গর্ভাবস্থায় চিড়া খাওয়ার উপকারিতা - গর্ভাবস্থায় চিড়া খাওয়া যাবে কি

গর্ভাবস্থায় চিড়া খাওয়ার উপকারিতা - গর্ভাবস্থায় চিড়া খাওয়া যাবে কি সে বিষয়ে এই আর্টিকেলে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। আর্টিকেলটি পড়লে গর্ভাবস্থায় চিড়া খাওয়ার উপকারিতা - গর্ভাবস্থায় চিড়া খাওয়া যাবে কি সেই সম্পর্কে জানতে পারবেন।

গর্ভাবস্থায় চিড়া খাওয়ার উপকারিতা - গর্ভাবস্থায় চিড়া খাওয়া যাবে কি

গর্ভাবস্থায় চিড়া খাওয়ার উপকারিতা - গর্ভাবস্থায় চিড়া খাওয়া যাবে কি তা জানতে আর্টিকেলটি শেষ অবদি পড়ুন।

পোস্ট সূচিপত্রঃ- গর্ভাবস্থায় চিড়া খাওয়ার উপকারিতা

গর্ভাবস্থায় চিড়া খাওয়ার উপকারিতা

ভূমিকাঃ- গর্ভকালীন সময়ে একজন নারীর খাদ্য অভ্যাসের প্রতি যত্নশীল এবং সতর্ক থাকতে হয়। কেননা, একটি দেহের মধ্যে দিয়ে আরেকটি জীবন বেড়ে ওঠে। মা যা খায় গর্ভে থাকা বাচ্চা তাই খায়, ঐ খাবার খেয়ে বাচ্চা বেড়ে ওঠে। এজন্য পুষ্টিকর খাবারের কোন বিকল্প নেই। তাছাড়া, সারাদিনের ব্যস্ততার কারণে স্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণ করা অসম্ভব হয়ে পড়ে। এমন সময়ে চিড়া হতে পারে অন্যতম সমাধান। গর্ভাবস্থায় চিড়া খাওয়ার উপকারিতা বা গর্ভাবস্থায় চিড়া খেলে যে সকল উপকার মিলেঃ-

ক্লান্তি দূর এবং এনার্জির সঞ্চারঃ- গর্ভকালীন সময়ে নারীরা দুর্বলতায় ভোগে। একটুতে ক্লান্তি হয়ে যায়। বাড়িতে পুষ্টিকর খাবার সব সময় হাতের নাগালে থাকে না। এক্ষেত্রে উত্তম সমাধান হলো চিড়া। চিড়াতে রয়েছে কার্বোহাইড্রেট যা শরীরের শক্তি যোগায় এবং ক্লান্তি দূর করতে সাহায্য করে। সকালের দিকে যখন ক্লান্তি বেশি লাগে তখন এক বাটি চিড়া ভিজিয়ে খেলে তাৎক্ষণিক চমকপ্রদ ফল মেলে।

হজম শক্তি উন্নত করেঃ- গর্ভকালীন সময়ে কোষ্ঠকাঠিন্য একটি নিত্যদিনের সমস্যা। চিড়াতে রয়েছে উচ্চ পরিমাণে ফাইবার যা কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে। মলত্যাগে কোন সমস্যা হয় না। কেননা, চিড়া দ্রুত হজম হয় এবং পেটে কোন ধরনের অস্বস্তি তৈরি করে না। 

আরো পড়ুনঃ- গর্ভাবস্থায় কি কি কাজ করা নিষেধ - গর্ভাবস্থায় কিসমিস খাওয়ার উপকারিতা

রক্তস্বল্পতা দূরঃ- গর্ভকালীন সময়ে অনেক নারীরা রক্তশূন্যতায় ভোগে। চিড়াতে সামান্য পরিমাণে আয়রন রয়েছে যা রক্তশূন্যতা দূর করতে কার্যকর ভূমিকা রাখে। তাছাড়া আর রক্তশূন্যতা দূর করার জন্য দুধ, ডিম, মাংস, পালনশাক অর্থাৎ আয়রন জাতীয় খাবার গুলো খেতে হবে।  

