মহিলারা আযানের আগে নামাজ পড়া যাবে কি জেনে নিন

এই আর্টিকেলে আমরা মহিলারা আযানের আগে নামাজ পড়া যাবে কি ? সে বিষয়ে আলোচনা করব। নানান ব্যস্ততার কারণে বাড়ির মেয়েরা আযানের আগেই নামায পড়ে ফেলে। এখন নামাজ হবে কিনা এই নিয়ে তারা সন্দেহ মধ্যে থাকে। তো তারই ধারাবাহিকতায় তারা গুগলে মহিলারা আযানের আগে নামাজ পড়া যাবে কি লিখে সার্চ করে থাকে।

মহিলারা আযানের আগে নামাজ পড়া যাবে কি জেনে নিন

ইসলামের একটি গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভ নামাজ। নামাজ প্রত্যেক মুসলিম নর-নারীর জন্য বাধ্যতামূলক। এজন্য আমাদের নামাজের ওয়াক্ত, নামাজের সময়সূচীর ব্যাপারে অবগত থাকতে হবে। চলুন তাহলে আর দেরি না করে মহিলারা আযানের আগে নামাজ পড়া যাবে কি তা জেনে নেওয়া যাক।

পোস্ট সূচিপত্রঃ- মহিলারা আযানের আগে নামাজ পড়া যাবে কি 

মহিলারা আযানের আগে নামাজ পড়া যাবে কি | আজানের আগে নামাজ পড়া যাবে

মহিলারা আযানের আগে নামাজ পড়া যাবে কিঃ- জ্বি, নামাজের ওয়াক্ত হয়ে গেলে মহিলারা বাসায় নামাজ আদায় করতে পারবে। অনেক মা-বোনেরা আছেন যারা অযূ করে আযানের জন্য অপেক্ষা করেন। মসজিদে আযানের সাথে মহিলাদের বাসায় নামাজ আদায়ের কোন সম্পর্ক নেই। মসজিদের আযানের সাথে পুরুষদের জামাতে নামাজ আদায়ের সম্পর্ক রয়েছে। নামাজের ওয়াক্ত হওয়া মাত্রই নামাজ আদায় শুরু করে দিতে পারবেন।

আরো পড়ুনঃ- হায়েজ অবস্থায় মোবাইলে কুরআন পড়া যাবে কি জেনে নিন

এ ব্যাপারে পবিত্র কুরআন মাজীদে বলা আছে, ‘নিশ্চয়ই নামাজ মুমিনদের উপরে নির্দিষ্ট সময় আদায় করাটাকে ফরজ করা হয়েছে ’ ( সূরা নিসা, আয়াত নংঃ- ১০৩ )। অনেক মসজিদে দেখবেন নামাজের ওয়াক্ত হওয়ার অনেক সময় পরে মসজিদে আযান দেয়। এজন্য আমাদের মা-বোনেরা নামাজের ওয়াক্ত হওয়া মাত্রই নামাজ পড়া আরম্ব করে দিবেন। মসজিদে আযান দিলো কি দিলো না এটা মা- বোনদের দেখার প্রয়োজন নেই। আশা করি আলোচনা থেকে মহিলারা আযানের আগে নামাজ পড়া যাবে কি সেই বিষয়ে সূক্ষ ধারণা নিতে পারছেন।

ফজরের ফরজ নামাজের পর সুন্নত পড়া যাবে কিনা | ফজরের ফরজ নামাজের পর সুন্নত পড়া যাবে কিনা আল কাউসার | ফজরের সুন্নত ছুটে গেলে কখন পড়তে হবে

ফজরের ফরজ নামাজের পর সুন্নত পড়া যাবে কিনাঃ- এ ব্যাপারে ২টি মত রয়েছে। এখন এই পর্বে আমরা ২টি মত নিয়ে আলোচনা করব। সর্বোত্তম কোনটি হবে সেটিও আপনাদের বলে দেয়া হবে।

