শব্দ দূষণের ১০টি কারণ - শব্দ দূষণ প্রতিরোধের ১০টি উপায়
শব্দ দূষণের ১০টি কারণ - শব্দ দূষণ প্রতিরোধের ১০টি উপায় জানতে আর্টিকেলটি পড়ুন। এই আর্টিকেল থেকে আপনি শব্দ দূষণের ১০টি কারণ - শব্দ দূষণ প্রতিরোধের ১০টি উপায় জানতে পারবেন।
পোস্টসূচীপত্রঃ-সুতারাং,আপনারা যারা শব্দ দূষণের ১০টি কারণ - শব্দ দূষণ প্রতিরোধের ১০টি উপায় জানতে গুগলে সার্চ করেছেন, তারা সঠিক ওয়েবসাইটে এসেছেন।
শব্দ দূষণের ১০টি কারণ
সুস্থভাবে বেঁচে থাকার জন্য পরিবেশের গুরুত্ব অপরিসীম। এই পরিবেশ নানান ভাবে দূষিত হয়। তার মধ্যে অন্যতম হলো শব্দ দূষণ। শব্দ দূষণের কারণে মানুষের দৈনন্দিন জীবনের বিকাশ চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সুন্দরভাবে বেড়ে ওঠার জন্য প্রয়োজন এত সুন্দর নির্মল পরিবেশ। যে পরিবেশ নির্ধারণ করবে আগামী প্রজন্মের ভবিষ্যৎ। তাছাড়া, অতিরিক্ত শব্দ দূষণের কারণে মানুষ শারীরিক এবং মানসিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ইহা, সুস্থ স্বাভাবিক জীবন যাপনকে বাধাগ্রস্থ করে। আজকের এই আর্টিকেলে আমি শব্দ দূষণের ১০টি কারণ তুলে ধরেছি। তার মধ্যে অন্যতম হলোঃ-
যুদ্ধের সরঞ্জামঃ- যুদ্ধের সময় যখন সাউন্ড গ্রানেড, বোমা, মিসাইল, গোলা-বারুদ ছোড়া হয় তখন এগুলোর কারণে ভীষণ মাত্রায় শব্দ দূষণ হয়ে থাকে। ভবিষ্যৎ পৃথিবীতে যুদ্ধের সংখ্যা আরও বাড়বে। তখন ব্যাপকভাবে শব্দ দূষণ হবে এটা নিশ্চিত।
সামাজিক প্রোগ্রামঃ- যখন বিয়ে-শাদী, বার্থ ডে তে উচ্চ স্বরে মিউজিক বাজানো হয় আর এই মিউজিকের কারণে ব্যাপক শব্দ দূষিত হয়।
ইমারত নির্মাণঃ- প্রতিনিয়ত বড় বড় দালান - কৌঠা নির্মাণের প্রয়োজন পড়ছে। আর এই বড় বড় ভবনকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে শিল্পনগরী। বড় বড় ভবন নির্মাণের সময় ইট ভাঙ্গার মেশিনের শব্দ, মেশিন দিয়ে তৈরিকৃত যেকোনো সামগ্রী নির্মাণের সময় যে বিকট শব্দ হয় এই বিপদ শব্দের কারণে শব্দ দূষণ হয়ে থাকে।
অযাচিত সমাবেশঃ- মাইকে রাজনৈতিক বক্তব্য, মিছিল, অযাচিত চিৎকার, চেঁচামেচি, হট্টগোল ইত্যাদি কারণে শব্দ দূষিত হয়ে থাকে।
বাদ্যযন্ত্র এবং উচ্চস্বরে মিউজিকঃ- বিভিন্ন সামাজিক আয়োজন যেমনঃ- প্রোগ্রাম, বিয়ে-শাদী তে উচ্চস্বরে বক্স বাজানোর কারণে ব্যাপকভাবে শব্দ দূষণ হয়ে থাকে। আর এই কারণে শারীরিকভাবে অসুস্থ এমন ব্যক্তিরা ক্ষতিগ্রস্ত হয় বেশি। তাছাড়া বিকট শব্দে মানুষের কানের পর্দা ফেটে যায়। মানুষ বধির হয়ে যায়।
