সূরা ইখলাস ৩/ ১০/ ২১/ ১০০/ ২০০/ ১০০০ বার পড়লে কি হয়
সূরা ইখলাস কতবার পড়লে কি কি ফায়দা হয় এবং সূরা ইখলাস এর ফজিলত কি আজকের এই আর্টিকেল থেকে আমরা তা জানব। সূরা ইখলাসে আল্লাহর একত্ববাদের ঘোষণা দৃঢ়ভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। সূরা ইখলাস তেলাওয়াতকারী ব্যাক্তি শিরক থেকে দূরে থাকবে, সে তাওহীদ পন্থি হয়ে উঠবে এবং আল্লাহর মুখলেস বান্দা হবে। পবিত্র কোরআন মাজীদের প্রত্যেক সূরার বিশেষ বিশেষ ফজিলত রয়েছে। সূরা ইখলাসও তার ব্যাক্তিক্রম নয়। এই আর্টিকেলে আমরা সূরা ইখলাস কতবার পড়লে কি কি ফায়দা হয় এবং সূরা ইখলাস এর ফজিলত কি সেই সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেছি।
পবিত্র কোরআন মাজীদের ১১২ তম সূরা হলো সূরাতুল ইখলাস। ইহা মক্কায় অবতীর্ণ হয়। এর আয়াত সংখ্যা ৪, রুকু ১ টি। ইখলাস শব্দের অর্থ নিরেট বিশ্বাস, একনিষ্ঠতা, খাঁটি আনুগত্য ইত্যাদি। যখন মক্কার কাফেররা নবী ( সাঃ ) নিকট আল্লাহ অস্তিত্বের ব্যাপারে প্রশ্ন করে তখন তাদের ( কাফেরদের ) মোক্ষম জবাব দেয়ার জন্য সূরা ইখলাস নাযিল হয়। চলুন তাহলে আর দেরি না করে সূরা ইখলাস কতবার পড়লে কি কি ফায়দা হয় এবং সূরা ইখলাস এর ফজিলত কি তা জেনে নেওয়া যাক।
পোস্ট সূচিপত্রঃ- সূরা ইখলাস কতবার পড়লে কি কি ফায়দা হয় এবং সূরা ইখলাস এর ফজিলত কি
- সূরা ইখলাস ৩ বার পাঠের ফজিলত | ৩ বার সুরা ইখলাস পড়ার ফজিলত | সূরা ইখলাস তিনবার পড়ার ফজিলত
- ১০ বার সুরা ইখলাস পড়ার ফজিলত | সূরা ইখলাস ১০ বার পাঠের ফজিলত
- ২১ বার সুরা ইখলাস পড়ার ফজিলত
- সূরা ইখলাস 100 বার পড়ার ফজিলত | সুরা ইখলাস ১০০ বার পড়ার ফজিলত
- ২০০ বার সুরা ইখলাস পড়ার ফজিলত | ২০০ বার সুরা ইখলাস পড়ার ফজিলত হাদিস
- সূরা ইখলাস ১০০০ বার পড়ার ফজিলত
- সূরা ইখলাসের ফজিলত | সুরা ইখলাস আমল ও ফজিলত | সূরা ইখলাস এর ফজিলত সম্পর্কিত হাদিস | সূরা ইখলাসের ফজিলত সম্পর্কে হাদিস | সূরা ইখলাস এর ফজিলত ও তাৎপর্য | সূরা ইখলাসের ফজিলত আল কাউসার | সূরা ইখলাস সম্পর্কে হাদিস
- সূরা ইখলাসের তাৎপর্য ও শিক্ষা
- সূরা ইখলাস কোন সময় কতবার পড়লে সাথে সাথে ফল পাবেন
- লেখকের মন্তব্য
সূরা ইখলাস ৩ বার পাঠের ফজিলত | ৩ বার সুরা ইখলাস পড়ার ফজিলত | সূরা ইখলাস তিনবার পড়ার ফজিলত
কোরআনের ৩ ভাগের ১ ভাগঃ- আবু সাঈদ খুদরি (রা.) থেকে বর্ণিত আছে যে, এক ব্যক্তি অন্য ব্যক্তিকে রাতে বারবার সুরা আল-ইখলাস পড়তে শুনেছেন। অতঃপর সকালে মহানবী (সা.)-কে এ বিষয়টি অবহিত করা হয়। তখন মহানবী (সা.) বলেন, ‘ওই সত্তার শপথ! যার কুদরতের হাতে আমার জীবন, অবশ্যই এ সুরা কোরআন মাজিদের এক-তৃতীয়াংশের সমান। (সহিহ বুখারি : ৫০১৩; আবু দাউদ : ১৪৬১; নাসায়ি : ২/১৭১; মুআত্তা মালেক : ১/২০৮)।
