বুকের দুধ শুকানোর ঘরোয়া উপায় - বুকের দুধ শুকানোর ট্যাবলেট

বুকের দুধ শুকানোর ঘরোয়া উপায় নিয়ে এই আর্টিকেলে আলোচনা করা হবে। ওষুধ সেবনের মাধ্যমে বুকের দুধ শুকানো এ বিষয়টি অনেকের কাছে ঝুঁকিপূর্ণ মনে হয়। এজন্য তারা ইন্টারনেটে বুকের দুধ শুকানোর ঘরোয়া উপায় জানতে সার্চ করে। তাদের সুবিধার্তে এই আর্টিকেলে আমি বুকের দুধ শুকানোর ঘরোয়া উপায় নিয়ে আলোচনা করব। 

বুকের দুধ শুকানোর ঘরোয়া উপায় - বুকের দুধ শুকানোর ট্যাবলেট

বুকের দুধ শুকানোর পুরো বিষয়টি নির্ভর করছে আপনি আপনার সন্তানকে কতদিন ধরে বুকের দুধ খাওয়াচ্ছেন সেটার উপর। আপনি যদি লম্বা সময় ধরে সন্তানকে বুকের দুধ খাওয়ান, তাহলে বুকের দুধ শুকাতে লম্বা সময় লাগবে। চলুন তাহলে আর দেরি না করে বুকের দুধ শুকানোর ঘরোয়া উপায় নিয়ে আলোচনা করা যাক। 

পোস্ট সূচিপত্রঃ- বুকের দুধ শুকানোর ঘরোয়া উপায়

বুকের দুধ ছাড়ানোর সঠিক সময়

যখন বাচ্চার বয়স ১.৫ - ২ বছর হবে এ সময় বাচ্চার দুধ ছাড়ানোর চেষ্টা করবেন। অনেকে মনে করে বাচ্চা যতদিন চাইবে ততদিন দুধ খাওয়ানো যাবে, এটা শতভাগ সঠিক নয়। ২ বছর হওয়ার পরও বাচ্চাকে বুকের দুধ না ছাড়ালে এটা মা এবং বাচ্চা উভয়ের জন্য ক্ষতিকর। বাচ্চা বড় হওয়ার সাথে সাথে বাচ্চার খাদ্য অভ্যাসে পরিবর্তন আনাটা দরকার। নতুবা তারা পুষ্টির চাহিদা থেকে বঞ্চিত থাকবে। আপনি যে খাবারগুলো খান ওই খাবারগুলো আপনার বাচ্চাকে খাওয়াবেন। 

বুকের দুধ শুকানোর ট্যাবলেট | বুকের দুধ বন্ধ করার ট্যাবলেট | বুকের দুধ বন্ধের ট্যাবলেট

বুকের দুধ শুকানোর জন্য যদি আপনি ট্যাবলেট সেবন করতে চান ?  তাহলে সরাসরি ডাক্তারের শরণাপন্ন হওয়াটা উত্তম। ডাক্তার সবকিছু যাচাই-বাছাই করে  বুকের দুধ শুকানোর ট্যাবলেটের নাম আপনাকে জানিয়ে দিবে। বুকের দুধ শুকানোর ট্যাবলেট নাম হলোঃ-  Tab. Caberol 0.5 mg. সরাসরি ডাক্তারের নিকট গিয়ে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়াটা আপনার জন্য সর্বোত্তম। 

বাচ্চাদের দুধ ছাড়ানোর ঔষধ নাম | মায়ের বুকের দুধ বন্ধ করার ঔষধ | বুকের দুধ শুকানোর ঔষধ | দুধ শুকানোর ঔষধ

যেকোনো ধরনের ওষুধ সেবনের পূর্বে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়াটা সর্বোত্তম। বাচ্চাদের দুধ ছাড়ানোর ঔষধ নাম হলোঃ- ক্যাবারগোলিন (Cabergoline).  তবে ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া এই ঔষধ নিজে নিজে সেবন করবেন না। ডাক্তার সবকিছু যাচাই-বাছাই করে বাচ্চাদের দুধ ছাড়ানোর ঔষধ এর নাম জানিয়ে দিবে। 

