ফ্রিল্যান্সিং ডিজিটাল মার্কেটিং কিঃ- বিস্তারিত জানুন ১ ক্লিকে
ফ্রিল্যান্সিং ডিজিটাল মার্কেটিং কি জানতে চান ? তাহলে এই পোস্টটি আপনার জন্য। ধরুণ, আপনি আপনার বন্ধুকে জিজ্ঞাসা করলেন তুমি কি জব কর ? সে উত্তর দিলঃ- আমি ফ্রিল্যান্সিং করি। ফ্রিল্যান্সিংয়ে কোন সেক্টর নিয়ে কাজ করছো ? সে উত্তরে বললঃ আমি ডিজিটাল মার্কেটিং নিয়ে কাজ করছি। ফ্রিল্যান্সিং বলতে এখানে মুক্ত পেশাকে বোঝায়। ডিজিটাল মার্কেটিং বলতে মার্কেটিং করার ডিজিটাল চ্যানেলকে বোঝায়। ডিজিটাল মার্কেটিং ছাড়া বর্তমানে ব্যবসা-বানিজ্য কল্পনা করা যায় না। ফ্রিল্যান্সিং ডিজিটাল মার্কেটিং কি তা জানতে এই পোস্টটি শেষ অবদি পড়ুন।
ফ্রিল্যান্সিং ডিজিটাল মার্কেটিং এর সেক্টর অনেক বড়। যেখানে একজন ফ্রিল্যান্সার ডিজিটাল মার্কেটিং এর কৌশল প্রয়োগ করে বিভিন্ন ক্লায়েন্ট বা কোম্পানির কাজ করে একে ফ্রিল্যান্সিং ডিজিটাল মার্কেটিং বলা হয় সহজভাষায়। যেকোন একটি সেক্টরে দক্ষ হতে পারলেই ভালো টাকা উপার্জনের সুযোগ থাকছে। ইয়াং জেনারেশনের অনেকে এই ডিজিটাল মার্কেটিং এর দিকে ঝুঁকছে। অনলাইন থেকে টাকা উপার্জনের সব থেকে সহজ মাধ্যম হলো ডিজিটাল মার্কেটিং। চলুন তাহলে আর দেরি না করে ফ্রিল্যান্সিং ডিজিটাল মার্কেটিং কি সে সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।
ভূমিকা
ডিজিটাল মার্কেটিং বলতে ডিজিটাল চ্যানেল ব্যবহার করে পন্য বা সেবার প্রচার-প্রচারণাকে বোঝায়। আগে যে কোন ধরণের পন্য বা সেবা প্রচার-প্রচারণার জন্য মাইকিং করা হতো। এখন মাইকিং এর পরিবর্তে ইন্টারনেটের মাধ্যমে কোন পন্য বা সেবা সম্পর্কে অনলাইনে প্রচার-প্রচারণা চালানো হয়। এই যে আপনারা ইউটিউব, ফেসবুক চালানোর সময় অনেক বিজ্ঞাপন দেখে থাকেন। এখানে ডিজিটাল মার্কেটিং এর মাধ্যমে ইউটিউব বা ফেসবুকে পন্যের প্রচার-প্রচারনা চালানো হয়েছে।
কোন পন্য বা সেবার কেন ডিজিটাল মার্কেটিং করতে হয় ? হ্যাঁ, বর্তমানে ইন্টারনেটের এ যুগে ব্যবসার সম্প্রসারণে ডিজিটাল মার্কেটিং এর কোন বিকল্প নেই। ব্যবসার প্রাণ বলা হয় গ্রাহকদের। এখন গ্রাহক যদি আপনার পন্য বা সেবা সম্পর্কে না জানে তাহলে কার নিকট পন্য বা সেবা বিক্রি করবেন ? আপনার পন্য বা সেবা সম্পর্কে গ্রাহক যেন জানে এজন্য ডিজিটাল মার্কেটিং করতে হবে।
আরো পড়ুনঃ- ডিজিটাল মার্কেটিং এর কোন কোন কাজের চাহিদা বেশি ২০২৫ঃ- নতুন তথ্য