আরো পড়ুনঃ- ওযু ছাড়া মোবাইলে কুরআন পড়া যাবে কি বিস্তারিত জেনে নিন
অন্য বর্ণনায় আছে, মহানবী (স.) একদা সাহাবিদের বলেন, তোমারা কি এক রাতে কোরআন মাজিদের এক-তৃতীয়াংশ পড়তে পারবে? সাহাবিরা এ প্রস্তাবকে খুবই কঠিন মনে করলেন। ফলে তারা বললেন, আমাদের মধ্যে এ কাজ কে করতে পারবে? মহানবী (স.) তখন বললেন, সুরা ইখলাস কোরআনের এক-তৃতীয়াংশের সমান। (সহিহ বুখারি: ৫০১৫, নাসায়ি: ৯৯৫)।
সকাল, সন্ধ্যা, রাতে ঘুমানোর আগে সূরা ইখলাস ৩ বার, সূরা ফালাক্ক ৩ বার, সূরা নাস ৩ বার পাঠ করে দুই হাতের তালুতে ফুঁ দিয়ে শরীরে হাত বুলিয়ে দিলে যাবতীয় প্রকার অনিষ্ঠতা থেকে রক্ষা মেলে।
১০ বার সুরা ইখলাস পড়ার ফজিলত | সূরা ইখলাস ১০ বার পাঠের ফজিলত
যে ব্যক্তি ‘ক্বুল হুআল্লা-হু আহাদ’ শেষ পর্যন্ত ১০ বার পাঠ করবে, আল্লাহ সেই ব্যক্তির জন্য জান্নাতে এক মহল (ঘর) নির্মাণ করবেন। এ কথা শুনে ওমর বিন খাত্তাব (রা.) বললেন, তাহলে আমরা বেশি বেশি করে পড়বো হে আল্লাহর রাসূল! রাসুল (স.) বললেন, আল্লাহও বেশি দানশীল ও বেশি পবিত্র।’(মুসনাদে আহমদ: ১৫৬১০)
অর্থ্যাৎ যে ব্যাক্তি সূরা ইখলাস প্রতিদিন ১০ বার তেলাওয়াত করবে তার জন্য জান্নাতে ১টি মহল নির্মাণ করা হবে।
২১ বার সুরা ইখলাস পড়ার ফজিলত
সূরা ইখলাস ২১ বার পড়ার ফজিলত সম্পর্কে সুনিদিৃষ্ট কোন তথ্য পাওয়া যায় নি। এই সূরা ইখলাস যতবেশি আপনি পড়বেন এবং ভালবাসবেন আপনার জন্য রয়েছে জান্নাতের সুসংবাদ। এই ব্যাপারে হাদিসে যা বলা হয়েছেঃ-
মহানবী (সা.)-এর কাছে একবার এক সাহাবি এসে বললেন, হে আল্লাহর রাসুল (সা.)! আমি সুরা ইখলাসকে ভালোবাসি। তখন আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেন, ‘এ ভালোবাসা তোমাকে জান্নাতে প্রবেশ করাবে।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৭৭৪; তিরমিজি, হাদিস : ২৯০১)।
সূরা ইখলাস 100 বার পড়ার ফজিলত | সুরা ইখলাস ১০০ বার পড়ার ফজিলত
সূরা ইখলাস ১০ বার পড়লে জান্নাতে ১ টি ঐ তেলাওয়াতকারী ব্যাক্তির জন্য মহল নির্মাণ করা হবে। সে হিসেবে ১০০ বার তেলাওয়াত করলে ঐ ব্যাক্তির জান্নাতে ১০ টি মহল নির্মাণ করা হবে।
আরো পড়ুনঃ- মহিলারা আযানের আগে নামাজ পড়া যাবে কি জেনে নিন
মহানবী (সা.)-এর কাছে একবার এক সাহাবি এসে বললেন, হে আল্লাহর রাসুল (সা.)! আমি সুরা ইখলাসকে ভালোবাসি। তখন আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেন, ‘এ ভালোবাসা তোমাকে জান্নাতে প্রবেশ করাবে।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৭৭৪; তিরমিজি, হাদিস : ২৯০১)।