বুকের দুধ শুকানোর হোমিও ঔষধ

অনেকে মনে করে যেকোনো সমস্যার সমাধান হোমিও ঔষধের মধ্যে আছে, তাই তারা হোমিও ওষুধকে মত বিশ্বস্ত মনে করে। বুকের দুধ শুকানোর হোমিও ঔষধ আমার জানা নেই। তবে, আপনার নিকট আমার পরামর্শ হলো আপনি হোমিও ওষুধের চিকিৎসকের নিকট যান। তারা আপনাকে জানিয়ে দিবে।

ইসলামে বাচ্চাদের দুধ ছাড়ানোর সময়

অনেক বাচ্চার মায়েরা সন্তানদের বুকের দুধ খাওয়াতে চায় না যায় একেবারে অনুচিত। মায়ের দুধের উপর সন্তানের হক রয়েছে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে কতদিন পর্যন্ত বাচ্চাকে বুকের দুধ খাওয়ানো যায়, ইসলাম এ ব্যাপারে কি বলে ? উত্তরঃ- বাচ্চাকে সর্বোচ্চ ২ দুই বছর পর্যন্ত মায়ের বুকের দুধ খাওয়ানো যায় ( সূরা বাকারাহ: ২৩৩ আয়াত, সূরা লোকমান:১৪ আয়াত )। 

আরো পড়ুনঃ- তুলসী পাতার চা এর উপকারিতা - শিশুদের তুলসী পাতা খাওয়ার নিয়ম

বাচ্চার অবস্থান বুঝে, বাচ্চার মা-বাবা পরামর্শ নিয়ে বাচ্চার দুধ এর আগে ছাড়াতে পারে। ২ বছরের বেশি সময় ধরে মায়ের বুকের দুধ খাওয়ালে এটা বাচ্চার জন্য কোন কাজে আসে না। বাচ্চাকে অন্যান্য পুষ্টিকর খাবারের অভ্যাস করাতে হবে। বাচ্চার বয়স যখন ৭/৮/১০ মাস হবে তখন থেকে তাকে একটু একটু করে অন্যান্য খাবারের অভ্যাস করাতে হবে। 

বুকের দুধ শুকানোর ঘরোয়া উপায় | বুকের দুধ শুকানোর উপায় | বুকের দুধ শুকানোর পদ্ধতি

যখন বাচ্চা বড় হয় অন্য খাবারের প্রতি আসক্ত হয় তখন বাচ্চার মায়েরা চিন্তা করে বুকের দুধ ছাড়ানোর জন্য। এজন্য তারা ঝুঁকিপূর্ণ পন্থা অবলম্বন না করে, সহজ এবং প্রাকৃতিক পদ্ধতি অবলম্বন করে বুকের দুধ শুকানোর চেষ্টা করে। এই আর্টিকেলে আমি আপনাদের ঘরোয়া পদ্ধতিতে বুকের দুধ শুকানোর উপায় সম্পর্কে জানাবো। যেগুলো শতভাগ নিরাপদ এবং পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া মুক্ত। বুকের দুধ শুকানোর ঘরোয়া উপায় গুলো নিম্নরুপঃ-

দুধ খাওয়ানোর সংখ্যা কমানোঃ- আপনার শিশু সন্তান দিনে কতবার বুকের দুধ খায় তার লক্ষ্য করুন। উদাহরণস্বরূপঃ- ধরে নিচ্ছি,  আপনার সন্তান দৈনিক ৬ বার বুকের দুধ পান করে। এখন আপনি আগামী সপ্তাহের টার্গেট করবেন তাকে দৈনিক ৫ বার করে বুকের দুধ খাওয়ানোর। এভাবে ধীরে ধীরে সন্তানের বুকের দুধ খাওয়ানো কমিয়ে দিবেন। যখন বুকের দুধ খাওয়ানো কমিয়ে দিবেন তখন দুধ উৎপাদন ধীরে ধীরে কমে যাবে। এভাবে একপর্যায়ে বুকের দুধ শুকিয়ে আসবে। 