একটু উদাহারণ দিয়ে বোঝাই, ধরুণ বাজারে নতুন ব্রান্ডের একটি ক্যালকুলেটর এসেছে। এখন এই ক্যালকুলেটর সম্পর্কে মানুষকে তো জানাতে হবে। আপনি যদি সনাতন ( মাইকিং করে, মানুষের নিকটে গিয়ে জানান ) পদ্ধতিতে মার্কেটিং তাহলে একসাথে কতজন মানুষ এই ক্যালকুলেটর সম্পর্কে জানবে ? ধরে নিচ্ছি, ৫ হাজার মানুষ এই ক্যালকুলেটর সম্পর্কে জানতে পারল। কিন্তু ইন্টারনেটের এ যুগে মানুষ অনলাইন প্লাটফর্ম ( ইউটিউব, ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম ) এর সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। ডিজিটাল পদ্ধতিতে মার্কেটিং করলে ইউটিউব, ফেসবুক, ইনস্টাগ্রামের মাধ্যমে লক্ষ লক্ষ কোটি কোটি মানুষ আপনার এই ক্যালকুলেটর সম্পকে জানতে পারবে।
আপনি ডিজিটাল মার্কেটিং করে যে টাকা উপার্জন করছেন এটাকে বলা হয় ফ্রিল্যান্সিং বা মুক্ত পেশা। এখন আপনি হয়তো চিন্তা করছেন কোন কোন কাজ গুলোকে ডিজিটাল মার্কেটিং বলা হয় ? কনটেন্ট মার্কেটিং, সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং, ই-মেইল মার্কেটিং, ভিডিও মার্কেটিং, পেইড বিজ্ঞাপন, ইনফ্লুয়েন্সার মার্কেটিং ইত্যাদি। এই যে এখন আপনি আমাদের লেখাটা পড়ছেন লক্ষ্য করুণ আমাদের এই ওয়েবসাইটে বিজ্ঞাপন দেখা যাচ্ছে এটাও ডিজিটাল মার্কেটিং এর অংশ। বর্তমানে ডিজিটাল মার্কেটিং ব্যবসায়িক সেক্টরের জন্য আর্শীবাদস্বরুপ। এর মাধ্যমে আপনি আপনার প্রোডাক্ট বা সার্ভিস সহজে পৃথিবীর এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে মানুষের নিকট পৌছে দিতে পারছেন। এবং আপনার ব্যবসা দ্রুত সম্প্রসারণ করতে পারছেন।
আরো পড়ুনঃ- বাংলাদেশী অ্যাপ প্রতিদিন 1000 টাকা আয় পেমেন্ট বিকাশ
শুধু ডিজিটাল চ্যানেলের মাধ্যমে প্রচার-প্রচারণাকে ডিজিটাল মার্কেটিং বলা হলেও ডিজিটাল মার্কেটিং এর সজ্ঞা কিন্তু আরও রয়েছে। ডিজিটাল চ্যানেল ব্যবহার করে একজন ক্রেতাকে পন্য কিনতে বাধ্য করা এবং ক্রেতার চাহিদা বোঝা যায়। বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়া বুস্টিং, ক্যাম্পইন ডিজিটাল মার্কেটিং এর বিশাল অংশ দখল করে রেখেছে। ইন্টারনেট যতদিন থাকবে ভবিষ্যৎতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ব্যবহার তত বাড়বে এবং ডিজিটাল মার্কেটিং এর পরিসর আরও বড় হবে।
বর্তমানে ডিজিটাল মার্কেটিং এর মাধ্যমে একস্থান থেকে অন্যস্থানে গ্রাহকের চাহিদা আমরা বুঝতে পারি। এতে মার্কেটিং সিস্টেম আরও সহজ হয়েছে। স্বল্প সময়ে একটা বিশাল এরিয়া ব্যাপী ব্যবসা করা যাচ্ছে। ডিজিটাল মার্কেটিং এর মাধ্যমে প্রোডাক্ট বা সেবার ব্রান্ড ভ্যালু বৃদ্ধি করা সম্ভব হচ্ছে। যার ব্রান্ড ভ্যালু যত বেশি তার মার্কেটিং চাহিদাও তত বেশি। এই ডিজিটাল মার্কেটিং এর মাধ্যমে পুরো কাজটি এখন সহজ হয়ে গেছে।
