার একাউন্টে পয়েন্ট জমা হবে। প্রতিটি সার্ভের জন্য আলাদা সময়সীমা এবং নিদিৃষ্ট পরিমাণ পেমেন্ট থাকবে।

পয়েন্ট সংগ্রহ এবং নগদায়নঃ- যখন আপনার একাউন্টে ১ হাজার পয়েন্ট জমা হবে তখন আপনি পেমেন্ট গ্রহণ করতে পারবেন। ১ হাজার পয়েন্ট = ১০ ডলার হিসাব করা হয়। পেমেন্ট উত্তোলন করার জন্য পেপাল, অ্যামাজন গিফট কার্ড এর মাধ্যমে উত্তোলন করতে পারবেন।

Survey Junkie-এর সুবিধা ও অসুবিধা

সুবিধা:

  • এখানে কাজ করতে কোন বিশেষ দক্ষতার প্রয়োজন নেই। এখানে কাজ করা খুবই সহজ।
  • এই সাইটটি  বিনামূল্যে সাইন আপন করা যায়।
  • পেপাল, গিফট কার্ডের মাধ্যমে পেমেন্ট দ্রুত উত্তোলন করা হয়।
  • ইহা বৈধ এবং বিশ্বস্ত প্লাটফর্ম

অসুবিধা:

  • মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, অস্ট্রেলিয়ার নাগরিকরা ব্যবহার করতে পারে।
  • সার্ভে করার জন্য খুব একটা বেশি টাকা দেয় না।
  • সার্ভের কাজ পাওয়া কঠিন।

প্রতারণা থেকে কিভাবে বাঁচবেন

  • যে সাইট ব্যবহার করছেন ঐ সাইট সম্পর্কে ব্যবহারকারীর মতামত জানুন। 
  • ঐ সাইট সম্পর্কে ইন্টারনেট থেকে বিস্তারিত তথ্য কালেক্ট করুন।
  • ঐ সাইটের রিভিউ দেখুন।
  • কখনোও আপনার ব্যাক্তিগত তথ্য শেয়ার করবেন না।

বিকাশ ও নগদে ফ্রি টাকা ইনকাম উইথড্র প্রক্রিয়া

  • প্রথমে সাইটে একাউন্ট তৈরি করুন।
  • সার্ভে পূরণ করুন।
  • নিদিৃষ্ট পরিমাণ পেমেন্ট আপনার একাউন্টে জড়ো হলে বিকাশ বা নগদে পেমেন্ট উত্তোলনের জন্য রিকোয়েস্ট করুন।

লেখকের মন্তব্য

সম্মানিত পাঠকবৃন্দ এই পোস্টে আমরা ফ্রি ইনকাম সাইট ২০২৫ | ডিপোজিট ছাড়া টাকা ইনকাম করার উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। আশা করি পোস্টটি পড়ে আপনারা উপকৃত হয়েছেন। আমরা আমাদের সাইটে প্রতিনিয়ত অনলাইন ইনকাম রিলেটেড  পোস্ট পাবলিশ করে থাকি।

এতক্ষণ ধৈর্য্য ধরে পোস্টটি পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। পরবর্তীতে আলোচনা হবে ভিন্ন কোন পোস্ট নিয়ে। সে পর্যন্ত ভালো থাকুন। আপনার সুস্থাতা কামনা করে এখানে শেষ করছি। আমাদের সাথেই থাকুন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

আপনি পদ্মা মেইলের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url