বমি বমি ভাব দূরঃ- গর্ভকালীন সময়ে বমি বমি ভাব একটি সাধারণ সমস্যা। এই সমস্যার সমাধান হতে পারে চিড়া। চিড়া যেমন হালকা, তেমন দ্রুত হজম যোগ্য। অনেকক্ষণ পেটে থাকে। চিড়া খেলে বমি বমি ভাব থেকে কিছুটা মুক্তি মেলে। 

ওজন নিয়ন্ত্রণঃ- গর্ভকালীন সময়ে নারীদের অতিরিক্ত ওজন বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে না চিড়া খেলে। কেননা, চিড়াতে ক্যালোরির পরিমাণ খুবই কম। তাছাড়া চিড়াতে ফাইবারের উপস্থিতি থাকায় ঘনঘন ক্ষুধা  লাগে না। যার শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণে বিশেষ ভূমিকা রাখে। 

অন্যান্য পুষ্টি উপাদানঃ- কার্বোহাইড্রেট এর পাশাপাশি মিনারেল, ভিটামিন বি, প্রোটিন সামান্য পরিমাণে রয়েছে। অন্যান্য খাবারের সাথে চিড়া মিশিয়ে  যেমনঃ দুধের সাথে চিড়া খেলে পুষ্টিগুণ আরো বাড়ে। 

গর্ভকালীন সময়ে চিড়া যেভাবে খেতে পারেনঃ-

  • সরাসরি চিড়া খাওয়াঃ- যখন বমি বমি ভাব লাগবে তখন এক মুঠো শুকনো চিড়া নিয়ে চাবাতে থাকেন। এটা পেটের জন্য যেমন আরামদায়ক অনুরূপভাবে বমি বমি ভাব দূর করতে সাহায্য করে। 
  • দই-চিড়া-গুড়/চিনি মিক্সঃ- দয়ের সাথে চিড়া মিশিয়ে সঙ্গে চিনি অথবা গুড় একসাথে মিশিয়ে খেলে এটা স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী। একে স্বাস্থ্যকর নাস্তা বা রেসিপি বলাও চলে। এটা খেতে যেমন সুস্বাদু অন্যদিকে হজমযোগ্য।
  • দুধ-চিড়া-কলা মিক্সঃ- আপনার মুখে যদি রুচি না থাকে তাহলে দুধ, চিড়া, কলা একসঙ্গে মিক্স করে খান। এটা ক্যালসিয়ামের অন্যতম উৎস যা গর্ভবতী শিশুর হাড় বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। তাছাড়া এটি সুস্বাদু, মুখরোচক, পুষ্টিকর খাবারও বটে। 
  • চিড়ার পোলাওঃ- সবজি, চিড়া, মশলা দিয়ে তৈরি করে নিতে পারেন সুস্বাদু চিড়ার পোলাও। এখানে অন্যান্য সবজির উপস্থিতি থাকায় যা ভিটামিন, মিনারেল এর চাহিদা পূরণ করে। 

চিড়া খাওয়ার ব্যাপারে গর্ভকালীন সময়ে যেভাবে সতর্কতা অবলম্বন করা দরকারঃ-

  • শুধু চিড়া খাওয়ার উপর জোর না দিয়ে, অন্যান্য পুষ্টিকর খাবারগুলো ( দুধ, ডিম, মাছ, মাংস, মৌসুমি ফল, শাকসবজি ) ঠিকমতো খান।
  • যদি বাজার থেকে খোলা চিড়া কিনেন তাহলে খাওয়ার পূর্বে ভালো করে ধুয়ে নিবেন। 
  • গর্ভবতী নারী যদি ডায়াবেটিসের রোগী হয় তাহলে চিড়া খাওয়ার পূর্বে ডাক্তারের পরামর্শ নিবেন। কেননা, চিড়াতে বিদ্যমান কার্বোহাইড্রেট রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়িয়ে দিতে পারে।

গর্ভাবস্থায় চিড়া খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কিত প্রশ্নের উত্তরঃ-

১) গর্ভকালীন সময়ে প্রতিদিন চিড়া খাওয়া যায় ? 