১ম মত হলোঃ- ফজরের ফরজ নামাজ হয়ে যাওয়ার পর সূর্য উদয় হওয়ার আগ পর্যন্ত কোন নামাজ নেই। যদি কোন কারণে আপনার ফজরের সুন্নত নামাজ ছুটে যায় তাহলে সূর্য উঠার পর থেকে সূর্য হেলে যাওয়ার আগ পর্যন্ত সময়ের মধ্যে সুন্নত নামাজ পড়ে নিবেন। 

এ ব্যাপারে হাদিসে যা বলা হয়েছেঃ-

  • আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে নবী কারিম (সা.) বলেন, ‘যে ফজরের দুই রাকাত সুন্নত (সময়মতো) পড়েনি সে যেন সূর্যোদয়ের পর তা আদায় করে নেয় (জামে তিরমিজি, হাদিস : ৪২৩; মুসতাদরাকে হাকেম, হাদিস : ১০৫৩)।
  • আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত আছে যে, ‘রাসুল (সা.) দুই সময় নামাজ পড়তে নিষেধ করেছেন। ফজরের পর সূর্য ওঠা পর্যন্ত এবং আসরের পর সূর্য ডোবা পর্যন্ত। (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৫৮৮; সহিহ মুসলিম, হাদিস : ৮২৫)।

সহজ ভাষায় বলি, যদি সুন্নত নামাজ না পড়েন তাহলে ফজরের ফরজ নামাজ পড়ার পর আপনি আর সুন্নত নামাজ পড়বেন না। এর পর যখন যখন সূর্য উঠে যাবে তার ১০ মিনিট পর ফজরের সুন্নত নামাজ পড়ে ফেলবেন।

২য় মত হলোঃ- কোন কোন ইমামের মত হলো, ফজরের যে সুন্নত ছুটে গেছে তা ফরজ নামাজের পর পরই পড়ে নিবে।

এ ব্যাপারে হাদিসে যা বলা হয়েছেঃ-

  • নবী (সাঃ) দেখলেন এক সাহাবী ফজরের ফরজ নামাজের পর নামাজ পড়ছে। নবী ( সাঃ ) জিজ্ঞাসা করলেন, তুমি ২ নামাজ একসাথে পড়ছো ? কি নামাজ পড়ছো ? সাহাবী উত্তরে বললেনঃ- আমি যে ২ রাকাত ( সুন্নত ) নামাজ পড়তাম তা ছুটে গেছে, তাই পড়ছি। নবী (সাঃ) হ্যাঁ বা না, মানে নিষেধ করেন নি। 

এখন প্রশ্ন হলো আপনি কোন মত গ্রহণ করবেন ? সর্বোত্তম হলো বিতর্কের উর্ধ্বে উঠে প্রথম মত গ্রহণ করা। অর্থ্যাৎ সূর্য উঠে যাওয়ার পর ২ রাকাত সুন্নত নামাজ আদায় করে নেওয়া।

আজানের সময় নামাজ পড়া যাবে কি

আজানের সময় নামাজ পড়া যাবে কিঃ- ধরুণ, নামাজের ওয়াক্ত হয়ে গেছে আপনি নামাজ পড়া আরম্ব করে দিয়েছেন। এমনতাবস্থায় মসজিদে আযান হচ্ছে তো আপনার নামাজ হয়ে যাবে। সব থেকে উত্তম হলো আযানের সময় আযানের জবাব দিবেন। মুয়াজ্জিন আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার বলছে, আপনিও মনে মনে আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার বলুন। এক কথায় মুযাজ্জিন যা বলে আপনিও তা বলুন। আযান শেষ হলে আযানের দোয়া পড়ুন।