আরো পড়ুনঃ- থানকুনি পাতার ১৫টি উপকারিতা ও ৫টি অপকারিতা বিস্তারিত জানুন

পানি খাওয়া কমিয়ে দেয়াঃ- যখন আপনি বুকের দুধ শুকিয়ে ফেলার চিন্তা করবেন, তখন নিজে পানি পান করা কমিয়ে দিবেন। আপনি যদি দৈনিক ৮ গ্লাস পানি পান করেন, তাহলে আগামী সপ্তাহের টার্গেট করবেন দৈনিক ৭ গ্লাস পানি পান করা। যতদিন না বুকের দুধ শুকিয়ে আসছে এভাবে ধীরে ধীরে পানি খাওয়ার নিয়ন্ত্রণ করবেন। ঘন ঘন পানি পান করলে বুকে দুধ উৎপাদন বাড়ে। 

পুদিনার চা পানঃ- অনেকে চা খেতে পছন্দ করি। আপনি যদি বুকের দুধ শুকিয়ে ফেলতে চান, তাহলে পুদিনা পাতার চা পান করুন। এটি বুকের দুধ শুকিয়ে ফেলার প্রাকৃতিক এবং ঘরোয়া উপায়। এ পদ্ধতি অনুসরণ করে আপনি ভাল ফল পেতে পারেন।

খাবারঃ- পুদিনা, পার্সলে, সেজ, চা, কফি ইত্যাদি খেলে বুকের দুধ কমে আসে। এক পর্যায়ে বুকের দুধ শুকিয়ে যায়। 

বাঁধাকপির পাতার ব্যবহারঃ- অনেক আগে থেকে মায়েরা বুকের দুধ শুকানোর জন্য বাঁধাকপির পাতা ব্যবহার করে আসছে। বুকের দুধ ছাড়ানোর সময় মায়েরা শারীরিক অস্বস্তি বোধ করে। বাঁধাকপির পাতা স্তনের উপর রেখে মাসাজ করলে এক ধরনের এনজাইম নিঃসরণ হয় যা বুকের দুধ শুকাতে সাহায্য করে। 

খাদ্যের অভ্যাস পরিবর্তনঃ- যখন বাচ্চা বড় হবে তখন অন্যান্য স্বাস্থ্যকর খাবার যেমনঃ- কলা, পেঁপে, আপেল, মাল্টা, বিস্কুট তার হাতে তুলে দিন। একটু একটু ভাত এবং তরকারি খাওয়ার অভ্যাস করানো। যখন সে অন্যান্য খাবারগুলো খাবে তখন তার বুকের দুধ খাওয়ার ইচ্ছা চলে যাবে ( একটু সময় লাগবে )। তাছাড়া দুধ খাওয়ার ফিটারে করে গরুর দুধ খাওয়ান। 

স্বাস্থ্যকর অভ্যাস অনুসরণঃ- যখন বাচ্চা বড় হবে তখন বাচ্চার মনোযোগ সরানোর বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ। আপনি যে স্থানে বসে বাচ্চাকে দুধ খাওয়াতেন, ওই স্থানগুলো পরিত্যাগ করুন। বাচ্চাকে খেলাধুলার সরঞ্জাম কিনে দিন, যাতে বাচ্চা সেদিকে মনোযোগী থাকে। 

বাচ্চার মায়ের নিজস্ব যত্নঃ- যখন আপনি বাচ্চা দুধ খাওয়ানো কমিয়ে দিবেন তখন স্থানের দুধ জমে ভারী হয়ে যায়, এক্ষেত্রে ঠান্ডা সেঁক দিবেন। দুধ বের হয়ে যাতে জামাকাপড়ে ভরে না যায় এজন্য নার্সিং প্যাড ব্যবহার করুন। 

কি খেলে বুকের দুধ কমে যায়? | বুকের দুধ কমানোর উপায় | কি কি খাবার খেলে বুকের দুধ কমে যায় | কি খেলে বুকের দুধ শুকিয়ে যায় 