উত্তরঃ- জ্বী, প্রতিদিন চিড়া খাওয়া সম্পূর্ণ নিরাপদ। 

২) চিড়া খেলে কি ডায়াবেটিস হয় ? 

উত্তরঃ- ডায়াবেটিসের ঝুঁকি রয়েছে। কেননা, এখানে যথেষ্ট পরিমাণে কার্বোহাইড্রেট রয়েছে। যা রক্তের শর্করার মাত্রা বৃদ্ধি করে। 

৩) চিড়া খেলে ওজন বাড়ে ? 

উত্তরঃ- না, কারণ ক্যালরির পরিমাণ খুবই কম। 

৪) গর্ভাবস্থায় চিড়া খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য হয় ? 

উত্তরঃ- না, এটা পেট নরম করে এবং খাবার দ্রুত হজম হয়। সুতরাং, কোষ্ঠকাঠিন্য হওয়ার সুযোগ নেই। 

৫) চিড়াতে কেমন পরিমাণ আয়রন থাকে ? 

উত্তরঃ- সামান্য পরিমাণে আয়রন থাকে। তাছাড়া আয়রনের চাহিদা পূরণের জন্য মাছ, মাংস, দুধ, ডিম, ডাল, ফল, শাকসবজি ইত্যাদি।

৬) কোন রঙের চিড়া সর্বোত্তম ? 

উত্তরঃ- লাল-বাদামী রঙের চিড়া। কারণ, সাদা চিড়ার চাইতে লাল-বাদামী রঙের চিড়াতে ফাইবারের পরিমাণ বেশি। 

গর্ভাবস্থায় চিড়া খাওয়া যাবে কি

গর্ভাবস্থায় চিড়া খাওয়া যাবে কি না তা জানতে অনেকে ইন্টারনেটে সার্চ করে। জ্বি, গর্ভাবস্থায় চিড়া খাওয়া যাবে। এটা সম্পূর্ণ নিরাপদ। গর্ভাবস্থায় চিরা খেলে কি কি উপকার মিলে ইতিপূর্বে আমরা জেনেছি। গর্ভকালীন সময়ে একজন নারী বিভিন্ন ধরনের সমস্যার মুখোমুখি হয় যেমনঃ- রক্তশূন্যতা, বমি বমি ভাব, কোষ্ঠকাঠিন্য, অস্বাভাবিক ওজন, হজম শক্তি হ্রাস পাওয়া ইত্যাদি। এ ধরনের সমস্যার রয়েছে চিড়ার মধ্যে। যা ইতিপূর্বে আমরা আলোচনা করেছি। 

আরো পড়ুনঃ- আনারস খেলে কি এলার্জি হয় - গর্ভাবস্থায় আনারস খেলে কি হয়

মুখরোচক, অস্বাস্থ্যকর খাবার যেমনঃ- বার্গার, পিজ্জা, স্যান্ডউইচ এগুলো খাওয়ার চাইতে চিড়া খাওয়া অনেক ভালো। এটা স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারী। এজন্য গর্ভকালীন সময়ে খাবারের ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে। মা ও শিশুর জন্য নিরাপদ এমন খাবার নির্বাচন করতে হবে। এ সময় মা খাবার খেয়ে যে সকল উপকার পাবে, গর্ভের শিশুও একই উপকার পাবে। এজন্য গর্ভবতী মা এবং গর্ভস্থ শিশুর যাতে পুষ্টিগুণ নিশ্চিত হয় এজন্য সপ্তাহে ৩/৪ দিন চিড়া খাদ্য তালিকায় রাখুন। 