২০০ বার সুরা ইখলাস পড়ার ফজিলত | ২০০ বার সুরা ইখলাস পড়ার ফজিলত হাদিস
হাদিসে আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি প্রতিদিন ২০০ বার সুরা ইখলাস পড়বে, তার ৫০ বছরের গুনাহ ক্ষমা করে দেওয়া হবে। তবে ঋণ থাকলে তা মাফ হবে না।’ (তিরমিজি, হাদিস : ২৮৯৮)।
সূরা ইখলাস ১০০০ বার পড়ার ফজিলত
যে ব্যাক্তি অধিক পরিমাণে সুরা ইখলাস পাঠ করবে, আল্লাহ তাআলা তার জন্য লাশ বহন করার জন্য হজরত জিবরিল আলাইহিস সালামের সাথে ৭০ হাজার ফেরেশতা প্রেরণ করবেন। ফেরেশতারারা তার লাশ বহন ও জানায়াই শরিক হবেন।
সূরা ইখলাসের ফজিলত | সুরা ইখলাস আমল ও ফজিলত | সূরা ইখলাস এর ফজিলত সম্পর্কিত হাদিস | সূরা ইখলাসের ফজিলত সম্পর্কে হাদিস | সূরা ইখলাস এর ফজিলত ও তাৎপর্য | সূরা ইখলাসের ফজিলত আল কাউসার | সূরা ইখলাস সম্পর্কে হাদিস
পবিত্র কোরআন মাজীদের অত্যন্ত ফজিলত ও মর্যাদাপূর্ণ সূরা হলো সুরাতুল ইখলাস। সূরাতুল ইখলাসে আল্লাহর তাওহীদ একত্ববাদের কথা বলা আছে। যারা আল্লাহর অস্তিত্ব নিয়ে প্রশ্ন করে তাদের জবাব দেয়ার জন্য সূরা ইখলাস নাযিল করা হয়। এখানে আল্লাহর অস্তিত্ব ও সত্তা সুন্দরভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। প্রিয় পাঠক সূরা ইখলাসের ফজিলত অনেক । কোন মুসলমান যদি নিয়মিত সূরা ইখলাস তেলাওয়াত করে তাহলে সে অধিক পরিমাণে সওয়াব পাবে । সূরা ইখলাসকে বলা হয় গোটা কোরআন মাজীদের এক-তৃতীয়াংশ। চলুন তাহলে আর দেরি না করে সুরা ইখলাস আমল ও ফজিলত সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
কোরআনের ৩ ভাগের ১ ভাগঃ- আবু সাঈদ খুদরি (রা.) থেকে বর্ণিত আছে যে, এক ব্যক্তি অন্য ব্যক্তিকে রাতে বারবার সুরা আল-ইখলাস পড়তে শুনেছেন। অতঃপর সকালে মহানবী (সা.)-কে এ বিষয়টি অবহিত করা হয়। তখন মহানবী (সা.) বলেন, ‘ওই সত্তার শপথ! যার কুদরতের হাতে আমার জীবন, অবশ্যই এ সুরা কোরআন মাজিদের এক-তৃতীয়াংশের সমান। (সহিহ বুখারি : ৫০১৩; আবু দাউদ : ১৪৬১; নাসায়ি : ২/১৭১; মুআত্তা মালেক : ১/২০৮)।
আরো পড়ুনঃ- হায়েজ অবস্থায় মোবাইলে কুরআন পড়া যাবে কি জেনে নিন
অন্য বর্ণনায় আছে, মহানবী (স.) একদা সাহাবিদের বলেন, তোমারা কি এক রাতে কোরআন মাজিদের এক-তৃতীয়াংশ পড়তে পারবে? সাহাবিরা এ প্রস্তাবকে খুবই কঠিন মনে করলেন। ফলে তারা বললেন, আমাদের মধ্যে এ কাজ কে করতে পারবে? মহানবী (স.) তখন বললেন, সুরা ইখলাস কোরআনের এক-তৃতীয়াংশের সমান। (সহিহ বুখারি: ৫০১৫, নাসায়ি: ৯৯৫)।