ডিজিটাল মার্কেটিং কত প্রকার ও কি কি |ফ্রিল্যান্স ডিজিটাল মার্কেটিং-এর জন্য প্রয়োজনীয় স্কিলসেট
শুরুতেই বলেছি, ডিজিটাল মার্কেটিং এটা অনেক বড় একটি সেক্টর। এখানে অনেক ধরণের কাজ রয়েছে। যেকোন একটি কাজে পারদর্শী হতে পারলে এখান থেকে ভালো টাকা উপার্জনের সুবর্ণ সুযোগ থাকছে। অনেকে ডিজিটাল মার্কেটিং শিখতে চান কিন্তু কোন কাজ শিখবেন বা কোন কাজ শিখলে ভালো টাকা উপার্জন করতে পারবেন তা নিয়ে হয়ত ভাবছেন ? কত গুলো স্বতন্ত্র পার্টস নিয়ে একটি ডিজিটাল মার্কেটিং সেক্টর তৈরি হয়। নিম্নে ডিজিটাল মার্কেটিং এর কাজ গুলো নিম্নরুপঃ-
সার্চ ইঞ্জিন অপ্টিমাইজেশান ( এসইও )- SEO এর পূর্ণরুপ হলোঃ- সার্চ ইঞ্জিন অপ্টিমাইজেশান। এর কাজ হলো গুগলে ওয়েবসাইটকে সবার সামনে নিয়ে আসা। ওয়েবসাইটের ব্রান্ড ভ্যালু বৃদ্ধি করা, ওয়েবসাইটে বেশি বেশি ট্রাফিক নিয়ে আসা। ট্রাফিক হলো একটি ওয়েবসাইটের প্রাণ। গুগলে হাজার হাজার ওয়েবসাইট রয়েছে। তারাও আপনার মতো কনটেন্ট তৈরি করে রেখেছে। এখন এতগুলো ওয়েবসাইটকে পিছনে ফেলে আপনার ওয়েবসাইটকে গুগলে প্রথমে পেজে নিয়ে আসতে এসইও করতে হয়। এসইও না করলে ওয়েবসাইটে ট্রাফিক পাওয়া যায় না। ট্রাফিক না আসলে আপনার প্রোডাক্ট বা সার্ভিস কেউ খুঁজে পাবে না। সার্চ ইঞ্জিনে যে ওয়েবসাইট সবার উপরে থাকে সেই ওয়েবসাইটে ট্রাফিক বেশি পাওয়া যায়।
আরো পড়ুনঃ- মাসে ৩০ হাজার টাকা আয় করার ৩০টি সেরা উপায়
সার্চ ইঞ্জিন মার্কেটিংঃ- এটি মূলত পেইড অ্যাডভার্টাইজিং অপশন ব্যবহার করে টাকার বিনিময়ে বিজ্ঞাপন দেখিয়ে কোন কিওয়ার্ড কে সার্চ ইঞ্জিনের প্রথমে নিয়ে আসা হয়। সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন ( এসইও ) তে কোন প্রকার অর্থ ব্যয় না করে আমরা আমাদের ওয়েবসাইটকে সার্চ ইঞ্জিনের প্রথমে নিয়ে আসি। এটা ছিল একটি দীর্ঘমেয়াদী প্রক্রিয়া। সার্চ ইঞ্জিন মার্কেটিং এ অর্থ খরচ করে বিজ্ঞাপন দেখিয়ে নিদিৃষ্ট সময়ের জন্য সার্চ ইঞ্জিনের প্রথম পেজে নিয়ে আসি।
সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিংঃ- ডিজিটাল মার্কেটিং এর বড় অংশ জুড়ে সোশ্যাল মিডিয়া দখল করে রেখেছে। সোশ্যাল মিডিয়া বলতে ফেসবুক, ইউটিউব, ইনস্টাগ্রাম, WHATSAPP সহ আরও অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্লাটফর্ম কে আমরা বুঝে থাকি। প্রত্যেক ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের একটি নিজস্ব সোশ্যাল মিডিয়া প্লাটফর্ম রয়েছে। ধরুণ, আপনি একটি মোবাইল ক্রয় করতে চাচ্ছেন ? এখন আপনি ফেসবুকে মোবাইল ক্রয় লিখে সার্চ করলে অনেক গুলো মোবাইলের দোকানের নাম সামনে চলে আসবে সেখান থেকে যাচাই বাচাই করে মোবাইল ক্রয় করতে পারছেন।