গর্ভাবস্থায় চিড়া খেলে কি বাচ্চার ওজন বাড়ে

গর্ভাবস্থায় চিড়া খেলে কি বাচ্চার ওজন বাড়ে অনেকে এই ধরনের প্রশ্ন করে থাকে। উত্তরঃ- যেহেতু চিড়াতে ক্যালরির পরিমাণ খুবই কম, সুতরাং চিরা খেলো গর্ভস্থ শিশুর ওজন বাড়ে না। তবে মা এবং গর্ভস্থ শিশুর অস্বাভাবিক ওজন নিয়ন্ত্রণ করতে চিড়া খেতে পারেন। 

আরো পড়ুনঃ- আলুবোখারা উপকারিতা - আলুবোখারা খাওয়ার নিয়ম - আলুবোখারা দাম কত জানুন

আপনি যদি আপনার গর্ভস্থ শিশুর ওজন বাড়াতে চান তাহলে দুধ, ডিম, বাদাম, মটরশুটি, কিসমিস, খেজুর, আম, জাম, আঙ্গুর, আপেল, কলা, দই পনির, কলিজা  শাক  রুটি, মাছ, মাংস, ব্রাউন, চাল, ওটমিল, আখরোট, চিয়াবীজ, তৈলাক্ত মাছ ইত্যাদি খান। সঙ্গে প্রচুর পানি পান করুন।

গর্ভাবস্থায় টক খাওয়া যাবে কি

গর্ভাবস্থায় টক খাওয়া যাবে কি ?  এমন অনেক প্রশ্ন রয়েছে। গর্ভকালীন সময়ে একজন নারীর খাবারের অভ্যাসে ব্যাপক পরিবর্তন আসে। মূলত এটা হরমোন জনিত কারণে হয়ে থাকে। তবে সব ধরনের খাবার গর্ভকালীন সময়ে একজন নারীর জন্য উপযুক্ত নয়। টক জাতীয় খাবার গর্ভকালীন সময়ে একজন নারী সামান্য পরিমাণে খেতে পারে। তবে অতিরিক্ত ঘন ঘন টক জাতীয় খাবার খেলে নিম্নোক্ত বিভিন্ন ধরনের সমস্যা হতে পারেঃ- 

আরো পড়ুনঃ- বরই এর অপকারিতা - গর্ভাবস্থায় বরই খাওয়ার উপকারিতা

  • হজমে সমস্যা হওয়া 
  • গ্যাস্ট্রিকের কারণে পেট ফুলে যাওয়া 
  • পুষ্টির ঘাটতি হওয়া ( টক জাতীয় খাবারে পুষ্টির পরিমাণ কম থাকে ) 
  • মুখের রুচি নষ্ট হয়ে যাওয়া 
  • পেট খারাপ হওয়া, ডায়রিয়া, বমি বমি ভাব লেগে থাকা 
  • রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে গিয়ে দাঁতের ক্ষয় হওয়া 

তাই এ ধরনের সমস্যা থেকে রেহাই পেতে গর্ভাবস্থায় টক জাতীয় খাবার পরিহার করা উত্তম। যদি খেতেই হয় তবে সামান্য পরিমাণে খাবেন, তবে প্রতিদিন নয়। এবং সর্বদা ডাক্তারের পরামর্শ মেনে চলবেন, গর্ভকালীন সময়ে টক জাতীয় খাবার আপনার জন্য উপযুক্ত কিনা তা ডাক্তারের কাছ থেকে জেনে নিবেন। 

গর্ভাবস্থায় ইসবগুলের ভুসি খাওয়া যাবে কি

গর্ভাবস্থায় ইসবগুলের ভুসি খাওয়া যাবে কি ?  এ নিয়ে অনেকে দুশ্চিন্তায় থাকে। উত্তরঃ- জ্বি, গর্ভাবস্থায় ইসবগুলের ভুসি খাওয়া যাবে। এটা সম্পূর্ণ নিরাপদ। ইসবগুলের ভুসি গর্ভবতী মা এবং গর্ভস্থ শিশু উভয়ের জন্য উপকারী।  অনেক সময় গর্ভবতী মেয়েরা পেটের নানান সমস্যায় ভুগে। এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য ইসবগুলের ভুসি অন্যতম সমাধান। রাতে ঘুমানোর আগে ইসুবগুলের ভুষি খেলে দ্রুত ফল পাওয়া যায়। গর্ভাবস্থায় ইসবগুলের ভুসির উপকারিতাঃ-