ফজরের জামাত শুরু হলে সুন্নত পড়া যাবে কি | ফজরের সুন্নত আগে নাকি ফরজ আগে

ফজরের জামাত শুরু হলে সুন্নত পড়া যাবে কিঃ- এখন ফজরের জামাত শুরু হয়ে গেছে এমন অবস্থায় আপনি কি জামাতে অংশগ্রহণ করবেন নাকি আগে ২ রাকাত সুন্নত নামাজ আদায় করবেন এমন প্রশ্ন আমরা প্রায় করে থাকি। এ ব্যাপারে বড় বড় ইমামদের ২টি মত রয়েছে। আমরা ২টি মত নিয়ে আলোচনা করব।

১ম মত হলোঃ- ইমাম আবু হানিফার মতে, ফজর বাদে অন্যান্য নামাজে একামত শুরু হয়ে গেলে সরাসরি জামাতে অংশ নিবেন। ফজরের সুন্নতের গুরুত্ব এত বেশি যে, 

ভালো করে বুঝে নিনঃ

  • ফজরের জামাত শুরু হয়ে গেছে এমন অবস্থায় যদি দেখেন আপনি ফজরের ২ রাকাত সুন্নত নামাজ পড়ে জামাত ধরতে পারবেন তাহলে সুন্নত নামাজ পড়ে নিন।
  • আর যদি দেখেন সুন্নত নামাজ পড়তে পড়তে জামাত শেষ হয়ে যাবে তাহলে আগে জামাতে অংশগ্রহণ করুন।

২য় মত হলোঃ- অন্যান্য ইমামদের মত হলো, একামত শুরু হয়ে গেছে সরাসরি জামাতে অংশগ্রহণ করুন। আর অন্য কোন নামাজের নিয়ত করা যাবে না। হাদিসে এভাবে এসেছে, যখন নামাজের একামত দেয়া হয় তখন ফরজ নামাজ ছাড়া আর কোন নামাজের নিয়ত করা যাবে না।

এ ব্যাপারে বাংলাদেশের প্রসিদ্ধ আলেম ড. খন্দকার আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর রহিমাহুল্লাহ সহ আরও অন্যান্য বড় বড় আলেমরা ২য় মতকে প্রাধান্য দিয়েছে।

ফজরের সুন্নত না পড়লে কি গুনাহ হবে

ফজরের সুন্নত না পড়লে কি গুনাহ হবেঃ- না, ফজরের সুন্নত না পড়লে গুনাহ হবে না। তবে মাথায় রাখতে হবে,  সারা জীবনের সুন্নত নামাজের মধ্যে সব থেকে ‍গুরুত্বপূর্ণ সুন্নত নামাজ হলো ফজরের ‍সুন্নত। ফজরের নামাজের সুন্নতের ব্যাপারে নবী (সাঃ) বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছেন। ফজরের ‍সুন্নত নামাজে হাদিসে এভাবে বলা হয়েছে, ‘ফজরের দুই রাকাত (সুন্নত) দুনিয়া ও দুনিয়ার মধ্যে যা কিছু আছে তার চেয়ে উত্তম। সফরে থাকাকালীন সময়েও ফজরের দুই রাকাত সুন্নত নামাজ পড়তে হয়। সফরে থাকাকালীন অন্যান্য সুন্নত নামাজ পড়ার প্রয়োজন নেই বা অপশন নেই। তাই কোন অবস্থাতে ফজরের ২ রাকাত সুন্নত বাদ দেয়া উচিত নয়। এতে আপনি নিয়ামত থেকে বঞ্চিত হবেন।

ফজরের আজানের আগে নামাজ পড়া যাবে কিনা | ফজরের নামাজ আজানের আগে পড়া যাবে কিনা

ফজরের আজানের আগে নামাজ পড়া যাবে কিনাঃ- যদি ওয়াক্ত হয়ে বা সুবহে সাদিকের সময় হয়ে যায় তাহলে নামাজ আদায় করা যাবে। মসজিদের মুয়াজ্জিনরা অনেক সময় ওয়াক্ত হওয়ার অনেকক্ষণ পরে আযান দেয়। এ ব্যাপারে পবিত্র কুরআন মাজীদে বলা আছে, ‘নিশ্চয়ই নামাজ মুমিনদের উপরে নির্দিষ্ট সময় আদায় করাটাকে ফরজ করা হয়েছে ’ ( সূরা নিসা, আয়াত নংঃ- ১০৩ )। সুতারাং নামাজের ওয়াক্ত হয়ে গেলেই নামাজ পড়তে পারবেন আর নামাজের ওয়াক্ত না হলে নামাজ পড়বেন না।