কনটেন্ট মার্কেটিংঃ- বর্তমানে অনেক প্রতিষ্ঠান তাদের পন্য বা সেবা সম্পর্কে তাদের ওয়েবসাইটে লেখালেখি করার জন্য কনটেন্ট রাইটার নিয়োগ দিয়ে থাকে। আপনি এখন যে পড়াটা পড়ছেন এটাও একটা কনটেন্ট। আমরা আমাদের ওয়েবসাইটে পাঠকদের জানানোর জন্য বিভিন্ন ধরণের কনটেন্ট পাবলিশ করে থাকি। এর মাধ্যমে আপনার প্রোডাক্ট বা সার্ভিস সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য কনটেন্টে উপস্থাপন করা হয়। যাতে পাঠক সহজে আপনার ঐ প্রোডাক্ট বা সার্ভিস সম্পকে স্বচ্ছ ধারণা নিতে পারে। ডিজিটাল মার্কেটিং এর সব থেকে সহজ কাজ হলো কনটেন্ট রাইটিং। আপনি যদি ডিজিটাল মার্কেটিং শুরু করতে চান ? তাহলে কনটেন্ট রাইটিং এর কাজ শুরু করতে পারেন। এর জন্য প্রয়োজন ডোমেইন, হোস্টিং, নিজস্ব একটি ওয়েবসাইট।
ইনফ্লুয়েন্সার মার্কেটিংঃ- সোশ্যাল মিডিয়ায় কোন জনপ্রিয় ব্যাক্তির দ্বারা কোন প্রতিষ্ঠান তাদের প্রোডাক্ট বা সার্ভিসের প্রচার-প্রচারণা চালায়। ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান একজন সোশ্যাল মিডিয়ায় পরিচিত ব্যাক্তি। তার ভক্ত-অনুরাগীর সংখ্যা অনেক বেশি। এখন সাকিব আল হাসান যদি অর্থের বিনিময়ে কোন প্রতিষ্ঠানের প্রোডাক্ট বা সার্ভিসের প্রচার-প্রচারণা চালায় সেটা হবে ইনফ্লুয়েন্সার মার্কেটিং। এখন আপনি নিজেও যদি সোশ্যাল মিডিয়ায় পরিচিত মুখ হয়ে থাকেন তাহলে আপনিও ইনফ্লুয়েন্সার মার্কেটার হিসেবে কাজ করতে পারবেন।
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিংঃ- যতগুলো মার্কেটিং সিস্টেম রয়েছে তার মধ্যে সব থেকে জনপ্রিয় মার্কেটিং পদ্ধতি হলো অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং। বাংলাদেশে বর্তমানে বহু ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান রয়েছে। তার মধ্যে দারাজ অন্যতম। আপনি নিজেও অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করতে পারবেন। ধরুণ, আপনার একটি নিজস্ব ইউটিউব চ্যানেল, ওয়েবসাইট রয়েছে। এখন আপনি আপনার ওয়েবসাইটে বা ইউটিউব চ্যানেলে দারাজের কোন একটি প্রোডাক্টের লিংক শেয়ার করলেন। আপনার ওয়েবসাইট বা ইউটিউব চ্যানেলে প্রবেশ করে ঐ লিংকে ক্লিক করে যারা প্রোডাক্ট কিনবে তার বিনিময়ে দারাজ কর্তৃপক্ষ আপনাকে কমিশন দিবে। এটা হলো অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং।
