সোনালী ব্যাংক থেকে টাকা তোলার নিয়ম জেনে নিন

সোনালী ব্যাংক থেকে টাকা তোলার নিয়ম খুব সহজ। আপনি চাইলে খুব সহজে সোনালী ব্যাংক থেকে টাকা তুলতে পারেন। আপনি যদি সোনালী ব্যাংক থেকে টাকা তোলার নিয়ম না জানেন তাহলে পুরো পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়তে থাকুন। কেননা এই পোস্টে সোনালী ব্যাংক থেকে টাকা তোলার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।

সোনালী ব্যাংক থেকে টাকা তোলার নিয়ম জেনে নিন
এই পোস্টটি আপনি মনোযোগ সহকারে পড়লে সোনালী ব্যাংক থেকে টাকা তোলার নিয়ম জেনে যাবেন। আপনি যদি সোনালী ব্যাংক থেকে টাকা তোলার নিয়ম জানতে চান তাহলে পুরো পোস্ট জুড়ে আমাদের সাথেই থাকুন। চলুন তাহলে আর দেরি না করে আলোচনা শুরু করা যাক।

পোস্ট সূচিপত্রঃ সোনালী ব্যাংক থেকে টাকা তোলার নিয়ম

সোনালী ব্যাংক থেকে টাকা তোলার নিয়ম

আমাদের বিভিন্ন প্রয়োজনে ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলন করতে হয়। আপনার যদি সোনালী ব্যাংকে একটি একাউন্ট থাকে আর আপনি যদি টাকা তোলার নিয়ম না জানেন তাহলে আপনি টাকা উত্তোলনের সময় হয়রানির শিকার হবেন। তাই একজন গ্রাহক হিসেবে সোনালী ব্যাংক থেকে টাকা তোলার নিয়ম আপনাকে জানতে হবে। সোনালী ব্যাংক থেকে টাকা তোলার বিভিন্ন মাধ্যম রয়েছে। এই প্যারাটি যদি আপনি মনোযোগ সহকারে পড়েন তাহলে আপনি সোনালী ব্যাংক থেকে টাকা তোলার নিয়ম সম্পর্কে এইটি সুস্পষ্ট ধারণা পাবেন।

ফিঙ্গার প্রিন্টঃ আপনি সরাসরি ব্যাংকে গিয়ে ফিঙ্গার প্রিন্টের মাধ্যমে টাকা উত্তোলন করতে পারবেন। এইটা টাকা উত্তোলন করার খুব সহজ একটি পদ্ধতি। আপনি যদি ফিঙ্গার প্রিন্টের মাধ্যমে টাকা উত্তোলন করতে চান তাহলে সোনালী ব্যাংকের নিকটস্থ কার্যালয়ে গিয়ে ব্যাংক কর্মকর্তাদের জানালে তারা বলে ‍দিবে কিভাবে ফিঙ্গার প্রিন্টের মাধ্যমে টাকা উত্তোলন করবেন। আপনি সেই নিয়ম অনুসরণ করে খুব সহজে ফিঙ্গার প্রিন্টের মাধ্যমে টাকা উত্তোলন করতে পারবেন।

আরো পড়ুনঃ- বিদেশ থেকে টাকা আসতে কতদিন সময় লাগে জেনে নিন

চেক বইয়ের মাধ্যমে টাকা উত্তোলনঃ টাকা উত্তোলনের অনেক জনপ্রিয় একটি পদ্ধতি এইটা। অধিকাংশ গ্রাহক চেক বইয়ের মাধ্যমে টাকা উত্তোলন করে থাকে। আপনি যদি এই পদ্ধতির মাধ্যম টাকা উত্তোলন করতে চান তাহলে চেকের মধ্যে আপনাকে যাবতীয় তথ্য দেওয়া লাগবে। এর পর সোনালী ব্যাংকের কার্যালয়ে গিয়ে চেক জমা দিলে তারা আপনাকে টাকা প্রদান করবে। অধিকাংশ গ্রাহক এই পদ্ধতিতে টাকা উত্তোলন করে।

এটিএম কার্ডের মাধ্যমেঃ বর্তমান সময়ে টাকা উত্তোলনের একটি আধুনিক পদ্ধতি হলো এটিএম কার্ড। এটিএম কার্ডের মাধ্যমে টাকা উত্তোলন করা খুব সহজ। ব্যাংক গুলো বর্তমানে দেশের সকল পর্যায়ে এটিএম বুথ চালু করেছে। সোনালী ব্যাংক এর ব্যাতিক্রম নয়। আপনার নিকট ডেবিট কার্ড অথবা ক্রেডিট কার্ড থাকলে আপনি এটিএম বুথের মাধ্যমে টাকা উত্তোলন করতে পারবেন। এজন্য আপনাকে কিছু নিয়ম অনুসরন করতে হবে। সেগুলো হলোঃ