কি খেলে বুকের দুধ কমে যায়?  তা জানতে আপনারা প্রায় ইন্টারনেটে সার্চ করে থাকেন। এমন কতগুলো খাবার রয়েছে যে খাবারগুলো খেলে বুকের দুধ উৎপাদন আপনা আপনি কমে যায়। সে খাবারগুলো হলোঃ-

  • পুদিনা, সেজ, পার্সলে ইত্যাদি এ ধরনের খাবার খেলে 
  • অতিরিক্ত চা, কফি, অ্যালকোহল, ড্রিংকস, ক্যাফেইন ইত্যাদি এই জাতীয় পানীয় পান করলে 
  • জন্ম নিয়ন্ত্রণ এর জন্য ওষুধ সেবন করলে অথবা নির্দিষ্ট রোগের জন্য ওষুধ সেবন করলে, ওষুধের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হিসেবে বুকে দুধ উৎপাদন কমে যায় 
  • পানি খাওয়া কমিয়ে দিলে বুকের দুধ উৎপাদন কমে যায় 

বাচ্চাদের বুকের দুধ ছাড়ানোর উপায় | বুকের দুধ বন্ধ করার পদ্ধতি | ২ বছরের বাচ্চাকে বুকের দুধ ছাড়ানোর উপায় | মায়ের বুকের দুধ বন্ধ করার উপায়

শিশুর জন্মের পর তার প্রধান খাবার হচ্ছে মায়ের বুকের দুধ। একজন শিশু ১.৫ - ২ বছর পর্যন্ত মায়ের বুকের দুধ খাই। একটি নির্দিষ্ট সময় পরে বাধ্যতামূলকভাবে মায়ের বুকের দুধ ছাড়তে হয়। কারণ, পুষ্টির বাড়তি চাহিদা পূরণের জন্য এবং অন্যান্য স্বাস্থ্যকর খাবারের প্রতি তাদের অভ্যাস গড়ে তোলার জন্য একটি নির্দিষ্ট সময় পর মায়ের বুকের দুধ ছাড়তে হয়। মায়ের বুকের দুধ কিভাবে ছাড়ানো যায় এটা জানতে অনেকে গুগলে সার্চ করে থাকে। এই আর্টিকেল এর মাধ্যমে আমি আপনাদের বাচ্চাদের বুকের দুধ ছাড়ানোর উপায় | বুকের দুধ বন্ধ করার পদ্ধতি | ২ বছরের বাচ্চাকে বুকের দুধ ছাড়ানোর উপায় গুলো জানাবঃ-

  1. একবারে শিশুকে বুকের দুধ খাওয়ানো বন্ধ না করে, কয়েক ধাপে শিশুকে বুকের দুধ খাওয়ানো বন্ধ করতে হবে। 
  2. বুকের দুধের বিকল্প হিসেবে ফিটারে করে গরুর দুধ এবং পানি খাওয়াবেন। এত করে শিশুর অভ্যাস পরিবর্তন হবে। 
  3. যে যে সময়ে আপনার শিশু বুকের দুধ পান করে, ওই সময় আপনার শিশুকে অন্য কাজে ব্যস্ত রাখুন যেমনঃ- খেলাধুলা করা, বাইরে ঘুরতে যাওয়া, অন্যান্য শিশুদের সাথে মিশতে দেওয়া ইত্যাদি। 
  4. শিশু যদি বুকের দুধ খাওয়ার জন্য জেদ করে তাহলে তাকে বাইরে ঘুরতে নিয়ে যান এবং অন্যান্য স্বাস্থ্যকর খাবার তার হাতে খুলে দিন। তাকে খেলাধুলার মধ্যে ব্যস্ত রাখুন। যাতে তার মনোযোগ অন্য দিকে চলে যায়। 
  5. শিশুকে নিজ হতে বুকের দুধ খাওয়াবেন না এবং বুকের দুধে তিতা জাতীয় কিছু লাগিয়ে দিবেন। যাতে শিশু বুঝতে পারে বুকের দুধ এখন খাওয়ার অনুপযুক্ত। 
  6. শিশুর মনস্তাত্ত্বিক পরিবর্তন আনা। শিশুকে বুঝিয়ে বলুন বুকের দুধ ভালো না, বুকের দুধ খেতে হয় না ইত্যাদি এভাবে। এতে তাদের বিশ্বাসগত জায়গায় পরিবর্তন আসবে। 
  7. বুকের দুধ খাওয়ানো বন্ধ করার পর শিশুদের সাথে অতিরিক্ত সময় ব্যয় করবেন এবং তাদের স্নেহ, ভালবাসা বাড়িয়ে দিবেন। ক্ষুধা লাগলে অন্যান্য মুখরোচক খাবার তাদের হাতে তুলে দিবেন। 
  8. এরপরেও যদি একেবারে শিশুর বুকের দুধ খাওয়ানো বন্ধ করা না যায় তাহলে বুকের দুধে করলা, তেঁতুল লাগিয়ে দিন। যাতে শিশু আপনা আপনি বুঝা যায়। এ দুধ খাওয়ার জন্য উপযুক্ত নয়। 