আল্লাহর নৈকট্য লাভঃ- একবার আল্লাহর রাসুল (সা.) সাহাবিদের একদল সৈনিককে যুদ্ধে পাঠান। তাদের একজনকে সেনাপতি নিযুক্ত করেন। তিনি যুদ্ধকালীন দীর্ঘ সময়ে কেবল সুরা ইখলাস দিয়ে নামাজ পড়িয়েছেন। যুদ্ধ থেকে ফেরার পর সৈন্যরা মহানবী (সা.)-কে সে ব্যাপারে অবহিত করেন। তখন নবী কারিম (সা.) তাদের বলেন, ‘তোমরা তাকে জিজ্ঞেস করো— কেন সে এরূপ করেছে।’ সাহাবিরা জিজ্ঞেস করলে— সেনাপতি তাদের জানান, এ সুরায় আল্লাহর গুণাবলি বর্ণিত হয়েছে। তাই আমি এ সুরাকে ভালোবাসি।
মহানবী (সা.) তখন সাহাবিদের বলেন, ‘তোমরা তাকে গিয়ে বলো, আল্লাহও তাকে ভালোবাসেন।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৭৩৭৫; মুসলিম, হাদিস : ৮১৩; নাসায়ি, হাদিস : ২/১৭০)
জান্নাত লাভের উপায়ঃ- মহানবী (সা.)-এর কাছে একবার এক সাহাবি এসে বললেন, হে আল্লাহর রাসুল (সা.)! আমি সুরা ইখলাসকে ভালোবাসি। তখন আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেন, ‘এ ভালোবাসা তোমাকে জান্নাতে প্রবেশ করাবে।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৭৭৪; তিরমিজি, হাদিস : ২৯০১)।
যে ব্যক্তি ‘ক্বুল হুআল্লা-হু আহাদ’ শেষ পর্যন্ত ১০ বার পাঠ করবে, আল্লাহ সেই ব্যক্তির জন্য জান্নাতে এক মহল (ঘর) নির্মাণ করবেন। এ কথা শুনে ওমর বিন খাত্তাব (রা.) বললেন, তাহলে আমরা বেশি বেশি করে পড়বো হে আল্লাহর রাসূল! রাসুল (স.) বললেন, আল্লাহও বেশি দানশীল ও বেশি পবিত্র।’(মুসনাদে আহমদ: ১৫৬১০)
দারিদ্রতা দূরঃ- সাহল ইবন সাদ সায়েদি (রা.) থেকে বর্ণিত আছে যে, এক ব্যক্তি আল্লাহর রাসুল (সা.)-এর কাছে এসে দারিদ্র্যের অভিযোগ করে। তখন মহানবী (সা.) তাকে বললেন, ‘যখন তুমি ঘরে ফিরবে, তখন সালাম দেবে এবং একবার সুরা ইখলাস পড়বে।’ এ আমল করার ফলে— কিছুদিনের মধ্যে তার দারিদ্র্য দূর হয়ে যায়। (কুরতুবি : ২০/১৮৫)
অনিষ্ঠতা থেকে রক্ষাঃ- যে ব্যাক্তি সকালে, সন্ধ্যায়, রাতে ঘুমানোর আগে সূরা ইখলাস ৩ বার, সূরা ফালাক্ক ৩ বার, সূরা নাস ৩ বার পড়ে দুই হাতের তালু একত্র করে ফুঁ দিয়ে পুরো শরীরে হাত বুলিয়ে দিবে সে যাবতীয় প্রকার অনিষ্ঠতা থেকে রক্ষা পাবে।
যে ব্যাক্তি অধিক পরিমাণে সুরা ইখলাস পাঠ করবে, আল্লাহ তাআলা তার জন্য লাশ বহন করার জন্য হজরত জিবরিল আলাইহিস সালামের সাথে ৭০ হাজার ফেরেশতা প্রেরণ করবেন। ফেরেশতারারা তার লাশ বহন ও জানায়াই শরিক হবেন।
রাসুলুল্লাহ (স.) আরও ইরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি তিনটি কাজ ইমানের সঙ্গে করতে পারবে জান্নাতের যেকোনো দরজা দিয়ে সে প্রবেশ করতে পারবে। (১) যে হত্যাকারীকে ক্ষমা করে দেবে। (২) যে ব্যক্তি গোপন ঋণ পরিশোধ করবে। (৩) এবং যে প্রত্যেক ফরজ নামাজের পর ১০ বার সুরা ইখলাস পাঠ করবে (তাফসিরে কাসির)।