ইঞ্জিন চালিত যানবাহনঃ- যেকোনো ইঞ্জিন চালিত যানবাহন ( বাস, ট্রাক, স্টিমার, লঞ্চ, জাহাজ ) ইত্যাদির কারণে শব্দ দূষণ হয়ে থাকে। কেননা, এগুলো অতিরিক্ত মাত্রায় হর্ণ বাজানোর কারণে শব্দ দূষণ হয়ে থাকে। তাছাড়া, সাধারণ বিমান, হেলিকপ্টার, যুদ্ধ জাহাজের অতিরিক্ত শব্দের কারণে শব্দ দূষণ হয়ে থাকে।
ভূমিকম্পঃ- প্রাকৃতিক দুর্যোগ ভূমিকম্পের কারণে যখন ব্যাপক কম্পন হয় তখন এই কম্পন থেকে শব্দ দূষিত হয়। আর এই কম্পনের কারণে ব্যাপক ক্ষয় ক্ষতি হয়।
বজ্রপাতের বিকট শব্দঃ- যখন বর্ষাকালে প্রচন্ড বৃষ্টি হয়, তখন বজ্রপাতের কারণে বিকট শব্দ তৈরি হয়। এই বিকট শব্দে অনেকের কানের পর্দা ফেটে যায়। এটা প্রাকৃতিক কারণে হয়ে থাকে। যা মানুষের নিয়ন্ত্রাধীন নয়। শব্দ দূষণের জন্য এই প্রাকৃতিক কারণকেও দায়ী করা হয়।
প্রাণীর আওয়াজঃ- বাঘ, সিংহ, কুকুর, পাখির রা যখন আওয়াজ তোলে বা যখন গর্জন তোলে তখন এই প্রাণীর আওয়াজের কারণে শব্দ দূষণ হয়ে থাকে। তবে এটার পার্সেন্টেজ খুবই কম।
শিল্প - কারখানাঃ- প্রতিনিয়ত ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা দিনে দিনে বাড়ছে। সেই সাথে সম্প্রসারিত হচ্ছে শিল্প কারখানার সংখ্যা। শিল্প কারখানায় পণ্য উৎপাদন হয় যন্ত্র বা মেশিনের সাহায্যে। আর এই উচ্চগতির শব্দ সম্পূর্ণ মেশিনের কারণে শব্দ দূষণ হয়ে থাকে। বাংলাদেশের শব্দ দূষণের জন্য দায়ী অন্যতম কয়েকটি কল-কারখানা হলোঃ- ইট ভাটা, ছাপাখানা, বিভিন্ন দোন যন্ত্রপাতি তৈরীর কারখানাগুলো থেকে অতিরিক্ত মাত্রায় শব্দ দূষণ হয়ে থাকে। আর একটি দেশের শিল্প কারখানা ছাড়া দেশ কতটা অচল তা আমাদের সকলেরই জানা। সুতরাং, দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে শিল্প কারখানার গুরুত্ব এবং ভূমিকা অপরিসীম।
শব্দ দূষণ প্রতিরোধের ১০টি উপায় - শব্দ দূষণ প্রতিরোধের উপায়
শব্দ দূষণের অনেক গুলো যৌক্তিক কারণ আমরা এই আর্টিকেলে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। শব্দ দূষণ সরাসরি প্রতিরোধ করা সম্ভব না। এজন্য শব্দ দূষণ থামানোর জন্য আমরা কিছু পদক্ষেপ নিতে পারি। যে পদক্ষেপ গুলো যথাযথভাবে অনুসরণ শব্দ দূষণ আংশিক মাত্রায় কমানো যেতে পারে। অনেকে ইন্টারনেটে সার্চ করে শব্দ দূষণ প্রতিরোধের ১০টি উপায় জানতে চেয়েছেন। তাদের জন্য আর্টিকেলটি গুরুত্বপূর্ণ।
গাছ লাগানোর অভ্যাস করা, প্রত্যেক স্কুল শিশুর হাতে ১/২ টি করে গাছ তুলে দেওয়া, যাতে করে তারা তা লাগাতে পারে। যখন শিশু বড় হবে, ধীরে ধীরে গাছও বড় হবে। গাছ লাগানোর কারণে শব্দ তরঙ্গ কমানো যায়।
যদি আপনার বাড়ি রাস্তা সংলগ্ন হয়ে থাকে, তাহলে জানালা বন্ধ রাখুন। অথবা ডবল-পেন উইন্ডো লাগালে উপকার পাওয়া যাবে।