বাচ্চাকে বুকের দুধ খাওয়ানোর সময়সীমা 

শিশু জন্মের পর পরই প্রথম ছয় মাস তাকে বুকের দুধ খাওয়াতে হবে। বুকের দুধ খেলে তারা অন্য কোন পানীয় বা অন্য কোন খাবার খাওয়ার প্রয়োজন হয় না। মায়ের বুকের দুধে রয়েছে এন্টিবডি এবং ভিটামিন যা শিশুকে শারীরিক এবং মানসিকভাবে পরিপক্ক করে তোলে এবং শিশুর দেহে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। যে সকল শিশু জন্মের পর মায়ের বুকের দুধ খেয়ে বড় হয় ওই সকল শিশু শারীরিক এবং মানসিকভাবে শক্তিশালী হয়।

আরো পড়ুনঃ- বাচ্চাদের আনারস খাওয়ার নিয়ম - আনারস খেলে কি পিরিয়ড হয়

যখন শিশুর বয়স ছয় মাস হয়ে যাবে, তখন বুকের দুধের পাশাপাশি অন্য খাবারের ব্যবস্থা করতে হবে। এতে শিশুর অন্যান্য খাবারের প্রতি অভ্যাস গড়ে উঠবে। যখন শিশুকে বুকের দুধ খাওয়াবেন তখন মা এবং শিশুর শারীরিক অবস্থা দিকে নজর দেওয়া লাগবে। কিছু কিছু শিশু নির্দিষ্ট সময় পর মায়ের বুকের দুধ আর খায় না, আপনা আপনি ছেড়ে দেয়। আবার কিছু কিছু শিশু মায়ের বুকের দুধ নিয়মিত খেতে থাকে, এক্ষেত্রে এ আর্টিকেলের উপরের প্যারায় বাচ্চাদের বুকের দুধ ছাড়ানোর উপায় নিয়ে আলোচনা করেছি এবং তা যথাযথভাবে অনুসরণ করুন। 

বুকের দুধ কত বছর থাকে 

এ বিষয়টি পুরোপুরি নির্ভর করে মায়ের শারীরিক অবস্থা, হরমন জনিত কারণ, দ্বিতীয়বার গর্ভবতী হওয়া, বিশেষ কোন রোগের জন্য ওষুধ সেবন ইত্যাদি বিশ্বর উপর নির্ভর করে। একজন মায়ের বুকের দুধ ২ - ৩ বছর পর্যন্ত থাকে। আপনি আপনার সন্তানকে যত দুধ খাওয়াবেন ততো বেশি দুধ উৎপাদন হবে। যখন আপনি দুধ খাওয়ানো কমিয়ে দিবেন ধীরে ধীরে দুধ উৎপাদন হওয়া কমে যাবে। 

আরো পড়ুনঃ- পেয়ারা পাতার রসের উপকারিতা - পেয়ারা খেলে কি গ্যাস হয়

বাচ্চার বয়স ৬ মাস হওয়ার পর দুধের পাশাপাশি অন্যান্য খাবার খাওয়াতে হবে। এই আর্টিকেলে আমরা বাচ্চাদের বুকের দুধ ছাড়ানোর উপায়, কি খেলে বুকের দুধ কমে যায়?, বুকের দুধ শুকানোর ঘরোয়া উপায় ইত্যাদি বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছি। বাচ্চার দুধ ছাড়ানোর পূর্বে উক্ত নিয়মগুলো আপনি অনুসরণ করতে পারেন। এক্ষেত্রে একজন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নিলে সেটা আপনার জন্য ভালো হবে। 