সুবহে সাদিক কখন শুরু হয়

সুবহে সাদিক কখন শুরু হয়ঃ- ফজরের ওয়াক্ত হওয়ার ঐ সময়কে সুবহে সাদিকের সময় বলা হয়। অর্থ্যাৎ রোজার সময় যখন আমরা সেহেরি করি। এ ব্যাপারে কোরআন মাজীদে বলা আছে, ‘আর তোমরা পানাহার করো যতক্ষণ না রাতের কালো রেখা থেকে ভোরের সাদা রেখা স্পষ্টরূপে তোমাদের কাছে প্রতিভাত হয়।’ (সুরা বাকারা, আয়াত: ১৮৭)। সুবহে সাদিক হলো সেই ক্ষীণ আলো যা পূর্ব আকাশে প্রকাশ পায় এবং সাহরির সময় শেষ হয়ে যায়। সুবহে সাদিকের সময় ফজরের ওয়াক্ত শুরু হয় এবং সূর্য উঠার মধ্য দিয়ে ফজ র শেষ হয়।

আরো পড়ুনঃ- জান্নাতের হুরদের নাম - জান্নাতের পাখির নাম জেনে নিন

আধুনিক জ্যোতির্বিজ্ঞানের ভাষ্যনুযায়ী, সুবহে সাদিক শুরু হয় সূর্যের দিগন্তের নিচে ১৮° তে থাকা অবস্থায়। সূর্য উঠার সময় এবং সূর্য ডোবার সময় যে আলো দেখা যায় তাকে জ্যোতির্বিজ্ঞানের ভাষায় টয়লাইট বলা হয়। আরবিতে বলা হয় শাফাক, বাংলায় বলা হয় লালীমা।

দরুদ পড়ার নিষিদ্ধ সময়

দরুদ পড়ার নিষিদ্ধ সময়ঃ- দরুদ এমন একটি আমল যা পড়তে অযূ করার প্রয়োজন হয় না। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে নিয়ে শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত এই সময় বেশি বেশি দরুদ পড়া উত্তম। এখন আমরা জানব যে সময় দরুদ শরীফ পড়ার প্রয়োজন নেইঃ-

১) কুরআন মাজীদ তেলাওয়াত করার সময় নবী (সাঃ) নাম আসলে দরুদ পড়ার প্রয়োজন নেই।

২) প্রস্রাব, পায়খানার সময় দরুদ পড়া যাবে না।

৩) ধরুণ, আপনি নামাজরত অবস্থায় আছেন। আপনার পাশের কেউ নবী (সাঃ) নাম নিলে ঐ অবস্থায় আপনার দরুদ পড়া ওয়াজিব নয়।

৪) সহবাসের সময় দরুদ পড়া যাবে না।

৫) পশু জবাই করার সময় দরুদ পড়া যাবে না।

৬) হাঁচি দেয়ার পরে দরুদ পড়া যাবে না।

ফজরের সুন্নত নামাজ কোথায় পড়া উত্তম

সুন্নত, নফল নামাজ বাড়িতে পড়া উত্তম। মসজিদে পড়লে তা আদায় হয়ে যাবে। 

এ ব্যাপারে হাদিসে বলা হয়েছে, 

  • নবী (সাঃ) বলেন, ‘তোমাদের ঘরেও তোমরা কিছু নামাজ আদায় করো, নামাজ না পড়ে ঘরকে কবরে পরিণত করো না ’ (বুখারি : ৪৩২, মুসলিম, মুসনাদে আহমাদ)।
  • নবী (সাঃ) বলেন, তোমরা ঘরে নামাজ আদায় কর। কেননা ফরজ নামাজ ছাড়া অন্যান্য নামাজ ঘরে আদায় করাই উত্তম (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ৭৮১)।