উচ্চস্বরে মাইকের ব্যবহার কমাতে হবে যেমনঃ- বিয়ে - শাদী, জন্মদিনে, এলাকায় উচ্চস্বরে মাইকে গান-বাজনা, রাজনৈতিক আলোচনা ইত্যাদি ক্ষেত্রে মাইকের ব্যবহার সীমিত করতে হবে।
শব্দ দূষণ নিয়ন্ত্রণের জন্য আইনের সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে যেমনঃ- পরিবহন সেক্টর গুলোতে শব্দ দূষণের বিষয়টি তে আইনের হস্তক্ষেপ প্রয়োজন। আইন প্রয়োগের মাধ্যমে কিছুটা হলেও জনজীবনে উপকার মিলবে।
যে সকল এলাকায় প্রচুর শব্দ হয়, ঐ সকল এলাকায় যদি আপনি চলা-ফেরা করেন তাহলে ইয়ার-প্লাগ ব্যবহার করুন। এতে আপনার কানের পর্দা সুরক্ষিত থাকবে।
সাউন্ডপ্রুফিং উপকরণের ব্যবহার। যে সকল শিল্প-কারখানায় উৎপাদন শিল্পে প্রচুর পরিমাণে শব্দ তৈরি হয় সেখানে সাউন্ডপ্রুফিং উপকরণের ব্যবহার করাটা সর্বোত্তম। এতে করে শব্দ প্রতিরোধ করা যায়।
শব্দ প্রতিরোধী হেড-ফোনের ব্যবহার। বাংলাদেশের শিল্প-কারখানা গুলোতে প্রচুর শ্রমিক কাজ করে। আর কারখানা এবং নির্মাণ স্থাপত্য জায়গা থেকে কি পরিমাণ অস্বস্তিকর শব্দ তৈরি হয় তা আমরা সকলে কম-বেশি জানি। তাই শ্রমিকদের স্বাস্থ্য সুরক্ষার নিশ্চিত করার জন্য কর্তৃপক্ষ শব্দ প্রতিরোধী হেড-ফোন ব্যবহার করতে পারে।
অহেতুক কারণে অনেকে উচ্চস্বরে বাড়িতে রেডিও, টেলিভিশন চালায় এতে করে শব্দ দূষণ হয়। বাড়ির পাশে কোন অসুস্থ রোগী থাকলে তা তার জন্য ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
সাধারণ যানবাহনের কারণে অতিরিক্ত শব্দ গুলো ক্রিয়েট হয়। যে সকল যানবাহনে ব্যাটারি ব্যবহার করা যাবে, ঐ সকল যানবাহনে ব্যাটারি ব্যবহার করা দরকার।
রাস্তাঘাটে অতিরিক্ত হর্ণ বাজানোর কারণে ব্যাপকভাবে শব্দ দূষিত হয়ে থাকে। এজন্য ট্রাফিক পুলিশদের কে এই ব্যাপারে বিশেষ ভূমিকা পালন করতে হয়। সর্বোপরি, শব্দ দূষণ নিয়ন্ত্রণে সরকারের সরাসরি হস্তক্ষেপ প্রয়োজন।
শব্দ দূষণ কি - শব্দ দূষণ কাকে বলে
শব্দ ছাড়া মানুষ চলতে পারবে না। শব্দের মাধ্যমে আমরা একে অপরকে আহবান করে থাকি। সহজ ভাষায়, যতটুকু শব্দ মানুষের সহ্য সীমা অতিক্রম করে আমরা অতটুকু শব্দকে শব্দ দূষণ নামে আখ্যায়িত করে থাকি। সহ্য সীমার বাহিরে শব্দ মানুষের দেহে এবং মনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। মানুষের পঞ্চম ইন্দ্রিয়ের একটি হলো কান। আপনার কান কতটুকু শব্দ রিসিভ করতে পারবে তার একটি লিমিট আছে। আপনার কানে যে শব্দ যায় তা আপনার মস্তিষ্কে সিগন্যাল দেয়। এর পর মস্তিষ্ক নির্দেশ দেয় আপনাকে পরবর্তীতে কোন কাজটি করতে হবে। অতিরিক্ত শব্দের কারণে মানুষের স্বাভাবিক জীবন যাপন ক্ষতিগ্রস্থ হয়।