বুকের দুধ শুকিয়ে যায় কেন

বিভিন্ন কারণে বুকের দুধ শুকিয়ে যেতে পারে। অনেক মায়ের বুকের দুধ শুকিয়ে যায়। এর জন্য কতগুলো কারণ নির্বাচন করা হয়েছে।  সেগুলো হলোঃ-

  1. বাচ্চাদের হঠাৎ দুধ খাওয়ানো বন্ধ করে দিলে।
  2. মানসিক উদ্বেগ, শারীরিক ক্লান্তির কারণে হরমনজনিত পরিবর্তন হয় ফলে বুকের দুধ কমে যায়। 
  3. মাসিক, ২য় বার গর্ভবতী হওয়া, জন্মনিয়ন্ত্রণ পিল খাওয়ার কারণে বুকের দুধ কমে যায়। 
  4. শরীরের পানি শূন্যতা দেখা দিলে দুধ শুকিয়ে যায় 
  5. নির্দিষ্ট রোগের কারণে ওষুধ সেবন করলে, ওষুধের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া স্বরুপ বুকের দুধ শুকিয়ে যায়
  6. পুদিনা, চা, কফি, ড্রিংকস, এলকোহল ইত্যাদি সেবনের কারণে
  7. অস্বাস্থ্যকর জীবন যাপন, খাবারের অনীহা, ঘুম কম হলে ইত্যাদির কারণে বুকের দুধ শুকিয়ে যায় 

প্রসূতি মায়ের বুকের দুধ বৃদ্ধির উপায় | মায়ের দুধ বৃদ্ধির উপায় | বুকে দুধ আসার উপায় | কি খেলে বুকের দুধ আসে | বুকের দুধ শুকিয়ে গেলে করণীয়

অনেক প্রসূতি মায়ের বুকের দুধের সংকট দেখা যায়। নবজাতকের প্রথম ৬ মাস প্রধান খাবার হচ্ছে তার মায়ের বুকের দুধ। নানান কারণে একজন প্রসূতি মায়ের বুকের দুধের ঘাটতি দেখা দেয়। এজন্য তারা প্রায় গুগলে প্রসূতি মায়ের বুকের দুধ বৃদ্ধির উপায় | মায়ের দুধ বৃদ্ধির উপায় | বুকে দুধ আসার উপায় | কি খেলে বুকের দুধ আসে লিখে সার্চ করে। এই আর্টিকেল থেকে আপনি প্রসূতি মায়ের বুকের দুধ বৃদ্ধির উপায় সম্পর্কে জানতে পারবেন।

মেথি বীজঃ- এটি বুকে দুধ বৃদ্ধিতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। কেননা, এতে রয়েছে ফাইটোয়েস্ট্রোজেন উপাদান। মেথির বীজ রাতে ভিজিয়ে রাখুন, সকালে ভিজিয়ে রাখা পানি পান করুন এবং মেথির বীজ খান।

ওটসঃ- এখানে রয়েছে প্রযুক্ত পরিমাণ ফাইবার এবং আয়রন। ওটসে বিটা-গ্লুকানও থাকে যা বুকের দুধ উৎপাদনে বিশেষভাবে সাহায্য করে। তাছাড়া ইহা মানসিক চাপের বিরুদ্ধে লড়াই করে। 

মৌরি বীজঃ- এটা হজম শক্তি বৃদ্ধি করে এবং বুকের দুধ উৎপাদনের সাহায্য করে। কেননা, এতে রয়েছে প্রাকৃতিক ইস্ট্রোজেন যা শিশুর পেট ব্যথা কমায় এবং হজম শক্তি বাড়ায়। 