অবশ্য সাহাবা ও তাবেঈন অনেকে ফজরের সুন্নত মসজিদে আদায় করেছেন এ ব্যাপারে পাওয়া যায়ঃ-

  • আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা. এমন সময় মসজিদে প্রবেশ করলেন যখন ইমাম নামাজ পড়াচ্ছিলেন। তিনি (প্রথমে) ফজরের দু’ রাকাত সুন্নত আদায় করলেন (শরহু মাআনিল আছার ১/২৫৫)।
  • বিশিষ্ট তাবেয়ী সাঈদ ইবনে জুবায়ের রহ. মসজিদে এমন সময় এলেন যখন ইমাম ফজর নামায পড়াচ্ছেন। তিনি মসজিদের দরজার সামনে সুন্নত পড়লেন অতপর জামাতে শরিক হলেন। (মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা, হাদীস : ৬৪৭৪; বাযলুল মাজহূদ ৬/৩৭২)।

ফজরের সুন্নত নামাজের নিয়ম

ফজরের সুন্নত নামাজের নিয়ম জানতে আপনারা প্রায় গুগলে সার্চ করে থাকেন। ফজরের সুন্নত নামাজ ২ রাকাত। গোটা দুনিয়ার মধ্যে যা রয়েছে তার মধ্যে ফজরের ২ রাকাত সুন্নত নামাজ সর্বোত্তম।

১ম রাকাতঃ- সূরা ফাতিহার সাথে আরেকটি সূরা পড়বেন। এরপর রুকু, সিজদাহ করে ১ম রাকাত শেষ করবেন।

২য় রাকাতঃ- সূরা ফাতিহার সাথে অন্য আরেকটি সূরা পড়বেন। এরপর রুকু, সিজদাহ করে তাশাহুদ, দরুদ, দোআ মাসুরা পড়ে সালাম ফিরাবেন।

আপনি যদি নতুন হয়ে থাকেন নামাজ পড়ার নিয়ম না জানেন তাহলে স্থানীয় লোকাল মসজিদে যান অথবা ইউটিউবে সার্চ করে নামাজ পড়ার একটি ভিডিও দেখে নিন।

আযানের কতক্ষণ আগে নামাজ পড়া যায় | আযান না শুনে নামাজ পড়া যাবে কি | জামাতের আগে নামাজ পড়া যাবে কি | আজানের আগে সুন্নত পড়া যাবে কিনা |নামাজের ওয়াক্ত শুরু হলে কি নামাজ পড়া যাবে 

সব গুলো প্রশ্নের উত্তর একটাই, নামাজের ওয়াক্ত হয়ে গেলেই নামাজ পড়া আরম্ব করে দিতে পারেন। এ ব্যাপারে পবিত্র কুরআন মাজীদে বলা আছে, ‘নিশ্চয়ই নামাজ মুমিনদের উপরে নির্দিষ্ট সময় আদায় করাটাকে ফরজ করা হয়েছে ’ ( সূরা নিসা, আয়াত নংঃ- ১০৩ )। নামাজের ওয়াক্ত হয় নি কিন্তু আপনি নামাজ পড়েছেন তাহলে ঐ নামাজ হবে না। আপনাকে নামাজের ওয়াক্ত কথা মাথায় রেখে নামাজ আদায় করতে হবে।

আজানের সময় কি ফরজ নামাজ পড়া যায়

আযানের সময় সর্বোত্তম হলো ‍মুয়াজ্জিন যা বলে তা বলা। মুয়াজ্জিন আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার বলছে আপনি আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার মনে মনে বলুন। আযান শেষ হলে দরুদ পড়ে আযানের দোআ পড়ুন।