আবুল হাসান মুহাজির (রা.) বলেন, জনৈক সাহাবি বর্ণনা করেছেন, তিনি রাসুল (সা.)-এর সঙ্গে এক সফরে ছিলেন। একদিন তার কাছে এমনভাবে বসা ছিলেন যে, তার হাঁটু দুটি নবিজির হাঁটুদ্বয়ের সঙ্গে লেগে ছিল। এ অবস্থায় এক লোককে সুরা কাফিরুন তেলাওয়াত করতে শুনলেন, তা শুনে নবি (সা.) বললেন, সে শিরক থেকে পবিত্র হয়ে গেছে।
আরেক লোককে শুনলেন, সুরা ইখলাস তেলাওয়াত করছে। তখন তিনি বললেন, তাকে মাফ করে দেওয়া হয়েছে। (মুসনাদে আহমাদ, হাদিস ২৩২০৬)।
SOURCE: dhakapost.com, dhakamail.com, www.jugantor.com, jagonews24.com
সূরা ইখলাসের তাৎপর্য ও শিক্ষা
পবিত্র কোরআন মাজীদের অত্যন্ত ফজিলত পূর্ণ, মর্যাদা সম্পন্ন সূরা হলো সূরাতুল ইখলাস। এই সূরা ছোট হলেও এই সুরার রয়েছে অতুলনীয় সওয়াব। এই সূরা নিয়মিত তেলাওয়াতকারীকে জান্নাতের সুসংবাদ দেয়া হয়েছে। প্রত্যেক মুসলমানের উচিত সূরা ইখলাসের তাৎপর্য ও শিক্ষা সম্পর্কে জানা। কাফেররা যখন নবী (সাঃ) নিকট আল্লাহর অস্তিত্ব নিয়ে প্রশ্ন তুলে জবাবে এই সূরা ইখলাস নাযিল করা হয়। ইসলামের মর্ম হচ্ছে তাওহীদ। সূরা ইখলাসে তাওহীদের শিক্ষা বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে তুলে ধরা হয়েছে।
সূরা ইখলাসের ৪ টি শিক্ষাঃ-
- আল্লাহ এক ও অদ্বিতীয়।
- তিনি কারও মুখাপেক্ষী নয়।
- তিনি কাউকে জন্ম দেন নি এবং কারও কাছ থেকে জন্ম নেন নি।
- তার কোন সমকক্ষ নেই। তিনি অতুলনীয়।
সুরা ইখলাস পাঠকারীর জন্য আল্লাহই যথেষ্ট। সুরা ইখলাসের দ্বিতীয় আয়াতে বলা হয়েছে আল্লাহ তাআলা ‘সমাদ’ অমুখাপেক্ষী। ‘সমাদ’ বলা হয় এমন এক সত্তাকে যিনি সর্ব গুণাবলিতে পরিপূর্ণ। সব সৃষ্টি যার দিকে মুখাপেক্ষী। তিনি সবার থেকে অমুখাপেক্ষী। তার মৃত্যু নেই। তিনি কারও উত্তরাধিকারী নন। বরং আকাশ-জমিনের সব উত্তরাধিকার তার। তিনি না ঘুমান, না উদাসীন হন। তার নেতৃত্ব সর্বময়। জ্ঞানে প্রজ্ঞায় ধৈর্যে ক্ষমতায় সম্মানে। এক কথায় সব গুণাবলিতে তিনি মহান। তিনি এমন সত্ত্বা, প্রয়োজনের সময় সব মাখলুক যার দিকে মুখাপেক্ষী হয়।
আর তিনি একাই সবার জন্য যথেষ্ট হয়ে যান। সমাদ নাম বান্দার মধ্যে তার ক্ষমতা সম্মান এবং সবকিছু থেকে তার অমুখাপেক্ষীতার অনুভূতি তৈরি করে। ফলে বান্দার বিশ্বাস স্থির হয়ে যায়, আল্লাহই তার বান্দার জন্য যথেষ্ট। তিনি তার একান্ত গোপন বিষয় শোনেন। তার অবস্থানও লক্ষ্য করেন। সারা পৃথিবী মিলে তার কোনো ক্ষতি করতে চাইলে ততটুকুই পারবে যতটুকু তিনি নির্ধারণ করে রেখেছেন।
Source: jagonews24.com
সূরা ইখলাস কোন সময় কতবার পড়লে সাথে সাথে ফল পাবেন