মরিঙ্গাঃ- এতে রয়েছে ভিটামিন, আয়রন, ক্যালসিয়াম। ইহা শারীরিক স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটায় এবং বুকে দুধের প্রবাহের উন্নতি ঘটায়। যাদের বুকে দুধের ঘাটতি রয়েছে, তারা মরিঙ্গ খেতে খান।

রসুনঃ- ইহা দুধের প্রবাহ উন্নত করে। অনেক শিশু মায়ের বুকের দুধ খেতে চায় না, যখন মা রসুন খায় তখন শিশু দীর্ঘক্ষণ যাবৎ মায়ের বুকের দুধ খেতে থাকে। ইহা মায়ের বুকের দুধের স্বাদ বৃদ্ধি করে। তাছাড়া রসুনের জীবাণুনাশক বৈশিষ্ট্য রয়েছে। 

বাদাম এবং বীজঃ- বাদাম, তিসির বীজ, আখরোট ইত্যাদিতে পর্যাপ্ত পরিমাণে ক্যালসিয়াম, ফ্যাট, প্রোটিন, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান রয়েছে। যার শরীরে পুষ্টির চাহিদা পূরণ করে এবং শরীরকে করে তোলে উজ্জ্বল, প্রাণবন্ত। ইহা বুকের দুধ উৎপাদনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। 

বার্লি ওয়াটারঃ- এখানে বিটা-গ্লুকানও নামক উপাদান রয়েছে, যা প্রোল্যাকটিন হরমোনকে উদ্দীপ্ত রাখে এবং বুকের দুধ উৎপাদন অব্যাহত রাখে। 

মৌসুমী শাকসবজি এবং ফলমূলঃ- লালশাক, পালং শাক, পুঁইশাক, মেথি, সবুজ যেকোনো ধরনের শাকসবজিতে রয়েছে ক্যালসিয়াম, আয়রন, ফোলেট ইত্যাদি। তাছাড়া বিভিন্ন ধরনের ফলমূল যেমনঃ- কলা, পেঁপে, আঙ্গুর, ডালিম, পেয়ার, জাম, কমলা, মাল্টা ইত্যাদি এ ফলগুলো শরীরে পুষ্টির চাহিদা পূরণ করে। যা দুগ্ধজাত মায়েদের দুধ উৎপাদনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।  

অন্যান্য খাবারঃ- দুধ, ডিম, মাছ, মাংস এই খাবারগুলো সপ্তাহে ১/২ বার খাবেন। লক্ষ্য রাখবেন কোন অবস্থাতে শরীর যেন দুর্বল হয়ে না যায়। আশা করি এই খাবারগুলো খেলে শরীর থাকবে সুস্থ এবং বুকের দুধ উৎপাদন অব্যাহত থাকবে। 

অন্যান্য স্বাস্থ্যকর অভ্যাসঃ- পর্যাপ্ত ঘুম, নিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন, ঘন ঘন পানি পান, মানসিক উদ্বেগ থেকে দূরে থাকা, শরীর যেন স্বাস্থ্যবান থাকে, চা-কফি-ড্রিংকস- এলকোহল থেকে দূরে থাকা ইত্যাদি এ বিষয়গুলো মেনে চলতে হবে। 

লেখকের মন্তব্য 

স্তন্যপায়ী মায়ের এই আর্টিকেলে প্রকাশিত নিয়ম গুলো যথাযথভাবে অনুসরণ করলে আশা করি উপকার পাবে।

সম্মানিত পাঠক বৃন্দ এই আর্টিকেলে আমরা বুকের দুধ শুকানোর ঘরোয়া উপায় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। আশা করি পোস্টটি পড়ে আপনারা উপকৃত হয়েছেন। আমরা প্রতিনিয়ত আমাদের ওয়েবসাইটে স্বাস্থ্য বিষয়ক টিপস প্রকাশ করে থাকি।

এতক্ষণ ধৈর্য ধরে পোস্টটি উপভোগ করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। পরবর্তীতে আলোচনা হবে ভিন্ন কোন আর্টিকেল নিয়ে। সে পর্যন্ত ভাল থাকুন, আপনার সুস্থতা কামনা করে আজ এখানেই শেষ করছি। 09.10.25

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

আপনি পদ্মা মেইলের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url