ই-মেইল মার্কেটিংঃ- আপনার ব্যবসা সংশ্লিষ্ট যেকোন তথ্য, ডিসকাউন্ট, অফার ই-মেইলের মাধ্যমে পাঠিয়ে যে মার্কেটিং করা হয় তাকে ই-মেইল মার্কেটিং বলে। ই-মেইল মার্কেটিং এর মাধ্যমে কাস্টমারদের সাথে সরাসরি ব্যাক্তিগত যোগাযোগ গড়ে উঠে। মূলত ই-মেইল মার্কেটিং এর মাধ্যমে বিক্রয় বৃদ্ধির চেষ্টা করা হয়। টার্গেটেড কাস্টমারদের উদ্দেশ্যে করে ই-মেইল পাঠিয়ে মূলত এই মার্কেটিং করা হয়।
ভিডিও মার্কেটিংঃ- ভিডিও মার্কেটিং এর জন্য জনপ্রিয় প্লাটফর্ম হলো ইউটিউব, ফেসবুক, টিকটক, ইনস্টাগ্রাম, স্ন্যাপচ্যাটের ইত্যাদি। এখানে মূলত প্রোডাক্ট বা সার্ভিস সম্পর্কে এমন আকর্ষনীয় ভিডিও গুলো তৈরি করা হয় যা ক্রেতা/অডিয়েন্সদের আকর্ষণ করে এবং ঐ প্রোডাক্ট বা সার্ভিস কিনতে আগ্রহী হয়। প্রত্যেকটি বড় বড় ব্যবসা-প্রতিষ্ঠান ভিডিও মার্কেটিং করে থাকে। ডিজিটাল মার্কেটিং এর গুরুত্বপূর্ণ চাপ্টার হলো ভিডিও মার্কেটিং।
সিপিএ মার্কেটিংঃ- অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এবং সিপিএ মার্কেটিং এটা কাছাকাছি। CPA পূর্ণরুপ হলোঃ- Cost Per Action. ব্যবসার ব্রান্ড ভ্যালু বৃদ্ধি করতে হলে মার্কেটিং এর কোন বিকল্প নেই। এখানে পন্যের উৎপাদনকারী ব্যাক্তি, প্রতিষ্ঠান নিদিৃষ্ট পরিমাণ অর্থের বিনিময়ে মার্কেটারদের মাধ্যমে পন্যের প্রচার করে থাকে।
কিভাবে সফল ফ্রিল্যান্স ডিজিটাল মার্কেটিং ক্যারিয়ার শুরু করবেন
ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসে আপনার পোর্টফোলিও তৈরি করুন এবং কম দামে কাজ করুন। কম দামে ভালো মানের সার্ভিস দেয়ার চেষ্টা করুন।
ডিজিটাল মার্কেটিং এর গুরুত্বপূর্ণ টুলস ( SEMrush, Small SEO Tools, Google Analytics, Hootsuite, Canva ) ব্যবহার করে আপনি ডিজিটাল মার্কেটিং এর খুঁটি-নাটি তথ্য পাবেন। যা আপনার ডিজিটাল মার্কেটিং এর ক্যারিয়ারকে সামনের দিকে প্রসারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
গ্রাহকদের সাথে সুন্দর সম্পর্ক রাখুন। তাদেরকে অল্প দামে ভালো সার্ভিস দেয়ার চেষ্টা করুন। গ্রাহকদের বিশ্বাস অর্জন করুন।
ডিজিটাল মার্কেটিং এর কাজ কি
- ব্যবসার ব্রান্ড ভ্যালু বৃদ্ধি করা, আপনার প্রোডাক্ট বা সার্ভিস সম্পর্কে মানুষকে জানানো।
- গ্রাহকদের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রক্ষা করা। তাদের সাথে সংযোগ স্থাপন করা। তাদের যেকোন সমস্যার সমাধান দেয়া। তাদের নিত্য-নতুন প্রশ্নের উত্তর দেয়া।
- ডিজিটাল চ্যানেল ব্যবহার করে এমনভাবে মার্কেটিং করা যাতে বিক্রি বৃদ্ধি পায়। পেইড অ্যাডস, ইমেইল ক্যাম্পেইন, প্রমোশনাল অফারের মাধ্যমে গ্রাহকদের পন্য ক্রয়ে উৎসাহিত করা।