কোষ্ঠকাঠিন্য দূরঃ- গর্ভকালীন সময়ে নারীদের কোষ্ঠকাঠিন্য সাধারণ একটি সমস্যা। ইসবগুলের ভুষি খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়। কেননা, ইসবগুলের ভুষি হজমশক্তি বৃদ্ধি করে এবং পেট নরম করে এবং পেটের যেকোনো সমস্যা দ্রুত সমাধান করে। 

গর্ভস্থ শিশুর বৃদ্ধি এবং বিকাশঃ- গর্ভকালীন সময়ে ইসুবগুলের ভুষি খেলে গর্ভস্থ শিশুর সঠিক বৃদ্ধি এবং বিকাশ নিশ্চিত হয়। অনেক সময় দেখা যায় শিশু বিকলাঙ্গ হয়ে জন্ম নিচ্ছে, এ ধরনের সমস্যা রোধে পুষ্টিকর খাবার গুরুত্বপূর্ণ। পাশাপাশি একজন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের শরণাপন্ন হওয়া দরকার। 

আরো পড়ুনঃ- বেশি আঙ্গুর খেলে কি হয় - রাতে আঙ্গুর খেলে কি হয়

কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায়ঃ- ইসুবগুলের ভুষি রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায় যা যেকোনো সময় হার্ট অ্যাটাক থেকে রক্ষা করে। গর্ভকালীন সময়ে মহিলারা ইসুবগুলের ভুষি খেলে গর্ভস্থ শিশুর হার্ট সুস্থ থাকবে। সুতরাং, গর্ভবতী নারীরা হার্টের যেকোনো সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে এবং শিশুকে মুক্ত রাখতে ইসুবগুলের ভুষি খান। 

গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দূরঃ- তেলে ভাজা খাবার, মসলা জাতীয় খাবার, অনিয়ন্ত্রিত খাদ্যা অভ্যাসের কারণে ঘন ঘন গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা হয়। গর্ভবতী নারীরা হর হামেশা গ্যাস্ট্রিকের সমস্যার মুখোমুখি হয়। ইসবগুলের ভুষি খেলে হজম শক্তি বাড়বে এবং গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা নিবারণ হবে। 

প্রস্রাবের জ্বালাপোড়া দূরঃ- অনেক মহিলাদের এ সময় প্রস্রাবের জ্বালাপোড়া হয়। এবং নানান রকম জটিলতার সৃষ্টি হয়। ইসবগুলের ভুসি খেলে এ প্রস্রাবে জ্বালাপোড়া দূর হয়। শুধু গর্ভবতী মহিলা নয় যারা প্রস্রাবে জ্বালা পরে ভুগছেন তারা ইসুবগুলের ভুষি খান। এটা খুবই উপকারী।  

গর্ভাবস্থায় কি কি সবজি খাওয়া যাবে না

গর্ভাবস্থায় কি কি সবজি খাওয়া যাবে না ?  তা একজন গর্ভবতী নারীর জানার প্রয়োজন। প্রেগন্যান্সি একজন নারীর জীবনে বিশেষ মুহূর্ত বা সেরা সময়। নতুন সন্তানের মুখ দেখার জন্য একজন নারী দীর্ঘ ১০ মাস সংগ্রাম করে। এই সময়ে একটু ভুল হলে বড় ধরনের অপ্রত্যাশিত ঘটনা ঘটে যাওয়া আশঙ্কা রয়েছে। গর্ভকালীন সময়ে একজন নারীকে খাবারের ব্যাপারে সতর্কতা অবলম্বন করা দরকার। যে সকল সবজি একজন গর্ভবতী নারীর খাওয়া মোটেও উচিত নয় তার তালিকা নিম্নের তুলে ধরা হলোঃ- 

  • কাচাঁপেপে
  • অ্যালোভেরা
  • কাঁচা মূলা
  • বেগুন
  • সজিনা
  • করলা
  • অঙ্কুরিত বীজ, খাদ্যশস্য ও শিম