  • এটিএম বুথে আপনার কার্ডটি পঞ্চ করুন।
  • টাকা উত্তোলনের অপশন সিলেক্ট করুন।
  • আপনি কত টাকা উত্তোলন করতে চাচ্ছেন তা উত্তোলন অপশনে বসান।
  • এবার পিন নাম্বার প্রদান করুন।
  • এবার আপনার কার্ড এবং টাকা উভয় বেরিয়ে আসবে মেশিন থেকে।

ডেবিট কার্ড কিংবা ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করলে বিষয়টি ব্যাংক কর্তৃপক্ষকে জানাতে হবে। তারা আপনার ব্যাংকে একটি একাউন্ট তৈরি করে দিবে। এরপর তারা আপনাকে ডেবিট কিংবা ক্রেডিট কার্ড প্রদান করবে। আপনি সেই কার্ডের মাধ্যমে টাকা লেনদেন করতে পারবেন। ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করলে আপনাকে চার্জ ‍গুণতে হবে।

মোবাইল অ্যাপসঃ প্রত্যেকটি ব্যাংকের বর্তমানে মোবাইল ব্যাংকিং অ্যাপস রয়েছে। সোনালী ব্যাংক এর ব্যাতিক্রম নয়। সোনালী ব্যাংকের মোবাইল অ্যাপের নাম হলো “সোনালী ই সেবা”। এর মাধ্যমে আপনি যে কোন লেনদেন সম্পন্ন করতে পারবেন। সেগুলো হলোঃ ব্যালেন্স চেক, সেন্ড মানি, টাকা উত্তোলন করতে পারবেন। ধরুন, আপনার কাছে কোন কার্ড নাই, আপনার একাউন্টে থাকা অর্থ মোবাইল অ্যাপস এর মাধ্যমে আপনি এটিএম বুথ থেকে উত্তোলন করতে পারবেন।

চেক বই তোলার নিয়ম

ব্যাংক থেকে কিভাবে চেক বই তুলতে হয় তা আমরা অনেকেই জানি না। চেক বই তোলার নিয়ম খুবই সহজ। আপনি যদি এই প্যারাটি মনোযোগ সহকারে পড়েন তাহলে আপনি চেক বই তোলার নিয়ম খুব সহজে জানতে পারবেন। ধরুন, আপনার চেক বইয়ের পাতা শেষ হয়ে গিয়েছি এখন চেক বই তুলতে গেলে আপনাকে চেকের জন্য আবেদন করতে হবে। নতুন চেক বইয়ের জন্য কিভাবে আবেদন করবেন, নতুন চেক বই কিভাবে তুলতে হয় সেই বিষয়ে বিস্তারিত এই প্যারা থেকে আপনি জানতে পারবেন। চেক বেই তোলার বিভিন্ন মাধ্যম রয়েছে। চলুন তাহলে চেক বই তোলার নিয়ম গুলো জেনে নেওয়া যাক।

চেক রিকুইজিশন স্লিপঃ যদি চেক বইয়ের পাতা শেষ হয়ে যায় তাহলে চেক বইয়ের শেষের দিকে চেক রিকুইজিশন স্লিপ দেখতে পারবেন। এই চেক রিকুইজিশন স্লিপ সঠিক ভাবে পূরণ করে ব্যাংকে জমা দিলে ব্যাংক আপনাকে নতুন চেক বই দিয়ে দিবে। এজন্য আপনাকে আলাদা ভাবে ফরম পূরণ কিংবা দরখাস্ত করতে হবে না।

আরো পড়ুনঃ- স্টুডেন্ট ব্যাংক একাউন্ট খোলার নিয়ম জেনে নিন

ব্যাংকে গিয়ে ফরম পূরণঃ যদি আপনার চেক রিকুইজিশন স্লিপ হারিয়ে যায় বা কোন কারণে নষ্ট হয়ে যায় তাহলে চেক বই তোলার সময় ব্যাংক কর্মকর্তাদের তা অবহিত করুন। তারা আপনাকে ফরম দিবে সেই ফরম সঠিকভাবে পূরণ করে ব্যাংকে জমা দিন। তারা আপনার ফরম যাচাই বাছাই করে আপনাকে নতুন চেক বই প্রদান করবে।

অনলাইনের মাধ্যমে আবেদনঃ বর্তমানে অনেক ব্যাংকে ইন্টারনেট ব্যাংকিং সেবা রয়েছে। এক্ষেত্রে আপনি অনলাইনে মাধ্যমে চেক বইয়ের জন্য আবেদন করতে পারবেন। এক্ষেত্রে নতুন চেক বইয়ের আবেদন সেই অপশনে গিয়ে প্রয়োজনীয় তথ্য পূরণ করে চেক বইয়ের জন্য আবেদন করতে পারেন।যদিও অধিকাংশ ব্যাংক অনলাইনের মাধ্যমে নতুন চেক বই তোলার এই সিস্টেমটি চালু করে নি।