শব্দ দূষণের প্রতিকার
শব্দ দূষণ প্রতিকারের বেশ কত গুলো উপায় রয়েছে। যে উপায় গুলো অনুসরণের মাধ্যমে শব্দ দূষণ নিয়ন্ত্রণে আনা যায়। শব্দ দূষণের কারণে মানুষের দেহ এবং মনের উপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। একটি সুস্থ, স্বাভাবিক, সুন্দর জীবন গড়তে শব্দ দূষণের প্রতিকার আনা দরকার। যে যে উপায় গুলো অনুসরণ করে আপনি শব্দ দূষণের প্রতিকার আনতে পারেনঃ-
শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল, আদালত, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান গুলোর সামনে হর্ণ বাজানোর উপর বিধি-নিষেধ আরোপ করা।
বিশ্রী শব্দ তৈরি হয়, যা শব্দ দূষণের অন্যতম কারণ হতে পারে। এমন কোন কিছু করা থেকে বিরত থাকা। যেমনঃ- অযথা চেঁচামেচি, হট্টগোল করা থেকে বিরত থাকা।
বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠান, ধর্মীয় আয়োজন, নতুন বছরের আগমন কে কেন্দ্র করে ফটকা, আঁতশবাজি ফুটানো থেকে বিরত থাকা। কেননা, এগুলো অতিরিক্ত মাত্রায় শব্দ দূষণ করে থাকে।
বিভিন্ন প্রোগ্রামকে বা সামাজিক আয়োজন, রাজনৈতিক আলোচনা কে কেন্দ্র করে লাগামহীন ভাবে মাইকের ব্যবহার হয়ে থাকে। অর্থ্যাৎ, মাইকের ব্যবহারে নিয়ন্ত্রণ আনা উচিত।
উচ্চস্বরে টিভি, রেডিও চালানো থেকে বিরত থাকা। প্রয়োজনে অল্প সাউন্ড ব্যবহার করে টিভি, রেডিও চালানো।
বাসস্ট্যান্ড গুলোতে প্রচুর পরিমাণে শব্দ তৈরি হয়। লোকালয় থেকে বাসস্ট্যান্ড গুলো দূরে রাখা উত্তম।
এখন প্রযুক্তি শিল্প অনেক উন্নত। যেকোন সমস্যার সমাধান প্রযুক্তি শিল্পের মধ্যে রয়েছে। শিল্প-কারখানা গুলো শব্দ দূষণ নিয়ন্ত্রণের জন্য প্রযুক্তির সহায়তা নেয়া দরকার।
শব্দ দূষণের প্রভাব
শব্দ দূষণের রয়েছে একাধিক ক্ষতিকর প্রভাব। শব্দ দূষণের কারণে কি কি ঘটতে পারে সেই বিষয়ে অনেকে সচেতন হয়। শব্দ দূষণ এটা মানুষের শরীর ও মনের উপর নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে। শব্দ দূষণের কারণে যে মানবজাতি ক্ষতিগ্রস্থ হয় এমনটা নয়। পশু-পাখি, বন্য প্রাণীরা শব্দ দূষণের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে মুক্ত নয়। শব্দ দূষণের প্রভাব গুলো হলোঃ-
কানা/বধির হওয়ার আশংকাঃ- মানুষের কানে শব্দ ধারণ ক্ষমতা ১ - ৭৫ ডেসিবল। এর অতিরিক্ত হলে শ্রবণশক্তি কমে যায়। বৃদ্ধকালে বা তার আগে মানুষ বধির হয়ে যেতে পারে।
দৈহিক বৃদ্ধিতে বাধাঃ- যে সকল এলাকায় শব্দ দূষণ বেশি হয়, ঐ সকল এলাকায় শিশুদের স্বাভাবিক দৈহিক গঠন বাধাগ্রস্থ হয়।