গর্ভাবস্থায় তোকমা দানা খাওয়া যাবে কি

গর্ভাবস্থায় তোকমা দানা খাওয়া যাবে কি না ?  অনেকে জানতে চায়। তোকমা দানা তে উপকারি দিক থাকলেও, অপকারী দিক রয়েছে। তোকমা দানা তে যে সকল উপকারিতা রয়েছে একজন গর্ভবতী নারী ওই সমস্ত উপকারিতা পেতে পারে যেমনঃ- রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ, হজম শক্তি উন্নত করে, গ্রীষ্মকালে শরীর ঠান্ডা রাখে, ইমিউনিটি সিস্টেম শক্তিশালী করে, এসিডিটি দূর করে ইত্যাদি।

কিন্তু তোকমা দানা তে কিছু অপকারী দিক রয়েছে যেমনঃ- উচ্চ পরিমাণে ফাইবার। অনেক গর্ভবতী নারী উচ্চ পরিমাণে ফাইবার যুক্ত খাবারের সাথে খাপ খাইয়ে নিতে পারে না। তো এটা স্বাস্থ্যের উন্নতি তো দূরে থাক, উল্টো স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। এজন্য তোকমা দানা খাওয়ার আগে একজন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নিবেন। সব থেকে ভালো হয় গর্ভকালীন সময়ে তোকমা দানা এড়িয়ে চলা। 

গর্ভাবস্থায় কি কি মাছ খাওয়া যাবে না

গর্ভকালীন সময়ে একজন নারীকে খাবারের বেলায় সতর্ক থাকা দরকার। একটু ভুল হলে গর্ভপাত হওয়ার ঝুঁকি থাকে। এ কারণে মাছ খাওয়ার আগে অনেক গর্ভবতী নারী সন্দেহের মধ্যে থাকে।  গর্ভাবস্থায় কি কি মাছ খাওয়া যাবে না ?  এমন অনেক ধরনের প্রশ্ন থাকে যেগুলো যৌক্তিক। মাছের মধ্যে যে খনিজ, ভিটামিন, প্রোটিন, মিনারেলস, আয়রন ইত্যাদি রয়েছে যা নিঃসন্দেহে একজন গর্ভবতী নারীর জন্য ভীষণ উপকারী। 

আরো পড়ুনঃ- আমড়া খাওয়ার ১৯টি উপকারিতা ও অপকারিতা জেনে নিন

তবে সব ধরনের মাছ গর্ভবতী নারীদের জন্য উপযুক্ত নয়। তার মধ্যে অন্যতম হলো সামুদ্রিক মাছ। সামুদ্রিক মাছে প্রচুর পারদ রয়েছে যা খেলে গর্ভপাত হওয়ার ঝুঁকি থাকে। গর্ভকালীন সময়ে যে সকল মাছ খাওয়া বন্ধ করা দরকার তা হলোঃ- টুনা মাছ, পাঁকাল মাছ, ম্যাকেরেল মাছ, ইমপোর্ট করা মাগুর মাছ ইত্যাদি। তাছাড়া একজন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের কাছ থেকে কোন কোন মাছ খাওয়া উচিত নয় গর্ভকালীন সময়ে তা জেনে নিবেন। 

গর্ভাবস্থায় চিয়া সিড খাওয়া যাবে কি

জ্বি, গর্ভাবস্থায় চিয়া সিড খাওয়া যাবে। গর্ভাবস্থায় চিয়া সিড খাওয়া যাবে কি ?  এ নিয়ে অনেকের সংশয় থাকে। সংশয়ের কোন কারণ নেই। নিঃসন্দেহে গর্ভাবস্থায় চিয়া সিড খাওয়া যায়। চিয়া সিডে রয়েছে একাধিক স্বাস্থ্য উপকারিতা। আপনি যদি গর্ভাবস্থায় চিয়া সিড খান তাহলে ওই সকল স্বাস্থ্য উপকারিতা ভোগ করতে পারবেনঃ- 

