জান্নাতের হুরদের নাম - জান্নাতের পাখির নাম জেনে নিন
এই পোস্টে জান্নাতের হুরদের নাম ও জান্নাতের পাখির নাম গুলো আলোচনা করা হবে। গুগলে অতি সন্ধানকৃত একটি টপিকস জান্নাতের হুরদের নাম ও জান্নাতের পাখির নাম জানতে মানুষ গুগলে সার্চ করে তাদের জন্য মূলত এই পোস্টটি লিখা হয়েছে।
জান্নাত আল্লাহর নেককার বান্দাদের জন্য এক বিশেষ নিয়ামত। এই জান্নাতে আল্লাহর নিয়ামতের কোন কমতি নেই। জান্নাতের আল্লাহর যতগুলো নিয়ামত রয়েছে তার মধ্যে অন্যতম হলো জান্নাতী হুর। জান্নাতী হুরদের নিয়ে আমাদের আগ্রহের কমতি নেই। আপনি যদি জান্নাতের হুরদের নাম - জান্নাতের পাখির নাম জানতে চান তাহলে পোস্টটি পড়ুন।
পোস্ট সূচিপত্রঃ জান্নাতের হুরদের নাম
- জান্নাতের বাগানের নাম
- জান্নাতের হুরদের নাম | জান্নাতের হুরদের বর্ণনা | জান্নাতের হুরের বর্ণনা pdf |হুরদের শারীরিক গঠন | হুরের ছবি | জান্নাতের হুর কেমন হবে
- জান্নাতের হুর মানে কি | হুর কি নারী নাকি পুরুষ
- জান্নাতের পাখির নাম
- জান্নাতের নদীর নাম
- জান্নাতের ঝর্ণার নাম
- জান্নাতের ফলের নাম
- জান্নাতের সুগন্ধির নাম
- জান্নাতের পাহাড়ের নাম
- রিয়াজুল জান্নাত নামের অর্থ
- উপসংহার
জান্নাতের বাগানের নাম
এই পৃথিবীতে একটি জান্নাতের বাগান রয়েছে। শুনে অবাক হচ্ছেন তো ? পৃথিবীতে এমন একটি বাগান রয়েছে যেটাকে নবী (সা) জান্নাতের বাগান বলে উল্লেখ করেছেন। নবীজি (স.) বলেছেন, ‘আমার ঘর (বর্তমান দাফনের স্থান) ও মিম্বরের মাঝের জায়গা জান্নাতের বাগানগুলোর একটি আর আমার মিম্বর আমার হাউজের উপর অবস্থিত। (বুখারি:১১৯৬, ১১২০; মুসলিম: ২৪৬৩)। সুতারাং রিয়াজুল জান্নাহ যেটাকে জান্নাতে বাগান বলে তুলে ধরা হয়েছে। নবী (সা.) মিম্বারের পাশের জায়গাটি জান্নাতের বাগান বা রিয়াজুল জান্নাহ বলে পরিচিত। এই স্থানে নামাজ আদায়ে রয়েছে বিশেষ ফজিলত।
জান্নাতের হুরদের নাম |জান্নাতের হুরদের বর্ণনা |জান্নাতের হুরের বর্ণনা pdf |হুরদের শারীরিক গঠন | হুরের ছবি | জান্নাতের হুর কেমন হবে
জান্নাতের হুরদের নাম জানতে অনেকে ইচ্ছুক। পবিত্র কোরআন মাজীদ ও হাদিসে কোথাও জান্নাতের হুরদের নাম উল্লেখ করা হয় নি। তবে জান্নাতের হুর দেখতে কেমন হবে ? সে বিষয়ে বলা আছে।