স্মৃতি-শক্তি লোপঃ- মানুষের স্মৃতি-শক্তি দ্রুত কমিয়ে দিতে পারে। তাছাড়া, শব্দ দূষণের কারণে অনেক সময় মেজাজ খিটখিটে হয়ে যায়।
ঘুমের ব্যাধিঃ- অতিরিক্ত শব্দের কারণে মানুষের ঘুমের সমস্যা দেখা দেয়। সারাদিনের ক্লান্তি দূর করার অন্যতম উপায় হলো ঘুম। ঘুমের ব্যাঘাত ঘটলে শরীরের ক্লান্তি থেকেই যায়।
বন্য-প্রাণীর উপর প্রভাবঃ- প্রাণীরা সাধারণত নিরিবিলি পরিবেশ পছন্দ করে। অতিরিক্ত শব্দের কারণে তা সাধারণ মানুষের জন-জীবনে নেতিবাচক প্রভাব তৈরি করে। এতে করে প্রাণীর প্রজনন ক্ষমতা, বংশ বিস্তার এগুলো বাধা-প্রাপ্ত হয়।
অস্বাভাবিক শ্বাস-প্রশ্বাসঃ- শব্দ দূষণের কারণে অস্বাভাবিকভাবে শ্বাস-প্রশ্বাস বেড়ে যেতে পারে, যা অনেক সময় মানুষের মৃত্যু ঢেকে আনতে পারে।
মানসিক সমস্যাঃ- যে সকল এলকায় শব্দ দূষণ হয়, ঐ সকল এলাকার মানুষের মধ্যে হতাশা, উদ্বেগ, উৎকন্ঠা দেখা যায়।
হার্টের সমস্যা বৃদ্ধিঃ- অতিরিক্ত শব্দ হার্টের রোগীদের জন্য ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। কেননা, এটা অস্বাভাবিক রক্তচাপ বাড়িয়ে দেয়। শ্বাস-প্রশ্বাস দ্রুত উঠানামা করে। হার্টের প্রবলেম তীব্রতর হয়।
শব্দ দূষণের দুটি কারণ লেখ
শব্দ দূষণের অতি পরিচিত দুটি কারণ হলোঃ-
- গাড়ির হর্ণ
- উচ্চস্বরে মাইকের শব্দ
মূলত এই দুটি কারণে পরিবেশে শব্দ দূষণ বাড়ছে। এগুলো কোন-ভাবেই নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। এজন্য জন-সচেতনতা বাড়ানোর কোন বিকল্প নেই।
শব্দ দূষণের ৫টি কারণ
শব্দ দূষণের অতি পরিচিত ৫টি কারণ হলোঃ-
- বিদ্যুৎ চলে গেলে যখন জেনারেটর চালানো হয়
- ইট ভাটার শব্দ
- উচ্চ আওয়াজে রেডিও, টেলিভিশন চালালে
- গোলা-বারুদ, বোমা, ককটেল, বোম্বিং করলে
- মেঘের গর্জন, বজ্রপাত ( প্রাকৃতিক কারণে )
শব্দ দূষণ নিয়ন্ত্রণের দুটি উপায়
শব্দ দূষণ নিয়ন্ত্রণের কার্যকরী দুটি উপায় হলোঃ-
অধিক হারে গাছ লাগানোঃ- অতিরিক্ত গাছ লাগানোর কারণে শব্দ তরঙ্গ কমিয়ে দেয়া যায়। ঐ সময় শব্দ গুলো গাছের কারণে বাধা-প্রাপ্ত হয়।
সরকারি হস্তক্ষেপঃ- যে বিষয়ে সরকারের সরাসরি হস্তক্ষেপ রয়েছে সেখানে মানুষ দ্রুত ফল পায়। আইন প্রয়োগ, জনসচেতনতা বৃদ্ধিই পারে শব্দ দূষণ নিয়ন্ত্রণ করতে।
শব্দ দূষণ প্রতিরোধের ৫টি উপায়
শব্দ দূষণ প্রতিরোধের কার্যকরী ৫টি উপায় হলোঃ-
- মাইকের ব্যবহার কমানো
- শিল্প-কারখানা গুলো জনবসতি এলাকা থেকে দূরে রাখা
- শব্দ উৎপন্ন করে এমন যন্ত্রের ব্যবহার কমানো যেমনঃ রেডিও, টেলিভিশন, গিটার ইত্যাদি।
- নিজেকে বাঁচাতে কানে ইয়ার-প্লাগ ব্যবহার করুন।
- বৃক্ষ-রোপনে জোর দিন।
শব্দ দূষণের উৎস গুলি কি কি