দরখাস্ত লিখে আবেদনঃ নতুন চেক বইয়ের জন্য দরখাস্ত ব্যাংকের ম্যানেজারের নিকট লিখতে হবে। দরখাস্ত সুন্দর ও সাবলীল ভাষায় লিখতে হবে। পড়ে যেন বুঝা যায় যে কি উদ্দেশ্যে দরখাস্তাটা লিখছে। দরখাস্ত লিখে ব্যাংকে জমা দিতে হবে। দরখাস্তে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় উল্লেখ করতে হবে সেগুলো হলোঃ একাউন্ট হোল্ডারের নাম, একাউন্ট নাম্বার, মোবাইল নাম্বার, ঠিকানা, তারিখ, স্বাক্ষর, আবেদনের বিষয়, ব্যাংকের শাখা ইত্যাদি। আশা করি আলোচনা থেকে চেক বই তোলার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পেরেছেন।

সোনালী ব্যাংক থেকে সঞ্চয়পত্র কেনার নিয়ম

আপনি সোনালী ব্যাংকের মাধ্যমে সঞ্চয় পত্র ক্রয় করতে পারবেন। বাংলাদেশে সকল ব্যাংক সঞ্চয়পত্র বিক্রি করে থাকে। আপনি ১০ হাজার টাকা দিয়ে সঞ্চয় পত্র ক্রয় করতে পারবেন। সঞ্চয় পত্র ক্রয় করলে আপনি ১১ শতাংশ মুনাফা পাবেন। সঞ্চয় পত্র ক্রয় করতে কিছু ডকুমেন্ট লাগবে। সেগুলো হলোঃ গ্রাহকের ২ কপি ছবি ও ১ কপি জাতীয় পরিচয় পত্র, নমিনির ১ কপি ছবি ও ১ কপি জতীয় পরিচয় পত্র, যে চেক বইয়ে সঞ্চয় পত্রে টাকার পরিমাণ লিখা থাকবে সেই চেক বইয়ের পাতা, গ্রাহকের TIN সার্টিফিকেট ইত্যাদি। 

আরো পড়ুনঃ- সোনালী ব্যাংক থেকে বিকাশে টাকা আনার নিয়ম জেনে নিন

সঞ্চয় পত্রে বিনিয়োগকৃত অর্থ যেকোন সময় নগদ টাকায় রুপান্তর করা যায়। সঞ্চয়পত্রে আপনি সর্বোচ্চ ৫০ লক্ষ টাকা এবং সর্বোনিম্ন ১০ হাজার টাকা বিনিয়োগ করতে পারবেন। ব্যাংকের মাধ্যমে সঞ্চয়পত্র ক্রয় করলে আপনাকে লাইনে দাড়িয় সঞ্চয় পত্রের অর্থ উত্তোলন করতে হবে না। নিদিৃষ্ট সময় অন্তর অন্তর সঞ্চয়পত্রের টাকা আপনার ব্যাংকের একাউন্টে যোগ হয়ে যাবে। আপনি চাইলে আপনার প্রয়োজন মতো সঞ্চয়পত্রের টাকা চেক বা ডেবিট কার্ডের মাধ্যমে তুলে নিতে পারেন।

সোনালী ব্যাংক সঞ্চয়পত্র ভাঙ্গানো

মানুষ মুনাফা অর্জনের উদ্দেশ্যে সঞ্চয় পত্রে টাকা বিনিয়োগ করে। জীবনে নানা প্রয়োজনে সেই বিনিয়োগকৃত অর্থ তার আবার দরকার হতে পারে। গ্রাহক চাইলে তার যেকোন প্রয়োজনে সোনালী ব্যাংক সঞ্চয়পত্র ভাঙ্গাতে পারে। সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগকৃত অর্থ যে কোন সময় নগদ টাকায় রুপান্তর করা যায়। আপনি যদি সঞ্চয়পত্র ভাঙ্গাতে চান তাহলে ব্যাংকে গিয়ে আবেদন করলে ঐ ‍দিন অথবা পরের দিন আপনার ব্যাংক একাউন্টে টাকা জমা হয়ে ‍যাবে। এজন্য আপনাকে ব্যাংক চার্জ গুনতে হবে। আশা করি আলোচনা থেকে সোনালী ব্যাংক সঞ্চয়পত্র ভাঙ্গানো বিষয়টি সম্পর্কে একটি স্পষ্ট ধারণা পেয়েছেন।

উপসংহার

প্রিয় পাঠক আশা করি পুরা পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়েছেন। আলোচনা থেকে আশা করি সোনালী ব্যাংক থেকে টাকা তোলার নিয়ম, চেক বই তোলার নিয়ম, সোনালী ব্যাংক থেকে সঞ্চয়পত্র কেনার নিয়ম, সোনালী ব্যাংক সঞ্চয়পত্র ভাঙ্গানো ইত্যাদি বিষয়ে বিস্তারিত জানতে পেরেছেন। 

আমরা প্রতিনিয়ত আমাদের সাইটে ব্যাংক সম্পর্কিত পোস্ট পাবলিশ করে থাকি।এতক্ষণ সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ। আপনার সুস্থতা কামনা করে এখানে শেষ করছি। আমাদের সাথেই থাকুন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

আপনি পদ্মা মেইলের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url