- বেশি বেশি ট্রাফিক নিয়ে আসা। SEO, ব্লগিং, সোশ্যাল মিডিয়া শেয়ারিং, এবং পেইড অ্যাডস এর মাধ্যমে ওয়েবসাইটে বেশি বেশি ট্রাফিক নিয়ে আসার চেষ্টা করা। এতে পন্য বা সেবার দ্রুত বিক্রয় বাড়ে। ডিজিটাল মার্কেটিং এর মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে বিক্রয় বাড়ানো।
ডিজিটাল মার্কেটিং এর সুবিধা
কেনো সনাতন পদ্ধতির মার্কেটিং ছেড়ে ডিজিটাল মার্কেটিং করতে হবে ? ডিজিটাল মার্কেটিং করলে কি কি সুবিধা পাওয়া যাবে। এই ধরণের তথ্য জানতে চেয়ে আমরা প্রায় গুগলে অনুসন্ধান করে থাকি।
ডিজিটাল পদ্ধতিতে মার্কেটিং করলে বিপুল সংখ্যক কাষ্টমারদের নিকট পন্য বা সার্ভিসের ব্র্যান্ড ভ্যালু উপস্থাপন করা যায়। দেশের এক প্রান্ত থেকে অন্যে প্রান্তে মার্কেটিং করা যায়। ব্যবসার প্রচার, প্রসার দ্রুত বৃদ্ধি পায়।
বর্তমানে অনলাইন প্লাটফর্ম গুলো সাথে মানুষ ওতপ্রোতভাবে জড়িত। বর্তমানে অনলাইনে কেনা-কাটার / লেনদেনের হার দ্রুত বাড়ছে। মানুষ এখন ইন্টারনেট বা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে। তাই লক্ষ, কোটি মানুষের সামনে আপনার প্রোডাক্ট বা সার্ভিস উপস্থাপনের জন্য ডিজিটাল মার্কেটিং করতে হবে।
ইন্টারনেটের এ যুগে অনলাইনে প্লাটফর্মের মাধ্যমে ব্যবসার প্রচার, প্রসার দ্রুত বাড়ানো সম্ভব হচ্ছে। এখন মানুষ যেকোন পন্য কেনার আগে অনলাইনে সার্চ করে ঐ পন্য সম্পর্কে ডিটেইলস জেনে নিচ্ছে। এখন আপনি এই লক্ষ, কোটি মানুষকে টার্গেট যদি ডিজিটাল মার্কেটিং ক্যাম্পইন চালাতে পারেন তাহলে আপনার ব্যবসার প্রচার, প্রসার দ্রুত বাড়বে।
ব্যবসার জন্য অনলাইনে যার যত পরিচিতি তার ব্যবসা তত দ্রুত বাড়বে এটা স্বাভাবিক। অনলাইনে ব্যবসার সুনাম দ্রুত বাড়ে। অন্যদিকে প্রোডাক্ট বা সার্ভিস ভালো না হলে অনলাইনে ব্যবসার সুনাম দ্রুত নষ্ট হয়। নিদিৃষ্ট শ্রেণীর অডিয়েন্সদের টার্গেট করে ব্যবসার প্রচার চালালে দ্রুত বিক্রি বৃদ্ধি করা সম্ভব।
ডিজিটাল ক্যাম্পইনের মাধ্যমে আপনি গ্রাহকের মতামত নিতে পারেন। গ্রাহকের মতামত সংগ্রহ করে পন্যের গুণগণ মান আরও বাড়ানো সম্ভব হয়। এতে করে গ্রাহকদের সন্তুষ্টু অর্জন করা সহজ হয়।
ডিজিটাল মার্কেটিং এর অসুবিধা
- দীর্ঘ সময় ও প্রচেষ্টার প্রয়োজন
- অতিরিক্ত খরচ
- প্রযুক্তিগত দক্ষতার প্রয়োজন
- অতিরিক্ত প্রতিযোগিতা
- নিরাপত্তার ঝুঁকি
ডিজিটাল মার্কেটিং ক্যারিয়ার এবং এর ভবিষ্যৎ
সহজ ভাষায়, ইন্টারনেট যতদিন থাকবে ডিজিটাল মার্কেটিং ব্যবস্থা ততদিন থাকবে এটা প্রতিনিয়ত আপডেট হতে থাকবে। আগে মার্কেটিং করা হতো মাইকিং করে, বাসায় বাসায় গিয়ে এখন মার্কেটিং করা হচ্ছে ডিজিটাল পদ্ধতিতে। সার্চ ইঞ্জিন অপ্টিমাইজেশান (SEO), সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং, কনটেন্ট মার্কেটিং, ইনফ্লুয়েন্সার মার্কেটিং, অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং, ই-মেইল মার্কেটিং, ভিডিও মার্কেটিং এগুলো সবই ডিজিটাল মার্কেটিং এর অংশ।