শব্দ দূষণের ১০টি কারণ আমরা এই আর্টিকেলে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। মূলত ঐ সকল কারণ গুলো শব্দ দূষণের জন্য দায়ী।
শব্দ দূষণের প্রাকৃতিক কারণ
শব্দ দূষণের প্রাকৃতিক কারণ হলোঃ-
- ভূমিকম্প
- বজ্রপাত
- প্রাণীর আওয়াজ
- আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত
- বাতাস
- সমুদ্রের ঢেউ
মানুষের উপর শব্দ দূষণের প্রভাব
- ব্যাক্তি বধির হয়ে যায়
- স্মৃতিশক্তি লোপ পায়
- মানসিক সমস্যায় ভূগে
- হার্টের সমস্যা বেড়ে যেতে পারে
- মেজাজ খিটখিটে হয়ে যায়
- শিশুর দৈহিক বিকাশ বাধা প্রাপ্ত হয়
- বয়স্ক ব্যাক্তিরা প্রচন্ড রকমের ক্ষতি প্রাপ্ত হয়
- ঘুমের ব্যাঘাত
- শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের অবনতি ঘটে
- সাধারণ মানুষের চাইতে শিশু, বৃদ্ধ, প্রেগন্যান্ট নারীদের সমস্যা বেশি হয়
পরিবেশের উপর শব্দ দূষণের প্রভাব
পরিবেশের উপর শব্দ দূষণের প্রভাব যেভাবে বাড়ছে তা মানুষের স্বাভাবিক জীবনকে ক্ষতি করছে। শুধু মানুষ নয়, এটা পশু পাখি প্রাণীদের জীবনের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। আগের সময়ে গাছে গাছে কাঠ-বিড়ালী সহ অন্যান্য প্রজাতির প্রাণী দেখা গেলেও পরিবেশের উপর শব্দ দূষণের কারণে তা আজ বিলুপ্ত। পশু পাখি, বন্য-প্রাণীরা নিরিবিলি প্রাকৃতিক পরিবেশ পছন্দ করে। শব্দ দূষণের এই প্রাকৃতিক পরিবেশ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। ফলে প্রাণীদের প্রজনন ক্ষমতা, বংশবিস্তার এগুলো ধীরে ধীরে হ্রাস পাচ্ছে। ফলে বন্য-প্রাণীদের সংখ্যা কমে আসছে। পরিবেশ দূষণের নেতিবাচক প্রভাব মানুষ এবং প্রাণী উভয়কে ভোগ করতে হচ্ছে।
লেখকের মন্তব্য
অর্থনৈতিকভাবে উন্নয়নশীল রাষ্ট্র তৈরি করতে গিয়ে পরিবেশের প্রতি অনেক উন্নয়নশীল দেশ বে-খবর। ফলে প্রাকৃতিক পরিবেশ মারাত্নকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। এজন্য প্রত্যেক রাষ্ট্র প্রধান কে পরিবেশের প্রতি দায়িত্ব-শীল ভূমিকা রাখতে হবে। পরিবেশ সংরক্ষণে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
সম্মানিত পাঠকবৃন্দ এই আর্টিকেলে আমরা শব্দ দূষণের ১০টি কারণ - শব্দ দূষণ প্রতিরোধের ১০টি উপায় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। আশা করি পোস্টটি পড়ে আপনারা উপকৃত হয়েছেন। এই রকম তথ্য বহুল পোস্ট আমরা প্রতিনিয়ত আমাদের সাইটে পাবলিশ করে থাকি। এতক্ষণ ধৈর্য্য ধরে পোস্টটি উপভোগ করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। 02.11.25

আপনি পদ্মা মেইলের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url