জান্নাতের হুর দেখতে কেমন হবেঃ এই হুর গুলো হবে পবিত্রা। দুনিয়ার নারীদের মতো তাদের পিরিয়ড হবে না। তাদের চোখ গুলো হবে ডাগর ডাগর বা হরিণের মতো। তাদের মেঘ কালো কেশ থাকবে। তাদের হাসি দিয়ে মুক্তা ঝরবে। তাদের শরীরের ভিতর রক্ত চলাচল বাইর থেকে দেখা যাবে। তাদের দেহের ভিতর হাড্ডি ও অস্থিমজ্জার নড়াচড়া বাহির থেকে টের পাওয়া যাবে। আল্লাহ এই হুরদের মুমিন বান্দাদের জন্য স্পেশালভাবে তৈরি করেছেন। অতীতে কোন মানুষ, জিন, ফেরেশসতা এদের স্পর্শ করে নি। তারা কখনও বৃদ্ধ হবে না। তারা কখনও অসুস্থ হবে না। তাদের কোন মৃত্যু হবে না। তারা হবে চির স্থায়ী কুমারী। জান্নাতীরা জান্নাতে গিয়ে তাদের স্পর্শ করবে।
জান্নাতের হুর মানে কি | হুর কি নারী নাকি পুরুষ
হুর মানে হচ্ছে সঙ্গীকে বোঝানো হচ্ছে। অর্থ্যাৎ ছেলেদের সঙ্গী হবে মেয়েরা, মেয়েদের সঙ্গী হবে ছেলেরা। হুরদের ব্যাপারে বলা আছে, হুরদের সৌন্দর্য দুনিয়ার মানুষদের কল্পনার বাহিরে। জিন ও ফেরেশতা কেউ তাদের স্পর্শ করে নি। জান্নাতীরা সর্বপ্রথম তাদের স্পর্শ করবে।
জান্নাতের পাখির নাম
আল্লাহর জান্নাতে বিভিন্ন প্রজাতির পাখি থাকবে। যেগুলোর কলরব জান্নাতীদের মুগ্ধ করবে। পবিত্র কোরআন মাজীদে একটি পাখির কথা বলা হয়েছে সেটি হলো হুদহুদ পাখি। এই পাখি নবী সোলাইমান (আঃ) রাষ্ট্রীয় কাজে সহায়তা করতো। এই পাখি দেখতে অনেক সুন্দর। দেখলে চোখ জুড়িয়ে যায়। এই পাখি আকারে ছোট। পবিত্র কোরআনের ২৭ নম্বর সূরা আন নমলের ২০ থেকে ৩১ নম্বর আয়াতে হজরত সোলায়মান (আ.)-এর সংবাদ সংগ্রহের মাধ্যম হিসেবে হুদহুদ পাখির উল্লেখ রয়েছে। নবী সোলাইমান (আঃ) পাখিদের ভাষা বুঝতেন। এই পাখির কাজ ছিলোঃ পার্শ্ববর্তী রাষ্ট্রে কি কি হচ্ছে, তাদের পরিকল্পনা কি, সেই রাষ্ট্র কোথায় সৈন্য পাঠাচ্ছে ইত্যাদি গোপন বিষয়গুলো সোলাইমান (আঃ) কে জানানো।
জান্নাতের নদীর নাম
আল্লাহ তার মুমিন বান্দাদের জন্য জান্নাতে সুবিশাল নদীর ব্যবস্থা করে রেখেছে। আজকে আমরা জানবো জান্নাতের নদীর নাম গুলো। জান্নাতের নদী ৪টি। নদী গুলো হলোঃ
১. পানির
২.দুধের
৩.মধুর
৪. শরাবের
বেহেস্তের প্রাসাদের সাথে এই নদীর গুলোর সংযোগ থাকবে। তাছাড়া আরও অনেক ছোট-ছোট নদী থাকবে। হাকীম ইবনু মু’আবিয়াহ (রহঃ) হতে তার বাবার সূত্রে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ জান্নাতের মধ্যে পানি, মধু, দুধ ও মদের সমুদ্র আছে। এগুলো থেকে আরো ঝর্ণা বা নদীসমূহ প্রবাহিত হবে (তিরমিজি হাদিস নং-২৫৭১)।
জান্নাতের বিশেষায়িত ও বরকতময় নদী হচ্ছে কাউসার। ইহা কল্যাণ ও বরকতের আধার। আল্লাহ নবী (সাঃ) কে কাউসার দান করেছেন। এই নদী থেকে আল্লাহর নেক বান্দা-বান্দী গণ পানি পান করবেন।
পৃথিবীতে জান্নাতী নদীঃ এমন ২টি নদী আছে যা সিদরাতুল মুনতাহা থেকে জান্নাতের কানেকশন নিয়ে পৃথিবীতে এসেছে। নদী ২টি হলোঃ
১. মিশরের নীল নদ.