ছেলেদের জন্য সর্বোত্তম হলো জামাতে গিয়ে নামাজ পড়া। এখন নামাজের ওয়াক্ত হয়ে গেলে আপনি বাসায় নামাজ পড়া আরম্ব করে দিতে পারেন। এখন আপনি ফরজ নামাজ পড়ছেন এমন অবস্থায় মসজিদে আযান দিলো তাও আপনার নামাজ হয়ে যাবে।

সময়ের আগে নামাজ পড়া যাবে কি

যদি নামাজের ওয়াক্ত না হয় তাহলে নামাজ পড়া যাবে না। যদি নামাজ পড়ে ফেলেন তাহলে ঐ নামাজ হবে না। পুনরায় নামাজ পড়তে হবে।

আযানের আগে বা পরে নামাযের জন্য মানুষকে ডাকাডাকি করা

মানুষকে নামাজের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়ার জন্য মুয়াজ্জিন আযান দেয়। তাহলে এখন আপনি যদি আবার পুনরায়  ঐ মাইকে আবার মুসল্লি ডাকেন তাহলে এটা আযানকে ছোট করা হলো। এভাবে আযানের আগে বা পরে নামাযের জন্য মানুষকে ডাকাডাকি করা উচিত নয় এবং করবেনও না। কেননা, ইসলাম সমর্থন করে না। তবে হ্যাঁ, আপনি যখন নামাজের উদ্দেশ্যে যাবেন আশেপাশের মানুষদের নামাজের জন্য ডেকে নিয়ে আসবেন।

আজানের আগে দুরুদ পড়া কি | আযানের আগে বিসমিল্লাহ | আজানের আগে কিছু বলা | আজানের আগে সালাতু সালামের দলিল

আমাদের বাংলাদেশে কোথাও কোথাও আযানের আগে জিকির করে, দরুদ পড়ে, বিসমিল্লাহ বলে, সালাতু সালাম উচ্চারণ করে এগুলো  হাদিস দ্বারা প্রমানিত নয়। এটা সুস্পষ্ট বিদাআত। দরুদ পড়বেন আযান শেষ করে আযানের দোআ পড়ার আগে।

সুন্নত নামাজ কি বাধ্যতামূলক

যদি কেউ সুন্নত নামাজ আদায় না করে তাহলে সে গুনাহগার হবে না। তবে বড় ধরণের ফজিলত থেকে বঞ্চিত হবে। কেননা, প্রতিটি সুন্নত নামাজের পরে নবী (সাঃ) ফজিলতের বিষয়টি যুক্ত আছে। যেমনঃ- ফজরের সুন্নত নামাজ গোটা দুনিয়ার মধ্যে যা আছে সব থেকে ‍উত্তম। একটা বিষয় মাথায় রাখবেন কেয়ামতের দিন ফরজ নামাজে ঘাটতি পড়লে তা সুন্নত/নফল নামাজ দিয়ে পূরণ করা হবে। এজন্য চেষ্টা করবেন সুন্নত নামাজ গুলো পড়ার জন্য।

লেখকের মন্তব্য

সম্মানিত পাঠকবৃন্দ এই পোস্টে আমরা মহিলারা আযানের আগে নামাজ পড়া যাবে কি সেই বিষয়ে আলোচনা করেছি। আশা করি পোস্টটি পড়ে আপনারা উপকৃত হয়েছেন। এই ধরণের ইসলামিক পোস্ট আমরা আমাদের সাইটে প্রতিনিয়ত পাবলিশ করে থাকি।

এতক্ষণ ধৈর্য্য ধরে পোস্টটি পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। পরবর্তীতে আলোচনা হবে ভিন্ন কোন পোস্ট নিয়ে। সে পর্যন্ত ভালো থাকুন। আপনার সুস্থতা কামনা করে এখানে শেষ করছি। আমাদের সাথেই থাকুন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

আপনি পদ্মা মেইলের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url