আপনি যদি ডিজিটাল মার্কেটিং শিখে টাকা উপার্জন করতে চান তাহলে আপনাকে যেকোন একটি সেক্টরে দক্ষ হতে হবে। ডিজিটাল মার্কেটিং এর সব থেকে সহজ কাজ হলো কনটেন্ট মার্কেটিং। এখন আপনি যে পড়াটা পড়ছেন এটা কনটেন্ট মার্কেটিং এর কাজ। আপনি যে পেশার মানুষ হোন না কেন আপনাকে ডিজিটাল মার্কেটিং জানতে হবে। কেননা, ভবিষ্যৎতে এর পরিধি আরও বাড়বে।
কেন ডিজিটাল মার্কেটিং ফ্রিল্যান্সিং পেশা হিসেবে জনপ্রিয়
- কাজের স্বাধীনতা
- বিশ্বব্যাপী কাজ করা সুযোগ
- আকর্ষণীয় আয় করার সুযোগ
- বাজার পরিসর অনেক বড়
- ভবিষ্যৎতে টেকসই পেশা
একজন সফল ডিজিটাল মার্কেটার অনলাইন মার্কেট প্লেস যেমনঃ- Upwork, Fiverr, Freelancer.com, LinkedIn কাজ করতে পারে। হাজার হাজার ডলার ইনকাম করতে পারে।
ডিজিটাল মার্কেটিং কিভাবে শিখব
- প্রথমে আপনি গুগল, ফেসবুক, ইউটিউবে সার্চ করে মার্কেটিং সম্পর্কে বেসিক ধারণা নিন।
- ডিজিটাল মার্কেটিং কোর্স করায় ( ওয়েব-কোডার আইটি ) এমন প্রতিষ্ঠান থেকে একটি কোর্স করুন। এতে আপনি ডিজিটাল মার্কেটিং সম্পর্কে একটি বেসিক ধারণা পাবেন। যে যে প্র্যাকটিক্যাল টাস্ক গুলো দিবে সেগুলো বাস্তবে প্রয়োগ করতে হবে। শুধু থিওরির জ্ঞান দিয়ে সফল ডিজিটাল মার্কেটার হওয়া সম্ভব না।
- অথবা জনপ্রিয় অনলাইন কোর্স প্লাটফর্ম যেমনঃ- Coursera, Udemy, LinkedIn Learning কোর্স করা।
- ডিজিটাল মার্কেটিং শেখার জন্য সেরা বই হতে পারে যেমনঃ- Jab, Right Hook” বা “Digital Marketing for Dummies.
- ডিজিটাল মার্কেটিং বিষয়ক সেমিনারে অংশগ্রহণ করা। নিত্য-নতুন তথ্য কালেক্ট করা।
- যাদের মার্কেটিং নিয়ে কাজ করছে দীর্ঘদিন যাবৎ তাদের সাথে সংযোগ স্থাপন করা এবং ডিজিটাল মার্কেটিং এর খুঁটি-নাটি বিষয় সম্পর্কে জেনে নেওয়া।
- প্রতিনিয়ত ডিজিটাল মার্কেটিং এর সিস্টেম গুলো আপডেট হচ্ছে। আপডেট সিস্টেম গুলোর সাথে আপনাকে এডজাষ্ট হতে হবে। অর্থ্যাৎ সবসময় আপ-টু-ডেট থাকা।
সফল মার্কেটার হওয়ার টিপস
জানার আগ্রহঃ- নতুন নতুন তথ্য সার্চ করে বের করা, সে গুলো বাস্তবে প্রয়োগ করা। ডিজিটাল প্রযুক্তি প্রতিনিয়ত পরিবর্তনশীল। আপনাকে পরিবর্তনের সাথে মানিয়ে নিতে হবে।