  • রক্তস্বল্পতা দূর করে
  • হজম শক্তি উন্নত করে
  • কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে
  • শিশুর হাড় ও দাঁত মজবুত করে 
  • রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে 
  • চোখের দৃষ্টিশক্তি এবং মাথার ব্রেইনকে ত্বরান্বিত করে
  • ডায়াবেটিস রোধ করে 
  • দৈনন্দিন কাজকর্মে শক্তি যোগায় 

তবে অতিরিক্ত চিয়া সিড খাওয়া যাবে না। অতিরিক্ত চিয়া সিড খেলে বদহজম, ডায়রিয়া, এলার্জি ইত্যাদি এ ধরনের সমস্যা হতে পারে। শুকনো চিয়া সিড খাওয়ার পরিবর্তে ভিজানো চিয়া সিড খান।

গর্ভাবস্থায় চিংড়ি মাছ খাওয়া যাবে কি

গর্ভাবস্থায় নারীরা কোন মাছ খাবেন আর কোন মাছ খাবেন না এ নিয়ে সংশয়ের মধ্যে থাকেন। তেমনি একটি প্রশ্ন হল গর্ভাবস্থায় চিংড়ি মাছ খাওয়া যাবে কি ? কেননা, অপ্রত্যাশিত যেকোনো ধরনের ঝুঁকি এড়াতে খাদ্য অভ্যাস, চলাফেরার ধরন, জীবনযাত্রা মান ইত্যাদি সকল কিছুতে নিয়ন্ত্রণ আনতে হয়। 

অনেক চিকিৎসক গর্ভাবস্থায় সামুদ্রিক মাছ ( চিংড়ি )  খেতে নিষেধ করে। গর্ভবতী মায়ের এলার্জির সমস্যা অথবা শারীরিক জটিলতা না থাকলে চিংড়ি খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকি। এমন তো অবস্থায় চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়াটা সর্বোত্তম।  আধুনিক চিকিৎসা এবং আয়ুর্বেদ শাস্ত্রের মত হলঃ- মানুষের শরীরের অঙ্গ প্রতঙ্গের সাথে মিল রয়েছে এমন সকল ফল  বা যেকোনো ধরনের খাবার উপকারী। চিংড়ি দেখতে যেহেতু ভ্রুণের মতো তাই এটি গর্ভবতী নারীদের খাওয়া দরকার। 

তাছাড়া চিংড়ি মাছে খনিজ, আয়রন, ম্যাগনেসিয়াম, পটাশিয়াম, প্রোটিন, ভিটামিন বি, ভিটামিন ডি ইত্যাদি সহ প্রয়োজনীয় পুষ্টিগুণ থাকায় যা গর্ভবতী নারী এবং গর্ভস্থ শিশুর দেহের বৃদ্ধি এবং সঠিক বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। সুতরাং, চিংড়ি মাছ থেকে একজন গর্ভবতী নারী এই সমস্ত উপকার পেতে পারে। তাছাড়া যদি আপনার সন্দেহ থাকে তাহলে ডাক্তারের পরামর্শ নিন।

লেখকের মন্তব্য

সম্মানিত পাঠকবৃন্দ আশা করি এই আর্টিকেল থেকে একজন গর্ভবতী নারী কি কি খেতে পারে এবং কোন কোন খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকবে ইত্যাদি সম্পর্কে সঠিক ধারণা পেয়েছেন। 

এই আর্টিকেলে আমরা গর্ভাবস্থায় চিড়া খাওয়ার উপকারিতা - গর্ভাবস্থায় চিড়া খাওয়া যাবে কি সে বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। আশা করি পোস্টটি পড়ে আপনারা স্পষ্ট ধারণা পেয়েছেন।

এতক্ষণ ধৈর্য ধরে পোস্টে উপভোগ করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। পরবর্তীতে আলোচনা করব ভিন্ন কোন আর্টিকেল নিয়ে। সে পর্যন্ত ভালো থাকুন, ধন্যবাদ। 13.10.25

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

আপনি পদ্মা মেইলের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url