সূরা ইখলাস কোন সময় কতবার পড়লে সাথে সাথে ফল পাবেন এটা আসলে নিদিৃষ্টভাবে বলা যায়। ইসলাম আমলের ব্যাপারে নিয়মিত আমল করার উপদেশ দেয়া হয়েছে। সরা ইখলাস কতবার পড়লে কি হয় তা আমরা হাদিসের আলোকে আলোচনা করব।
অনিষ্ঠতা থেকে বাঁচতেঃ- সকাল, সন্ধ্যা, রাতে ঘুমানোর আগে সূরা ইখলাস ৩ বার, সূরা ফালাক্ক ৩ বার, সূরা নাস ৩ বার পাঠ করে দুই হাতের তালুতে ফুঁ দিয়ে শরীরে হাত বুলিয়ে দিলে যাবতীয় প্রকার অনিষ্ঠতা থেকে রক্ষা মেলে।
জান্নাতের মহল নির্মাণঃ- যে ব্যাক্তি ১০ বার সূরা ইখলাস তেলাওয়াত করবে ঐ ব্যাক্তির জন্য জান্নাতে একটি মহল নির্মাণ করা হবে। যে ব্যাক্তি ২০ বার সূরা ইখলাস তেলাওয়াত করবে ঐ ব্যাক্তির জন্য জান্নাতে ২ টি মহল নির্মাণ করা হবে। যে ব্যাক্তি ৩০ বার সূরা ইখলাস তেলাওয়াত করবে ঐ ব্যাক্তির জন্য জান্নাতে ৩টি মহল নির্মাণ করা হবে। এভাবে যে যত পড়তে থাকবে তার পুরষ্কার তত বাড়তে থাকবে।
দারিদ্রতা বিমোচনঃ- ঘরে প্রবেশের সময় সালাম দিয়ে একবার সূরা ইখলাস তেলাওয়াত করার শিক্ষা দেয়া হয়েছে। এতে করে দারিদ্রতা বিমোচন হবে।
গুনাহ মাফঃ- যে ব্যাক্তি প্রতিদিন ২০০ বার সূরা ইখলাস তেলাওয়াত করবে তার ৫০ বছরের গুণাহ মাফ হবে । তবে ঋণ থাকলে মাফ হবে না।
কোরআন মাজীদের এক-তৃতীয়াংশের সওযাব লাভঃ- সূরা ইখলাস ১ বার তেলাওয়াত করলে কোরআন মাজীদের এক-তৃতীয়াংশের সওয়াব পাওয়া যাবে। ৩ বার তেলাওয়াত করলে পুরো কোরআন তেলাওয়াতে সওয়াব পাওযা যাবে।
সূরা ইখলাস তেলাওয়াত কারী ব্যাক্তির জানাজায় ফেরেশতা হাজিরঃ- যে ব্যাক্তি অধিক সংখ্যক বার সুরা ইখলাস তেলাওয়াত করবে ঐ ব্যাক্তির মৃত্যুকালে তার জানাজায় ৭০ হাজার ফেরেশতা হাজির হবে। অধিক সংখ্যক বার সূরা ইখলাস তেলাওয়াতকারী ব্যাক্তিকে জান্নাতের সুসংবাদ দেয়া হযেছে।
রাসুলুল্লাহ (স.) আরও ইরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি তিনটি কাজ ইমানের সঙ্গে করতে পারবে জান্নাতের যেকোনো দরজা দিয়ে সে প্রবেশ করতে পারবে। (১) যে হত্যাকারীকে ক্ষমা করে দেবে। (২) যে ব্যক্তি গোপন ঋণ পরিশোধ করবে। (৩) এবং যে প্রত্যেক ফরজ নামাজের পর ১০ বার সুরা ইখলাস পাঠ করবে (তাফসিরে কাসির)।
লেখকের মন্তব্য
সম্মানিত পাঠকবৃন্দ এই পোস্টে সূরা ইখলাস সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। আশা করি পোস্টটি পড়ে আপনারা উপকৃত হয়েছেন। এই রকম ইসলামিক পোস্ট প্রতিনিয়ত আমরা আমাদের সাইটে পাবলিশ করে থাকি।
এতক্ষণ ধৈর্য্য ধরে পোস্টটি পড়ার জন্য অসংখ ধন্যবাদ। পরবর্তীতে আলোচনা হবে ভিন্ন কোন পোস্ট নিয়ে। সে পর্যন্ত ভালো থাকুন। আপনার সুস্থতা কামনা করে এখানে শেষ করছি। আমাদের সাথেই থাকুন।
আপনি পদ্মা মেইলের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url