প্রতিযোগিতাপূর্ণ মনোভাবঃ- এই সেক্টরে প্রতিযোগিতা অনেক বেশি। ভবিষ্যৎতে প্রতিযোগীদের সংখ্যা আরও বাড়বে। আপনি রাতারাতি সফল হতে পারবেন না। আপনাকে সফল হতে হলে কাজ শিখতে হবে, কাজের কৌশল জানতে হবে, ধৈর্য্য ধরে লেগে থাকতে হবে। তাহলে এই সেক্টর থেকে ভালো কিছু করতে পারবেন।
ইতিবাচক মনোভাবঃ- সফল হতে হলে আপনাকে ইতিবাচক মনোভাবের একজন মানুষ হতে হবে। এখানে আপনাকে প্রতিনিয়ত নিত্য-নতুন চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হতে হবে। ভূল, ব্যর্থতা, অভিজ্ঞতার সমন্বয়ে আপনি একজন সফল ডিজিটাল মার্কেটার হতে পারবেন। তবে কাজ নিয়মিত করতে হবে।
সৃজনশীলতাঃ- সৃজনশীলতার জন্য প্রয়োজন কল্পনা শক্তি ও গভীর চিন্তার। সৃজনশীল চর্চার মাধ্যমে আপনার কল্পনা-শক্তি তত বাড়বে, চিন্তার গভীরতাও তত বাড়বে আপনার জ্ঞান সমৃদ্ধ হবে। আপনি নিজের প্রতিভা ফুটিয়ে তুলতে পারবেন ডিজিটাল সেক্টরে। এক পর্যায়ে আপনি সফল হবেন।
যোগাযোগ দক্ষতাঃ- ডিজিটাল সেক্টরে দক্ষ হতে হলে আপনাকে যোগাযোগের দক্ষতা বাড়াতে হবে। একজন ডিজিটাল মার্কেটারকে ক্রেতা এবং বিক্রেতার মধ্যে সংযোগ স্থাপন করতে হবে। এই বৈশ্যিষ্ট্য একজন ডিজিটাল মার্কেটারের মধ্যে থাকা দরকার।
বিশ্লেষণ ক্ষমতাঃ- যখন কোন কাজের আপনি খুঁটি-নাটি সমস্ত বিষয়ে জ্ঞান রাখবেন তখনই আপনার সফল হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যাবে। বিশ্লেষণ ছাড়া খুঁটি-নাটি বিষয় সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করা সম্ভব নয়। খুঁটি-নাটি বিষয় সম্পর্কে জ্ঞান থাকলে অনেক বড় বড় সমস্যার সমাধান পাওয়া যায়। এতে আপনি আপনার প্রতিযোগীদের থেকে এক ধাপ এগিয়ে যেতে পারবেন।
ধৈর্য্যঃ- একজন সফল ডিজিটাল মার্কেটারের প্রধান গুণ হলো ধৈর্য্য। যাদেরা ধৈর্য্য শক্তি কম, যারা অল্পতেই হতাশ হয়ে যান এই সেক্টর থেকে তারা আশানুরুপ পারফর্মেন্স করতে পারবেন না। এজন্য পরিস্থিতি আপনার পক্ষে বা বিপক্ষে যেমনই হোক না কেন আপনাকে চরম লেভেলের ধৈর্য্যশীল হতে হবে।
লেখকের মন্তব্য
সম্মানিত পাঠকবৃন্দ এই পোস্টে আমরা ফ্রিল্যান্সিং ডিজিটাল মার্কেটিং সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। আশা করি পোস্টটি পড়ে আপনারা উপকৃত হয়েছেন। এই রকম ফ্রিল্যান্সিং রিলেটেড পোস্ট আমরা আমাদের সাইটে প্রতিনিয়ত পাবলিশ করে থাকি। আশা করি পোস্টটি পড়ে আপনারা উপকৃত হয়েছেন।
এই রকম তথ্য বহুল পোস্ট নিয়মিত পেতে আমাদের সাইটটি নিয়মিত ভিজিট করুন। আপনার সুস্থতা কামনা করে এখানে শেষ করছি। পরবর্তীতে আলোচনা হবে ভিন্ন কোন পোস্ট নিয়ে । সে পর্যন্ত ভালো থাকুন। আপনার সুস্থতা কামনা করে এখানেই শেষ করছি।
আপনি পদ্মা মেইলের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url