২. ইরাকের দজলা বা ফুরাত নদী।
জান্নাতের ঝর্ণার নাম | জান্নাতের ঝর্ণার নাম সমূহ
জান্নাতীদের জন্য জান্নাতে ফুল, ফল, নদী, ঝর্ণার ব্যবস্থা করে রেখেছেন আল্লাহ। এখন আমরা জানবো জান্নাতের ঝর্ণার নাম। জান্নাতের ঝর্ণার নাম গুলো হলোঃ
১. কাফুর ঝর্ণাঃ এই ঝর্ণার পানি হবে সুঘ্রাণ। যে জান্নাতী এই ঝর্ণার পাশ দিয়ে যাবে সে এই ঝর্ণার সুঘ্রাণ অনুভব করবে। দুনিয়ার কোন ঘ্রাণের সাথে এই ঘ্রাণের মিল থাকবে না। এই ঝর্ণার পানি পান করলে দেহ ঠান্ডা হয়ে যাবে।
২.সালসাবিল ঝর্ণাঃ এই ঝর্ণার পানি এতটা সুগন্ধ হবে যে দুনিয়ার কেউ তা কল্পনা করতে পারে নি। এই পানি হবে ফুটন্ত চা ও কফির ন্যায়। জান্নাতীগণ এই পানির স্বাদ নিতে পারবে।
৩. তাছনীম ঝর্ণাঃ এই ঝর্ণার পানি হবে নাতিশীতোষ্ণ। অর্থ্যাৎ না হবে ঠান্ডা না হবে গরম।
জান্নাতের ফলের নাম
আজকে আমি আপনাকে জানাবো জান্নাতের ফলের নাম গুলো সম্পর্কে। আল্লাহ তার জান্নাতী বান্দাদের বিভিন্ন ফল দিয়ে মেহমানদারি করবেন। জান্নাতের ফলের নাম হলোঃ
- খেজুর ( সূরা মারইয়াম, আয়াত: ২৫ )
- ডালিম/আনার (সুরা : আনআম, আয়াত : ৯৯)
- আঙ্গুর (সুরা : নাহাল, আয়াত : ১১)
- ডুমুর (সুরা : ত্বীন, আয়াত : ১)
- কলা ( সূরা:ওয়াকিয়াহ, আয়াত ২৭-২৯ )
জান্নাতের সুগন্ধির নাম
জান্নাত হচ্ছে অনাবিল সুখ এবং শান্তির জায়গা। জান্নাতের চারপাশ হবে সুগন্ধিতে ভরপুর। প্রত্যেক মুসলমানের ইচ্ছা জান্নাতে যাওয়ার। এখন আমরা জান্নাতের সুগন্ধির নাম নিয়ে আলোচনা করব।
- মিস্ক যার বাংলা অর্থ প্রাকৃতিক সুগন্ধি
- কাফুর যার বাংলা অর্থ সুগন্ধযুক্ত উপাদান
- জাঞ্জাবিল যার বাংলা অর্থ আদা
- রাইহান যার বাংলা অর্থ সুগন্ধযুক্ত গাছ
- আল-ওয়ারদ যার বাংলা অর্থ গোলাপের মতো সুগন্ধি
জান্নাতের পাহাড়ের নাম
জান্নাতের পাহাড় সম্পর্কে জানতে আমরা প্রায় গুগলে অনুসন্ধান করে থাকি। এখন আমরা ৪টি জান্নাতের পাহাড় সম্পর্কে জানবঃ-
- উহুদ পাহাড়
- তূর পাহাড়
- লুবনান পাহাড়
- ওয়ারকানা পাহাড়
রিয়াজুল জান্নাত নামের অর্থ
রুপক অর্থে রিয়াজুল জান্নাত শব্দের অর্থ জান্নাতের বাগান। মক্কায় থাকাকালীন সময়ে যখন মুহাম্মদ (সাঃ) জুলুম নেমে আসল তখন তিনি মদিনায় সফর করেন। সেখানে একটি মসজিদ নির্মাণ করেন যা মসজিদে নববী নামে পরিচিত। মসজিদে নববী বিশেষ জায়গাকে রিয়াজুল জান্নাত বলা হয়। মুহাম্মদ (সাঃ) তৈরি করা মসজিদের মিম্বর ও হুজরার মধ্যবর্তী স্থানকে বোঝানো হয়েছে।
উপসংহার
প্রিয় পাঠক পুরো পোস্টটি পড়ে আশা করি আপনার ভালো লেগেছে। এই পোস্টে জান্নাতের বাগানের নাম, জান্নাতের হুরদের নাম, জান্নাতের পাখির নাম, জান্নাতের নদীর নাম, জান্নাতের ঝর্ণার নাম, জান্নাতের ফলের নাম, জান্নাতের সুগন্ধির নাম, জান্নাতের পাহাড়ের নাম ইত্যাদি এরকম গুরুত্বপূর্ণ বিষয় সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। এই রকম ইসলামিক আরো তথ্য পেতে এই লিংকে চাপ দিন। পোস্টটি শেয়ার করার জন্য অনুরোধ রইল। আপনার সুস্থতা কামনা করে এখানে শেষ করছি। আমাদের সাথেই থাকুন।
আপনি পদ্মা মেইলের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url